Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১

ঘুম সৃষ্টিকর্তার শ্রেষ্ঠ নিয়ামত


দৈনিক পরিবার | শাহিন নুরী, গাইবান্ধা সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৪, ১২:০৭ পিএম ঘুম সৃষ্টিকর্তার শ্রেষ্ঠ নিয়ামত

ঘুম সৃষ্টিকর্তার শ্রেষ্ঠ নিয়ামত। মানুষকে  যদি প্রশ্ন করা হয়, আমরা কি দিয়ে দেখি?  উত্তরে প্রায় সবাই বলবে আমরা চোখ দিয়ে দেখি। প্রকৃত সত্য হলো আমরা চোখ দিয়ে দেখি না, আমরা মস্তিস্ক দিয়ে দেখি। আবার যদি প্রশ্ন করা হয়, আমরা কিভাবে ঘুমাই ? উত্তরে প্রায় সবাই বলবে,আমরা চোখ বন্ধ করে, চোখ দিয়েই ঘুমাই। প্রকৃত ঘটনা হলো আমরা চোখ দিয়ে ঘুমাই না আমরা মস্তিস্ক দিয়ে ঘুমাই।
অগ্র মস্তিষ্কের নিম্নে অবস্থিত হাইপোথ্যালামাস অঞ্চল ঘুমকে নিয়ন্ত্রণ করে।ঘুমালে চোখ বন্ধ হয়ে আসবে, এটা স্তন্যপায়ী প্রাণীদের সহজাত প্রবৃত্তি।পায়খানা করতে গেলে যেমন প্রস্রাব আসবেই, তেমনি ঘুম আসলে চোখ বন্ধ হবেই।চোখ ঘুমকে অনুসরণ করে।নিন্দ্রার সাথে চোখ ওতোপ্রোতো ভাবে জড়িত।
মানুষ  মস্তিষ্ক দিয়ে ঘুমায় এবং মস্তিষ্ক দিয়েই দেখে।ইহা বিজ্ঞান সম্মত এবং তা প্রমাণিত সত্য।
দিন রাত ২৪ ঘন্টায় কাজের মাঝে রাতে বিশ্রাম নেয়ার স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার নাম ঘুম।  খাওয়া-দাওয়া, বংশ বিস্তার ও অন্যান্য কাজের মতো ঘুম একটি শরীর বৃত্তীয় কাজ। ঘুমের সময় শরীরের চেতনা সম্পূর্ণ বা আংশিক  নিস্ক্রিয় থাকে।একজন প্রাপ্ত বয়স্ক লোকের দিন-রাত ২৪ ঘন্টায় ৭/৮ ঘন্টা ঘুমানো দরকার। একজন ৯০ বছরের লোক সারাজীবনে প্রায় ৩০ বছর ঘুমিয়ে থাকে। ঘুম মানুষের প্রতি মহান আল্লাহ তাল্লার শ্রেষ্ঠ নিয়ামত সমূহের মধ্যে অন্যতম একটি।
ঘুম দুই ধরনের, উহারএকটি হলো জবস ঘুম এবং অপরটি হলো ঘড়হব ৎবস ঘুম।
যে ঘুমের সময় মস্তিষ্ক সজাগ থাকে ও শরীরের মাংসপেশি শিথিল হয় তাকে জবস ঘুম বলে। এ ঘুমের সময় অক্ষি (চোখের) গোলক এদিক সেদিক ঘুড়তে থাকে। ওই সময় আমরা স্বপ্ন দেখি।সারারাতে মানুষ ০৫ ভাগের ০১ ভাগ সময় উক্ত রূপে ঘুমায়।এ ধরনের ঘুমকে আমরা হালকা ঘুম বলতে পারি।
ঘড়হব জবস ঘুমঃ  এ ঘুমের সময় শরীর নড়াচড়া করে কিন্তু মস্তিষ্ক নিস্ক্রিয় থাকে।ওই সময় শরীর থেকে হরমোন নিঃস্বরন হয় এবং মানুষের ক্লান্তি ও অবসাদ দূর হয়।এ ধরনের ঘুমকে ঘড়হব জবস ঘুম বলে।সারারাতে মানুষ ০৫ ভাগের ০৪ ভাগ অংশ এই রূপে ঘুমায়। এ ঘুমের সময় মানুষ স্বপ্ন দেখে না। হালকা ঘুমের মধ্যে মানুষ স্বপ্ন দেখে।এ ধরনের ঘুমকে আমরা গভীর ঘুম বলতে পারি। এ ঘুমের সময় মানুষ স্বপ্ন দেখে না।
