এই নদীটির নাম যমুনা নদী। এই নদীটি অতি ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে। বিভিন্ন রকমের ফসল নদীর গর্ভে চলে গেছে, মরিচ এর ক্ষেত, পাট ক্ষেত এবং বিভিন্ন রকমের সবজি উৎপাদিত হয়। সেগুলো এখন ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে। তাই আমাদের এই নদীটি অতি নিকটে সংস্কারের প্রয়োজন এবং এ ভাঙ্গন রোধ করতে হবে। তাই বলছি মাননীয় উপজেলা চেয়ারম্যান পরিষদ দেওয়ানগঞ্জ, আমাদের মাননীয় এমপি মহোদয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি আমাদের এই যমুনা নদী ভাঙ্গন রোধ করতে আপনাদের প্রয়োজন সাহায্য প্রয়োজন। নদী ভাঙতে ভাঙতে প্রায় বেরিবাধ এর কাছাকাছি অনেকটা এসে গেছে, অনেক বাড়িঘর এখানে নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। অনেক রকমের বস্তা নদীতে ভাঙ্গন রোধে এর জন্য ফেলানো হয়েছে তবুও টিকিনি।
আমাদের সবার দাবি স্থায়ী বাঁধ চাই।
একটা শিশু জন্মের পর তার মা,বাবাকেই চিনে সব থেকে বেশি, তাদের উপরেই ভরসা থাকে সব সময়! কারো মা,বাবা পৃথিবীর সব থেকে খারাপ হলেও তার কাছে তার মা,বাবাই সেরা।
মা, বাবার কাছেও তার শিশুই সেরা! এই টান, এই ভালোবাসাটা প্রাকৃতিক ভাবেই হয়ে থাকে। ঠিক তেমনি জন্মস্থান বা জন্মভূমি প্রতিটি মানুষের কাছে প্রিয়। হোক সেটা নেটওয়ার্ক বিহীন, কৃত্রিম আলো বিহীন, একেবারে প্রত্যন্ত অঞ্চলে সবচেয়ে খারাপ এলাকা! তবুও সেখানেই তার সব সুখ-দুঃখ, সেখানেই তার জান্নাত, সেইটাই তার কাছে সেরা জায়গা।
যারা তার জন্মস্থান ছেড়ে দূরে থাকে একটু ছুটি পেলেই ছুটে আসার চেষ্টা করে তার জন্মস্থানে, তার বাস্তব উদাহরণ যে কোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠান আসলেই বুঝা যায়। জন্মস্থানে জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত থাকার ইচ্ছেটা সবার থাকে, এই মায়া কেউ ত্যাগ করতে পারে না।
কারণ এই মায়া ত্যাগ করতে সবারই ভিতরটা ফুঁপে কেঁদে উঠে! কিন্তু এই নদীভাঙ্গন আর বন্যা দুর্যোগের জন্য অনেক মানুষ তার প্রিয় জায়গাটি ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হচ্ছে ভিটেমাটি সব ছেড়ে! নদীতীরবর্তী মানুষরা বুঝে বারবার ঘর ভাঙ্গা কতটা দুঃখ, বিরক্তির আর লোকসানের বিষয়! তাদের সবার অঢেল টাকা নেই শহরের দিকে গিয়ে জমি কিনে ঘর তুলে থাকবে। আর যার সামর্থ্য আছে সেও ইচ্ছে করে যেতে চায় না তার জন্মস্থান ছেড়ে। বাধ্য হয়েই যেতে হয়! একজন প্রিয় মানুষ হারানোর বেদনার থেকেও আমার কাছে বেশি বেদনাদায়ক জন্মস্থান ত্যাগ করে একেবারে চলে যাওয়া! যমুনা আর ব্রহ্মপুত্রের ভয়াল গ্রাসে প্রতিবছরই ওপারে (রংপুর, দিনাজপুর/অন্য কোথাও) চলে যেতে বাধ্য হচ্ছে অনেক পরিবার। এইবারো অনেক পরিবার চলে গিয়েছে প্রতিদিন চলে যাচ্ছে সব ছেড়ে!
