মানুষের সুস্থ ও স্বাভাবিক ভাবে বেঁচে থাকার জন্য খাদ্য একটা অতি প্রয়োজনীয় ও মৌলিক উপাদান। ফুয়েল ছাড়া যেমন ইন্জিন অচল, তেমনি খাদ্য ছাড়া মানুষের সুস্থ সুন্দর ভাবে জীবন ধারণ করা অসম্ভব। বর্তমান শতাব্দীর পৃথিবীতে বিজ্ঞান উন্নতির চরম শিখরে অবস্থান করছে। প্রকৌশল, প্রযুক্তি থেকে শুরু করে সব দিকে বিজ্ঞানের জয়জয়কার। অবস্থা এমন যে পুরো পৃথিবীটা বর্তমানে একটা গ্লোবাল ভিলেজ তথা বিশ্বগ্রামে পরিণত হয়েছে। পুরো বিশ্ব এখন হাতের মুঠোয়। এবং মানুষের সব কাজ এখন আগের তুলনায় অনেক সহজ হয়ে গেছে। কিন্তু এত কিছুর পরও একটা বিষয়ে সবাই কে সচেতন হতে হবে তা হলো এই যে, বিজ্ঞান যে মানুষের এত এত উন্নতি সাধন করলো সেই মানব শরীর যদি সুস্থ না থাকে তাহলে এই উন্নয়ন মানুষের উপকারে আসতে ব্যর্থ বলে প্রতীয়মান হবে।কারণ যার উপকারের জন্য বিজ্ঞানের এত এত উন্নতি, সেই মানব শরীর যদি সুস্থ না থাকে তাহলে এই উন্নয়ন সে অনুভব করতে পারে না।তার কাছে এর যথার্থতা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। সেজন্য এই আধুনিক ও উন্নত বিশ্বের মানুষের জন্য সুস্বাস্থ্য একটি অন্যতম প্রধান গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
আর সুস্বাস্থ্যর জন্য চাই নিরাপদ খাদ্য।তাই বর্তমান সময়ের খাদ্য নিরাপত্তা একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে যে ব্যাপারে আমাদের সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে। কিন্তু খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কিছু চ্যালেঞ্জর সম্মুখীন হতে হচ্ছে যা ভবিষ্যতে এক অশনি সংকেত হয়ে উঠতে পারে। মানুষের জীবন ধারণের জন্য খাদ্য অপরিহার্য উপাদান এক্ষেত্রে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ সাধনের সাথে সাথে খাদ্য নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ এর সম্মুখীন। বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে খাদ্য ভেজাল একটা বড় ধরনের সমস্যা।বিশ্বে ক্রমাগত প্রযুক্তি গত উৎকর্ষতা সাধন হলেও মানুষের জীবন ধারণের প্রধানতম উপাদান খাদ্যে উৎপাদনে প্রযুক্তি গত ব্যবহার এখনো উল্লেখযোগ্য নয়। খাদ্য প্রস্তুত কারক, উৎপাদন কারী, বিপণনকারী থেকে শুরু করে ভোক্তা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি তথা ঐুমরবহব মেনে খাদ্য পৌঁছানোর যে প্রক্রিয়া এই প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন ভাবে খাদ্য নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় ফলে খাবার টি বিভিন্ন ভাবে দূষিত হয়ে, ভেজাল মিশ্রিত হয়ে, অথবা জীবাণুর সংস্পর্শে চলে আসে যা মানব শরীরের বিভিন্ন ধরণের রোগ সৃষ্টি করে। এবং এই দূষিত এবং অস্বাস্থ্যকর খাবার দীর্ঘদিন ধরে খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় যা বিশ্বস্বাস্থ্যের জন্য বড় ধরনের হুমকি। তাই খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থা থেকে শুরু করে একদম ভোক্তা পর্যন্ত যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে খাদ্য শৃঙ্খল পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার এবং সেই সাথে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ভাবে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা অতীব জরুরি।এই ব্যাপারে গণমাধ্যম থেকে শুরু করে যত রকমের মিডিয়া আছে সব জায়গায় সর্বোচ্চ সচেতনতা গড়ে তোলা দরকার যাতে বিশ্বব্যাপী সচেতনতা তৈরি হয়।এছাড়া এই শতাব্দীতে জলবায়ু পরিবর্তন একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উদ্বেগের বিষয় এবং এই জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ভবিষ্যত খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সংঘটিত বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন খরা, বন্যা, ঘূর্ণিঝড় ইত্যাদির কারণে খাদ্য উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। ফলে বিশ্বের আট মিলিয়ন মানুষের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।তাই আমাদেরকে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে নজর দিতে হবে এবং সেই সাথে জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে।কারণ খাদ্য নিরাপত্তার সাথে জলবায়ু পরিবর্তন সরাসরি জড়িত।
খাদ্য নিরাপত্তা কী? বর্তমানে কেন খাদ্য নিরাপত্তা এত গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে?
