রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্ব নিতে যাওয়া প্রশাসককে আটকে রেখে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ ওঠেছে। এ সময় এক ইউপি সদস্যকে মারধর করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে উপজেলার নরদাশ ইউনিয়ন পরিষদে এ ঘটনা ঘটে বলে বাগমারা থানার ওসি তৌহিদুল ইসলাম জানান।
এ ঘটনায় ইউপির সদস্য এবং ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির ‘সভাপতি’ রফিকুল ইসলামকে আটক করেছে পুলিশ। এ সময় মারধরে আহত ইউপি সদস্য আজাহার আলীসহ পাঁচজনকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ জানায়, নরদাশ ইউনিয়ন পরিষদে লাঞ্ছনার শিকার প্রশাসকের নাম তাজরুল ইসলাম মিলন। তিনি বাগমারা উপজেলা আইসিটি কর্মকর্তা।
নরদাশ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও নরদাশ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম সারোয়ার আবুল। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আত্মগোপনে চলে যান তিনি। পরে তিনি চেয়ারম্যান পদ থেকে বরখাস্ত হন। একই সঙ্গে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম।
আহত ইউপি সদস্য আজাহার আলী বলেন, সব বিষয়ে একক সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণে কিছু দিনের মধ্যে অন্যান্য ইউপি সদস্যদের সঙ্গে রফিকুল ইসলামের বিরোধ বাঁধে। পরে রফিকুলকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে প্রশাসক নিয়োগের জন্য নয় ইউপি সদস্য রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেন। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার রফিকুল ইসলামকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় এবং প্রশাসক হিসেবে তাজরুল ইসলাম মিলন নিয়োগ পান।
তিনি বলেন, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাজরুল ইসলাম নরদাশ ইউনিয়ন পরিষদে গেলে তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে ঘরে আটকে রাখে রফিকুল ইসলাম ও তার লোকজন। এ ঘটনার প্রতিবাদ করায় তাকেও পিটিয়ে জখম করে।
তখন খবর পেয়ে অন্যান্য ইউপি সদস্য তাদের লোকজন নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে যান। এ সময় রফিকুলের লোকজনের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাঁধে। এক পর্যায়ে স্থানীয় লোকজন রফিকুলকে ধরে একটি ঘরে আটকে রাখে। পরে খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুল ইসলাম এবং বাগমারা থানার পুলিশ গিয়ে রফিকুল আটক করে এবং পরিস্থিতি শান্ত করে।
বাগমারা থানার ওসি তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ইউপি সদস্য ও বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলামকে আটক করে থানায় নেওয়া হয়েছে। ওই ঘটনায় এখনো থানায় কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ দিলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইউএনও মাহবুবুল ইসলাম বলেন, নরদাশ ইউনিয়ন পরিষদে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে রফিকুল ইসলাম নামের এক ইউপি সদস্যকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলা হবে।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডি এম জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, রফিকুল ইসলাম বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হলেও বর্তমানে তিনি কোনো পদে নেই। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে গত সংসদ নির্বাচনে তাকে ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতির পদ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। অতএব, ওই ঘটনার সঙ্গে বিএনপির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
আপনার মতামত লিখুন :