ঘুম মহান আল্লাহ তাল্লার একটি শ্রেষ্ঠ নিয়ামত। মানুষ তার সমস্ত জীবনের এক তৃতীয়াংশ  সময় ঘুমিয়ে কাটায়।ঘুমের উপযোগী সময় রাত।ঘুমের সময় অন্ধকার পরিবেশ দরকার।  রাতের অন্ধকারে শরীর থেকে মেলাটোনিন নামক হরমোন নিঃস্বরন হয়। যার ফলে গভীর ঘুম হয়।আলো জ্বালানো থাকলে শরীর থেকে ম্যালাটোনিন হরমোন নিঃস্বরন হয় না।তাই আলো জ্বালানো থাকলে গভীর ঘুম হয়না।
আবার ম্যালাটোনিন হরমোন শরীরের টিউমার বৃদ্ধি রোধ করে ও ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।আলো ঘুমের শত্রু। ঘুমানোর সময় অবশ্যই আলো বন্ধ করতে হবে।যারা গল্প-গুজব ও সময় নষ্ট না করে রাত ১০ /১১ ঘটিকার মধ্যে ঘরের আলো নিভিয়ে অন্ধকার ঘরে ঘুমিয়ে পরে ও চিনি খাওয়া থেকে বিরত থাকে তাদের ক্যান্সার নামক রোগটি কখনোই এবং কোন দিনই হবেনা। মনে রাখবেন চিনি এবং ফার্স্ট ফুড এ দু'টি খাবার কুখাদ্যের অন্তর্ভুক্ত ।ঘুমের সময় আমরা বাহিরের জগৎ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন থাকি।
খাবার না খেলে যে হারে মৃত্যু হয়, তার চেয়ে অনেক বেশি মৃত্যু হয় রাতে না ঘুমালে। টানা ১১ দিন না ঘুমালে মানুষের মৃত্যু ঘটবেই।অন্য দিকে কয়েক সপ্তাহ না খেয়েও বেঁচে থাকা যায়।
দুই ঘন্টা পর পর  ০১ মিনিটের জন্য মানুষের ঘুম ভেঙে যায়।তা আমরা টের পাই না।বিছানায় শোয়ার বিশ মিনিটের মধ্যে ঘুম আসে।এটা স্বাভাবিক নিয়ম।
ঘুম একটি ইবাদত। কারণ ঘুমের সময় একজন খুব খারাপ মানুষও খারাপ কাজ তথা মিথ্যা কথা বলা, চুরি,ডাকাতি, খুন-জখম, অন্যায় অত্যাচার, ধর্ষন ইত্যাদি থেকে বিরত থাকে।ঘুৃমের সময় মানুষ কোন পাপ কাজ করে না।তাই ঘুম ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত।
শরীর ও মনের সুস্থতার জন্য ঘুম একান্ত আবশ্যক। তৎসঙ্গে সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্যও ঘুম একটি আবশ্যকীয় কার্যক্রম। ১০ /১১ ঘটিকার মধ্যে ঘুমিয়ে পরা ও সকালে ঘুম থেকে উঠা সুস্বাস্থ্যের পূর্ব শর্ত।
মহানবী (সাঃ) দেরি করে ঘুমানো অপছন্দ করতেন।  এশার নামাজের পরে না ঘুমিয়ে গল্প করা অপছন্দ করতেন।রাতে দেরি করে ঘুমালে ফজরের নামাজের থেকে বঞ্চিত হতে হয়।
ঘুম মানুষের জীবনে শ্বাসপ্রশ্বাস নেয়ার মতো এবং দেহ ও মন সুস্থ রাখার জন্য অত্যাবশ্যকীয় একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। শরীর ও মন সুস্থ রাখার জন্য ঘুমের কোনো বিকল্প নাই।
সুস্থ জীবন যাপন ও দীর্ঘজীবি হওয়ার জন্য ঘুম একান্ত আবশ্যক। ঘুম মানুষের ক্লান্তি ও অবসাদ দূর করে। ঘুম পূর্বের ঘটলাবলী ও পরের ঘটনাবলী স্মৃতিতে ধরে রাখতে সহায়তা করে।