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডঐঙ) খাদ্য নিরাপত্তাকে নিন্মোক্তভাবে সংজ্ঞায়িত করেছে:
"খাদ্য নিরাপত্তা হলো এমন একটি অবস্থা, যেখানে সকল মানুষ সব সময় পর্যাপ্ত, নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্যপ্রাপ্তির নিশ্চয়তা পায়, যা তাদের খাদ্য চাহিদা পূরণ করে এবং সক্রিয় ও সুস্থ জীবনযাপনের জন্য প্রয়োজনীয়।"
অর্থাৎ সক্রিয় ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করার জন্য পৃথিবীর সকল মানুষের জন্য পর্যাপ্ত, নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাবারের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করাই হল খাদ্য নিরাপত্তা।তাই খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে পৃথিবীর সব মানুষের জন্য খাদ্যের যোগান পর্যাপ্ত হতে হবে, এবং তা হতে হবে নিরাপদ ও পুষ্টিকর। কিন্তু আধুনিকায়নের এই যুগে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং তা বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠছে।কারণ একদিকে যুদ্ধবিগ্রহ, জলবায়ু পরিবর্তন, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, অর্থনৈতিক অস্থিরতা ইত্যাদি নানাবিধ কারণে খাদ্যের অপ্রতুলতা দেখা দিচ্ছে।ফলে খাদ্যের যোগান পর্যাপ্ত হচ্ছে না। তাছাড়া নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনও পুরোপুরি ভাবে হচ্ছে না।কারণ উন্নয়নশীল দেশগুলোতে খাদ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে অনেক ক্ষেত্রেই স্বাস্থ্যবিধি মানা হয় না । এছাড়া পুষ্টিকর খাবারের সহজলভ্যতা এখন আর আগের মত নাই।কারণ বর্তমানে প্রক্রিয়াজাত খাবার ও ফাস্টফুড অনেক বেশি সস্তা ও সহজলভ্য।যা পুষ্টিহীন,ট্রান্সফ্যাট,চিনি, কৃত্রিম রং, এবং উচ্চমাত্রার লবণযুক্ত। এসব কারণে খাদ্য নিরাপত্তা ব্যাপক চ্যালেঞ্জ এর মুখে পড়েছে। এছাড়াও যে যে কারণগুলোর জন্য খাদ্য নিরাপত্তা ইস্যু এত গুরুত্বপূর্ণ ও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়ে উঠছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো:
১.যুদ্ধ বিগ্রহ:
যুদ্ধ ও সংঘাতময় পরিস্থিতির কারণে খাদ্যের সহজলভ্যতা হ্রাস পাচ্ছে।যার প্রকৃষ্ট উদাহরণ হলো মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে বিভিন্নরকম সংঘাতময় পরিস্থিতি।যার কারণে সেসব স্থানে দুর্ভিক্ষের সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে গম , ভুট্টা ও ভোজ্যতেলের সরবরাহে সংকট দেখা দিয়েছে।যা বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তাকে বিঘ্নিত করছে।
২.জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব:
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (ঋঅঙ) এর এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে খাদ্য উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে এবং খাদ্যদ্রব্যের মূল্য ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাছাড়াও বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন:বন্যা, খরা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস ইত্যাদির কারণে খাদ্যশস্য উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে। খাদ্য নিরাপত্তার প্রশ্নে বিজ্ঞানীরা জলবায়ু পরিবর্তনকেই সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
৩.আবাদি জমি হ্রাস ও পরিবেশ দূষণ:
অপরিকল্পিত নগরায়ন, জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও শিল্পায়নের কারণে বিপুল পরিমাণ আবাদি জমি চাষের অনুপযোগী হয়ে উঠছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রতি বছর বিশ্বে ১২ মিলিয়ন হেক্টর আবাদি জমি চাষের অনুপযোগী হয়ে উঠছে।যা খাদ্যের উৎপাদন বহুগুণে হ্রাস করছে।
৪.মরুকরণ:
বনভূমি উজাড়, অনিয়ন্ত্রিত চাষাবাদ এবং অতিরিক্ত কীটনাশক প্রয়োগের ফলে আবাদি জমি হ্রাস পাচ্ছে। জাতিসংঘের বিশেষায়িত সংস্থা ওহঃবৎমড়াবৎহসবহঃধষ চধহবষ ড়হ ঈষরসধঃব পযধহমব( ওচঈঈ)'র রিপোর্ট অনুযায়ী বিশ্বের ৩০-৩৫%আবাদি জমি মরুকরণের ঝুঁকিতে রয়েছে। এছাড়াও এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলোতে ব্যাপক বন উজাড় ও শিল্পায়নের কারণে কৃষি উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে।যার কারণে বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে।কারণ বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৬০ শতাংশের বসবাসের এই এশিয়া বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলছে।কারণ এশিয়া থেকে বিশ্বের বহু দেশে খাদ্য রপ্তানি হয়।
৫.রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা:
রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা বিভিন্ন রাষ্ট্রের বাণিজ্যনীতি কে ব্যাপক ভাবে প্রভাবিত করে।এসব কারণে বিভিন্ন আঞ্চলিক দ্বন্দ্ব ও সংঘাতময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় যা খাদ্যের যোগান ও মূল্যকে প্রভাবিত করে। এছাড়াও আরো জানা অজানা অনেক কারণে খাদ্য নিরাপত্তা আজ অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও চ্যালেঞ্জের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।এসব নানাবিধ কারণে ইতোমধ্যে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) আশঙ্কা প্রকাশ করছে যে , বিশ্বজুড়ে খাদ্যের সংকট তৈরি হতে পারে।ফলে জাতিসংঘ ঘোষিত কর্মসূচি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় (এসডিজি)২০৩০ সালের মধ্যে ক্ষুধামুক্ত বিশ্ব গড়ার যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে যাচ্ছে।
