বড়ই যেমন সুস্বাদু তেমন পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ফল। এই বরই গাছের বর্ণনা পবিত্র আল কোরআন ও হাদিসে অনেক স্থানে এসেছে। পবিত্র কোরআনের সুরা আন নাজমের ১৪ নম্বর আয়াতে (সিদরাতুল মুনতাহা) বরইগাছের কথা বলা হয়েছে, যা সপ্তম আকাশে অবস্থিত।
গাইবান্ধায় অক্টোবরের শুরুতেই দেশি বরই গাছে ফুটেছে ফুল। মৌমাছি উড়ছে বড়ই গাছের দিকে। সৃষ্টিকর্তার অপরূপ সৌন্দর্যের সৃষ্টি জগত এর সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাত হচ্ছে মানুষ। আর মানুষের প্রয়োজনে পৃথিবীতে নানা ধরনের ফল ও ফুলের সৃষ্টি করেছেন মহান সৃষ্টিকর্তা। কোন ফুল মানুষকে কাছে টানে আবার কোন ফুল কারো চোখের অজান্তেই ঝরে যায় ফুলের ভিতরে ফল হয়ে তা অনেক মানুষই বলতে পারে না। ফুলকে ভালোবাসে না এমন মানুষ পৃথিবীতে পাওয়া বিরল। সভ্যতার শুরু থেকেই মানুষ ফুলকে ভালোবাসে।
বাংলাদেশের বেশিরভাগ সময় অনেক দিবসেই গোলাপ, রজনীগন্ধা, গাধা ফুল স্থান ফেলেও পায় না কখনো স্থান বড়ই ফুল। অথচ এই বড়ই ফুলের মৌ মৌ গন্ধে মৌমাছি পাগল হয়ে ছুটে যায় মধু সংগ্রহ করতে। আর এই মধু মৌচাক থেকে কেটে সহজেই আমরা ভোগ করে থাকি। সৃষ্টির কি অপরূপ লীলা কত কষ্ট সাধন করে ফুল ফল ও প্রকৃতির অনেক স্থান থেকে আহরণ করে মৌমাছি একটু একটু করে মৌচাকে জমাট করে মধু। আমরা কি কখনো পরীক্ষা করে দেখেছিলাম এই মধুটি কোন ফুলের। আজ যাদের বয়স ৫০ বা ৮০ ঊর্ধ্বে তারাই বলতে পারবে বড়ই এবং বড়ই ফুলের কথা। এই বড়ই এখন কালের বিবর্তনে সভ্যতার এই আধুনিক যুগে বাউকুল বা বাউফল নামে পরিচিত।
বাড়ির আঙ্গিনায় বাড়ির উঠানে রাস্তার ধারে অবাধে বেড়ে উঠতো এই বড়ই গাছ। স্কুল ছুটি হলেই কিশোর ছেলেমেয়েরা ঢিল ছুটতে শুরু করতো বড়ই গাছগুলোতে।
প্রবাদ বাক্য আছে " গাছে বড়ই থাকলে ছেলেরা তো ঢিল ছুড়বেই" এতে বাধা দেওয়ার কি আছে! কালের ক্রোমেই হারিয়ে যেতে বসেছে দেশি বরই গাছ। বড়ই পাতার গরম জলে শুইয়া মশারির তলে আতর গোলাপ চন্দন মেখে দে, সজনী তোরা আতর গোলাপ চন্দন মাইখাদে।
কালের বিবর্তন হলেও আধুনিক সভ্যতার যুগেও মুসলমানের মৃত্যুর পরে গরম পানির সঙ্গে বড়ই পাতা মেশানো হয় বড়ই পাতা অবশ্যই ঔষধি গুন আছে। আধুনিক সভ্যতার সব যন্ত্রের আবিষ্কার হলেও প্রাচীন সভ্যতায় বরই গাছের ঢেঁকি প্রায় সবার বাড়িতেই ছিল।
প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের আরেকটি সুন্দর্য বড়ই ফুল যে ফুলে প্রত্যেকটি ডাটায় ডাটায় কাঁটায় ভরা।
আপনার মতামত লিখুন :