স্বাভাবিক ঘুম না হলে মানুষের নানাবিধ রোগের সৃষ্টি হয় তথা চোখের চারদিকে কালো দাগ পরে,শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি কমে যায়,স্মৃতি শক্তি লোপ পায়, মেজাজ খিটখিটে হয় ও অকারণে মানুষের সাথে ঝগড়া বিবাদে লিপ্ত হয়।মানসিক রোগের সৃষ্টি হয়,হার্টের রোগ দেখা যায় ও রক্তের চাপ ও টেনশন বৃদ্ধি সহ শরীরে নানাবিধ রোগ বাসা বাঁধে। রোগের কারণে শরীর ও মন অসুস্থ হয় এবং আয়ু কমে আসে।ফলে মৃত্যু সন্নিকটে উপস্থিত হয়।
ঘুম সল্পতা ও অনিদ্রার কারণে যেসব রোগের সৃষ্টি হয় তাতে পৃথিবীর মোট মৃত্যুর দশ ভাগ লোক মারা যায়।নিদ্রাহীনতার কারণে মানুষ রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর নির্ধারিত সময়ের অন্তত ১৫/২০ বছর আগে মৃত্যুবরণ করে।
কাউকে যদি প্রশ্ন করা হয় আপনি কি চান?  উত্তরে বলবে," আমি দীর্ঘজীবি হতে চাই।" আর যদি প্রশ্ন করা হয় আপনি কি চান না? উত্তরে বলবে," আমি  মরতে চাই না।" দীর্ঘ দিন বাঁচতে হলে গভীর ঘুমের কোনো বিকল্প নাই।
স্বাভাবিক ঘুম হলে রোগব্যাধি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।একজন বয়স্ক লোকের স্বাভাবিক ৭/৮ ঘন্টা ঘুম হলে রোগব্যাধি থেকে মুক্ত থাকে।দীর্ঘ দিন বাঁচতে হলে অবশ্যই শরীর ও মনের সুস্থতা প্রয়োজন।
 হযরত মুছা নবী, মহান আল্লাহকে জিজ্ঞেস করলেন, মানুষ হলে আপনি কি কামনা করতেন? উত্তরে আল্লাহ বলেছিলেন," শরীরের সুস্থতা কামনা করতাম। " এই আলোচনায় বুঝা গেলো মানুষের দীর্ঘ দিন বেঁচে থাকার জন্য সুস্থতার প্রয়োজন। সুস্থতার পূর্ব শর্ত হচ্ছে ঘুম।মানুষ তার কর্মের দ্বারা দীর্ঘজীবি হতে পারে,তার অন্যতম একটি হচ্ছে ঘুম।
ডায়াবেটিস হচ্ছে রোগের মা,টেনশন হচ্ছে রোগের বাবা এবং অনিদ্রা হচ্ছে রোগের মাসি।সুস্থ থাকার জন্য ডায়াবেটিস মুক্ত, টেনশন মুক্ত ও অনিদ্রা মুক্ত থাকতে হবে।
সুস্থতার জন্য ঘুম একান্ত আবশ্যক। কারণ ঘুমের মধ্যে মানুষের মন ও শরীর বিশ্রাম পায়।মস্তিষ্ক ঘুমকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং মস্তিষ্কই হচ্ছে ঘুমের কারখানা। একজন পূর্ণ বয়স্ক মানুষের ৭/৮ ঘন্টা ঘুমের প্রয়োজন। ভালো ঘুম মানুষের মস্তিষ্ককে অধিক কার্যকরী করে তোলে।ঘুমের সময় সাম্প্রতিক ঘটনা মস্তিষ্ক সংরক্ষণ করে এবং পরবর্তী ঘটনাবলি স্মৃতিতে ধারণ করার জন্য প্রস্তুত হয়।
সারাদিন কাজকর্ম করার পরে মানুষের শরীরে বিষক্রিয়া সৃষ্টি হয় ও শরীরের ক্লান্তি, অবসাদ দেখা দেয়।ঘুমের মাধ্যমে শরীরের ক্লান্তি, অবসাদ দূর হয়। শরীর ও মন সতেজ হয়ে উঠে এবং পরদিন কাজের জন্য শরীর প্রস্তুত হয়।
চার্জ দিলে যেমন মোবাইল কার্যকর থাকে, তেমনি ঘুম হলে মানুষের শরীর চার্জ হয় এবং মানুষের শরীর ও মন সক্রিয় হয়ে উঠে।
ইলেকট্রনিক যন্ত্রের আলো ঘুমের শত্রু।উহা ঘুমের ভীষণ ক্ষতি করে।ঘুমের এক ঘন্টা পূর্ব থেকে মেবাইল চালানো ও টিভি দেখা থেকে বিরত থাকতে হবে।