তাই এই উদ্ভূত পরিস্থিতি সমাধানের জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ভাবে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। এবং টেকসই সমাধানের পথ বেছে নেওয়া প্রয়োজন যাতে অদূর ভবিষ্যতে খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হতে না হয়।
খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে টেকসই সমাধানের জন্য করণীয়:
খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ভাবে টেকসই ও দীর্ঘমেয়াদি নীতি গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি। বর্তমান বিশ্বে জনসংখ্যা বৃদ্ধি, যুদ্ধ ও সংঘাত, জলবায়ু পরিবর্তন, আবাদি জমি হ্রাস, ও মূল্যস্ফীতির কারণে খাদ্য সংকট একটা বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠছে।এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। যেমন:
জাতীয় পর্যায়ে টেকসই পদক্ষেপ:
১.স্মার্ট কৃষি ব্যবস্থা চালু করা, যাতে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করে উৎপাদন বৃদ্ধি করা যায়।
২.জলবায়ু সহনশীল কৃষি প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা ।
৩.রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহারের পরিবর্তে জৈব সার ব্যবহার করতে উৎসাহিত করা।
৪.আবাদি জমি রক্ষার জন্য আইন প্রণয়ন করা।
৫.কৃষিপণ্যের সংরক্ষণ ও সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা।
৬.সরকারি খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি সম্প্রসারণ করা।
৭.অল্প আয়ের মানুষের জন্য স্বল্পমূল্যে পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিত করা।
৮.জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে খাদ্যের অপচয় রোধ করা।
৯.স্থানীয় পর্যায়ে শস্য সংরক্ষণ ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ সম্পর্কে কৃষকদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা।
১০.খাদ্য উৎপাদন থেকে শুরু করে ভোক্তা পর্যন্ত পৌঁছাতে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য নীতিমালা প্রণয়ন করা।
আন্তর্জাতিক পর্যায়ে টেকসই পদক্ষেপ:
এক্ষেত্রে জাতিসংঘ ও বৈশ্বিক সংস্থা গুলো কে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করতে হবে। যেমন:
১.জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার মাধ্যমে
খাদ্য উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিতরণ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা।
২.দূর্ভিক্ষপ্রবণ দেশগুলোতে খাদ্য সহায়তা ও পুষ্টিকর খাবারের যোগান দেয়া এক্ষেত্রে ডড়ৎষফ ঋড়ড়ফ চৎড়মৎধস (ডঋচ) কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
৩.খাদ্যের গুণগত মান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহায়তা নেয়া।
৪.ওগঋ ও বিশ্বব্যাংক এর সহায়তায় বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোর জন্য খাদ্য নিরাপত্তা তহবিল তৈরি করা।
এছাড়া এই বৈশ্বিক সংস্থা গুলোর ভূমিকা ছাড়াও আরো যেসব পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে যেমন:
৫.জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করা সেই সাথে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি বাস্তবায়ন করতে উদ্যোগ নেয়া।
৬.খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উন্নত প্রযুক্তি কীভাবে কাজে লাগানো যায় সে ব্যাপারে গবেষণা বৃদ্ধি করা ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা।
৭.দুর্ভিক্ষ বা যুদ্ধপ্রবণ দেশগুলোতে জরুরি খাদ্য সহায়তা দিতে আন্তর্জাতিক খাদ্য তহবিল গঠন করা।
পরিশেষে একথা প্রতীয়মান হয় যে, খাদ্য নিরাপত্তা বর্তমান সময়ের এক গুরুত্বপূর্ণ ও চ্যালেঞ্জের বিষয়।এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে না পারলে অদূর ভবিষ্যতে বিশ্বব্যাপী চরম খাদ্য সংকট দেখা দিবে।তাই এখন থেকেই খাদ্য নিরাপত্তা ইস্যুতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে মোকাবেলা করার জন্য সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। এবং উন্নত বিশ্বের দেশগুলোকে এই ব্যাপারে উন্নয়নশীল দেশের পাশে দাঁড়াতে হবে। বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তার প্রশ্নে টেকসই ব্যবস্থাপনার দিকে এগিয়ে যেতে হবে। এজন্য দরকার গবেষণা ও বিনিয়োগ।সেই সাথে বৃহত্তর খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে যেসব দেশ ও অঞ্চল কাজ করে যাচ্ছে তাদের সঙ্গে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে হবে।
লেখক: পরিবেশ ও জলবায়ু গবেষক, (উঠগ - পবিপ্রবি), সদস্য এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল গ্লোবাল কমিউনিটি।
আপনার মতামত লিখুন :