ষাটের দশকের আগেও দক্ষিণ কোরিয়া উন্নয়নশীল দেশ ছিল। এবং ষাটের দশকের প্রথম থেকেই তাদের উন্নয়ন যাত্রা শুরু হয়েছিল।
শুরুর দিকেই তারা যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির জন্য প্রচুর বিনিয়োগ করে। ঐ সময় কোরিয়ার যোগাযোগ ব্যবস্থা দেখে অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করতো। বিশেষ করে একটা উন্নয়নশীল দেশের হিসেবে সেটা ছিল অনেক উন্নত।
সে হিসেবে বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিতে যৌক্তিকতা খুঁজে পাওয়া যায়। যদিও অস্বাভাবিক প্রকল্প ব্যয় ও যথাযথ পরিকল্পনার অভাবের ফলে কিছু মেগা প্রজেক্ট থেকে আশানুরূপ ফলাফল পাওয়া যায় না। কিন্তু যে দুই জায়গায় আমরা এখনও পিছিয়ে আছি তা হলো শিক্ষা ও স্বাস্থ্য। কোরিয়া শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি ও গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করতে ব্যাপক মনোযোগ দেয়। আর কোরিয়া যখন সর্বজনীন স্বাস্থ্য ব্যবস্থা (সবার জন্য নিশ্চিত স্বাস্থ্য সেবা) চালু করে তখন তাদের মাথাপিছু আয় আমাদের থেকে সামান্য বেশি ছিল।
দূর্ভাগ্যজনকভাবে, এই দুই জায়গায় আমরা খুব বেশি এগুতে পারিনি, বরং অনেক ক্ষেত্রে পিছিয়েছি।
প্রায় জেলায় জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে, কিন্তু গুণগত শিক্ষা চালু করা যায়নি। ফলে দক্ষ জনবলের পরিবর্তে সার্টিফিকেট-ধারী বেকারের সংখ্যা বাড়ছে (এর জন্য পর্যাপ্ত বিনিয়োগের অভাবও দায়ী)। আর প্রায় জেলায় জেলায় মেডিকেল কলেজ বা বড় বড় হাসপাতাল হয়েছে, কিন্তু দেশে এখনও প্রতিবছর প্রায় ৫০ লাখ লোক স্বাস্থ্যসেবা ব্যয় মেটাতে গিয়ে দরিদ্র হয়।
আমাদের মনে হয়, ‘প্রেস্টিজ’ প্রজেক্টের পাশাপাশি সকল মানুষের উপকার হয় তাতে আরও মনোযোগী হতে হবে। বিশেষ করে গুণগত শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার প্রতি। নইলে জিডিপির প্রবৃদ্ধির সুফল দীর্ঘমেয়াদে পাওয়া যাবে না এবং প্রবৃদ্ধিও ধরে রাখা যাবেনা।
ডক্টর শাফিউন নাহিন শিমুল
যুক্তরাষ্ট্র।
আপনার মতামত লিখুন :