আল কোরআনের ৭৮ নং সুরা আন নাবায় উল্লেখ রয়েছে, "তোমাদের নিদ্রাকে করেছি ক্লান্তদূরকারী ও রাতকে করেছি আবরণ।" দিনকে করেছি জীবিকা অর্জনের জন্য।" কর্মের জন্য দিন ঘুমানোর জন্য মহান আল্লাহ রাতের সৃষ্টি করেছেন।তাই ঘুমানোর সময় ঘরের আলো বন্ধ করে ঘুমাবেন।

রাতে জেগে গল্প-গুজব করা ও টিভি দেখে সময় নষ্ট করলে স্বাভাবিক ঘুম হয়না।ফলে রোগব্যাধির সৃষ্টি হয়।
 মহানবী (সাঃ), নতুন বিবাহিত বর বধুকে রাত জেগে থাকা ও নফল নামাজ আদায় করার জন্য বাঁধা প্রদান করেন নাই।
সুস্থ থাকার জন্য একজন মানুষের নিম্ন উল্লেখিত ঘুমের প্রয়োজন।
১ মাস থেকে তিন মাস পর্যন্ত ঘুমের প্রয়োজন ১৪-১৭ ঘন্টা।
০৪-১১ মাস পর্যন্ত ঘুমের প্রয়োজন ১২-১৬ ঘন্টা।
১২ মাস থেকে তিন বছর পর্যন্ত ঘুমের প্রয়োজন ১২-১৪ ঘন্টা।
৩-৪ বছর পর্যন্ত ঘুমের প্রয়োজন ১১/১২ ঘন্টা।
৫ বছর থেকে ১৩ বছর পর্যন্ত ঘুমের প্রয়োজন ৯/১০ ঘন্টা।
১৪ বছর থেকে ১৭ বছর পর্যন্ত ঘুমের প্রয়োজন ৮/৯ ঘন্টা।
১৮ বছর থেকে ৬৪ বছর পর্যন্ত ঘুমের প্রয়োজন ৭/৮ ঘন্টা।
৬৪ বছরের উদ্ধে মানুষের ঘুমের প্রয়োজন ৫/৬ ঘন্টা।
ভালো ঘুমের জন্য নিম্নে বর্নিত পরিবেশ প্রয়োজনঃ
ঘরের টিভি ও লাইট বন্ধ করে ঘরকে অন্ধকারচ্ছন্ন ও   শব্দ মুক্ত করতে হবে।
গবেষকদের মতে ঘুমের জন্য বিছানার চাদর ও বিছানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
পরিস্কার - পরিচ্ছন্ন বিছানার চাদর ও ঘুমের জন্য নির্দিষ্ট বিছানা ৭৫% ঘুমের জন্য পরিবেশ সৃষ্টি করে।ভালো ঘুমের জন্য বিছানার চাদর অবশ্যই পরিষ্কার- পরিচ্ছন্ন হতে হবে।মোবাইল ফোন অবশ্যই সাইলেন্ট করতে হবে।
ঘুমের দুই ঘন্টা পূর্বে রাতের খাবার শেষ করতে হবে।ঘুমের ২০ মিনিট পূর্বে বই বা পত্রিকা পাঠ করতে হবে।এর ফলে মস্তিষ্ক ও চোখের শ্রম হয় যা ঘুমকে প্রভাবিত করে ও ঘুমকে আমন্ত্রণ করে। ঘুমের আগে এক গ্লাস দুধ পান করলে মাংসপেশি শিথিল হয় এবং ঘুম ভালো হয়।দুধের সাথে মধু মিশ্রিত করলে ঘুম আরও ভালো হয়।দুধ ক্রয়ের ক্ষমতা না থাকলে শোয়ার সময় এক গ্লাস পানি পান করবেন।
বর্নিত বিষয় গুলো অনুসরণ করলে বিছানায় শোয়ার ২০ মিনিটের ভিতরে ঘুম আসবেই।
নিম্নোক্ত খাবার গুলো ঘুমের পরিবেশ সৃষ্টিতে সহায়তা করে।
মিষ্টি আলুকে ঘুমের মাসি বলা হয়। এতে বিদ্যামান পটাশিয়াম ঘুমাতে সহায়তা করে।কলা খেলে কলার মধ্যে বিদ্যমান পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম ঘুমাতে সহায়তা করে।চেরি ফলের রস শরীরে ম্যালাটোনিনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। তা ঘুমকে তরান্বিত করে।