এমনিতেই জামালপুরের সব উপজেলার মধ্যে আমাদের দেওয়ানগঞ্জ অর্থনৈতিকভাবে অনেকটা দূর্বল। প্রতিবছর এইভাবে আরো মানুষজন চলে গেলে দেওয়ানগঞ্জের অর্থনৈতিক অবস্থা আরো অনেক খারাপ হয়ে যাবে। কারন জনবল ছাড়া একটা অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নতি কখনো সম্ভব না।
মন্ডলবাজারের সাথে খোলাবাড়ীর যোগাযোগ যদি পুরোপুরিভাবে বন্ধ হয়ে যায়(বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম, এখনি রাস্তার অর্ধেক নদীতে চলে গিয়েছে, বাঁশ দিয়ে আটকে দিয়েছে রাস্তা) তাহলে সমস্যা শুধু খোলাবাড়ীদের একার হবে না। সমস্যাটা সবার হবে। আজ হইতো যারা একটু উজানের দিকে থাকি তারা বুঝতেছি না, কিন্তু যখন চিকাজানী, চুকাইবাড়িসহ বাকি ইউনিয়নের বেশির ভাগ অংশ নদীগর্ভে চলে যাবে তখন বুঝবো আর হায়হায় করবো! চিকাজানী, চুকাইবাড়ি ইউনিয়ন ইতিমধ্যে অনেকাংশ নদীতে চলে গিয়েছে আর সেই মানুষগুলোর বেশিরভাগের চলাচল এখন গাইবান্ধা জেলার সাথে! আমি শুধু বলতে চাই দেওয়ানগঞ্জটা আমাদের। এর উন্নতি করার জন্য আমাদেরই এগিয়ে আসতে হবে, দেওয়ানগঞ্জকে টিকিয়ে রাখতে হবে।
যোগাযোগব্যবস্থার মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে সব কিছু সচল রাখতে হবে। দেওয়ানগঞ্জের সকল নেতাকর্মীসহ উচ্চ পর্যায়ের সবার কাছে অনুরোধ এগিয়ে আসুন। নেতা হোন মানুষের, বিপদের নেতা আসল নেতা। মানুষের ভালোবাসা পেতে চাইলে তার অভাবের দিনে, দূর্যোগের দিনে এগিয়ে আসুন। আপনারা একা না পাইলে সব জনগনকে সাথে নিয়ে নেমে পড়ুন উচ্চমহলে এই খবর পৌছানোর জন্য। বন্যা রোধ করা সম্ভব না, কিন্তু ইচ্ছা শক্তি থাকলে নদী ভাঙ্গন রোধ করা সম্ভব।
প্রয়োজনে সবাই মিলে আমাদের এই অধিকার আদায়ে মাঠে নামবো মিডিয়াদের সাথে নিয়ে তাছাড়া এর কোনো প্রতিকার দেখছি না। আজ আমরা গাঁ ভাসা দিয়ে আছি কিন্তু একসময় আমরাও এই নদী ভাঙ্গনের ভুক্তভোগী হবো সেটা খুব দেরী নেই! যেভাবে দুই পাশ দিয়ে আগ্রাসী যমুনা আর ব্রহ্মপুত্র এগিয়ে আসতেছে দেওয়ানগঞ্জ বাজার পর্যন্ত পৌছাতেও এক যুগ লাগবে না!
তাই সময় থাকতেই এই দেওয়ানগঞ্জকে বাঁচাতে আমাদের তাড়াতাড়ি একটা পদক্ষেপ নিতে হবে। মন্ডলবাজার টু খোলাবাড়ী রাস্তার পাশে ব্রহ্মপুত্র নদীর বাঁধসহ এরেন্ডাবাড়ি ইউনিয়নের হরিচন্ডিসহ ,খোলাবাড়ী, বড়খাল,গুজিমারী হয়ে কুলকান্দী পর্যন্ত বাঁধ চাই। তাছাড়া এই দেওয়ানগঞ্জকে টিকানো কোনোভাবেই সম্ভব না।
তাই সকলের কাছে বিনীত অনুরোধ সবাই এগিয়ে আসুন এই দাবী আদায়ে। আশারাখি নেতাকর্মীসহ দেওয়ানগঞ্জের উচ্চবর্গীয় ব্যাক্তিরা সবাই এগিয়ে আসবেন জনগনকে সাথে নিয়ে দেওয়ানগঞ্জটাকে বাঁচাতে। আল্লাহ তায়ালা আমাদের রক্ষা করুক এই নদী ভাঙ্গন দুর্যোগ থেকে!
তাই মাননীয় চেয়ারম্যান এবং মাননীয় এমপি মহোদয় এর দৃষ্টি আকর্ষণে আমাদের এই নদী ভাঙ্গন রোধ করতে আপনাদের সাহায্য প্রয়োজন।
আপনার মতামত লিখুন :