বাদাম, কাঠবাদাম, কাচু বাদাম, কিসমিস খেলে ম্যালাটোনিন ও কার্টিশল হরমোন নিঃস্বরন হয়।বাদামে বিদ্যমান ম্যাগনেশিয়াম ও পটাশিয়াম স্নায়ুকে ও মাংসপেশিকে শান্ত করে ফলে ভালো ঘুম হয়।শরীরে হালকা রোদ লাগানো ও হালকা ব্যায়াম ঘুমকে ডেকে নিয়ে আসে।
নিম্নোক্ত খাবার গুলো অনিদ্রাকে ডেকে নিয়ে আসে তাই উক্ত খাবার গুলো পরিহার করা উচিত। মশলাযুক্ত ও চিনিযুক্ত খাবার কম খেতে হবে।ভালো ঘুমের জন্য ক্যাফেইন যুক্ত খাবার যেমন চা,পেপসি,কফি থেকে বিরত থাকতে হবে।ক্যাফেইন শরীরের মধ্যে নয় ঘন্টা অবস্থান করে।উক্ত খাবার খেতে যদি মন চায় তাহলে দুপুর এক টার পূর্বেই তা খেতে হবে।উক্ত খাদ্য দুপুরের পর এবং ঘুমানোর আগে পান করলে ঘুমের ব্যাঘাত হয়।ঘুম দেরিতে আসে ও ঘুমের সময়কাল কমে যায়।
দুধে বিদ্যমান ক্যালশিয়াম মস্তিষ্কে টিপটোফ্যান তৈরীতে সহায়তা করে ফলে ভালো ঘুম হয়।ভালো ঘুমের জন্য ঘরকে ঠান্ডা রাখতে হবে।সম্ভব হলে বেডে যাওয়ার আগে হালকা সাউন্ডের পছন্দ রকমের গান শুনতে হবে, তা ভালো ঘুমের জন্য পরিবেশ সৃষ্টি করে।
এক মিনিটে ঘুমঃ
৪-৭-৮ সেকেন্ড পদ্ধতিতে শ্বাস গ্রহণ, শ্বাস বন্ধ ও শ্বাস ত্যাগ করলে ১ মিনিটেই ঘুম আসবে।৪ সেকেন্ডে শ্বাস গ্রহণ, ৭ সেকেন্ডে ফুসফুসে শ্বাস আটকিয়ে রেখে তৎপর ৮ সেকেন্ডে ধীরেধীরে শ্বাস ত্যাগ করতে হবে।এ পদ্ধতিতে শ্বাস গ্রহণ, শ্বাস আটকানো ও শ্বাস ত্যাগ করলে এক মিনিটে ঘুম আসবে।
ঘুমের সময় চোখ বন্ধ হয়ে আসবেই।চোখ খোলা থাকলে ঘুম হয়না।একটি চোখ বন্ধ করলে যেমন অন্য চেখটিও বন্ধ হয়ে আসে, তেমনি ঘুম আসলে চোখ খোলা রাখা যায়না।এটা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি।
পাচ হাজার হাদিসের সরবরাহকারী, আবু হূরায়রা থেকে বর্নিত নিদ্রা থেকে জাগ্রত হওয়ার পরে তিনবার হাত ধৌত করতে হবে।কারণ নিদ্রার সময় অজান্তে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় হাত গিয়ে অপরিচ্ছন্ন হতে পারে।
দেরিতে ঘুমানো এবং দেরিতে ঘুম থেকে উঠা সুস্বাস্থ্যের জন্য সহায়ক নয়।উক্ত রূপে ঘুমালে মানুষের আয়ু অন্তত ৬ বছর কমে যায়।
"ঊধৎষু ঃড় নবফ ধহফ বধৎষু ঃড় ৎরংব,
গধশবং ধ সধহ যধঢ়ঢ়ু যবধষঃযু ধহফ রিংব."
সুস্বাস্থ্যের জন্য, রোগমুক্ত থাকার জন্য স্মৃতি ধরে রাখতে, শরীর ও মনের শক্তি সঞ্চয় করতে, মনসংযোগ বাড়াতে শরীরের হরমোন নিঃস্বরনে,স্নায়ুতন্ত্রের কাজকর্ম বজায় রাখতে ঘুমের প্রয়োজন। তাই ঘুমের প্রতি আমাদের যত্নবান হওয়া উচিত।
আমরা চোখ দিয়ে দেখি না, আমরা মস্তিষ্ক দিয়ে দেখি।আমরা চোখ দিয়ে ঘুমাই না, মস্তিষ্ক দিয়ে ঘুমাই। মস্তিষ্ক ঘুমকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং ঘুমের সময় তথা হালকা ঘুমের সময় আমরা স্বপ্ন দেখি। ঘুমের সাথে চোখ, মাথা ও স্বপ্ন ওতপ্রতভাবে ভাবে জড়িত।

Side banner