বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার বাঞ্ছারামপুর পৌরসভার মেয়র সহ ১৩ জন ইউপি চেয়ারম্যানের মধ্যে ১১ জন ইউপি চেয়ারম্যান গা ঢাকা দিয়েছেন। এর মধ্যে উজানচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী জাদিদ আল রহমান জনি এবং ছলিমাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. জালাল মিয়া নয়ন হত্যা মামলার আসামী হিসেবে গ্রেফতার হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কারাগারে রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বাঞ্ছারামপুর পৌরসভা সহ উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন পরিষদে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৫ আগস্টের পর চেয়ারম্যানদের কেউ ই অফিসে আসেনি। তাদের সবার অফিস তালাবদ্ধ। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সেবা প্রত্যাশী সাধারণ জনগণ। কার্যালয় ছাড়ার এক মাসের অধিক সময় পেরিয়ে গেলেও তাদের সবাই লাপাত্তা। সেবা প্রত্যাশীরা চেয়ারম্যানের কক্ষ তালাবন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। প্রয়োজনীয় কাজের জন্য পরিষদে আসা জনসাধারণ পড়েছেন বিপাকে।
তবে কিছু ইউনিয়ন পরিষদে উদ্যোক্তারা উপস্থিত থাকলেও চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরের জন্য ভোগান্তিতে পরতে হচ্ছে সেবা প্রার্থীদের। ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে জন্ম নিবন্ধন, নাগরিক সনদ ও ট্রেড লাইসেন্স করতে আসা বেশ কয়েকজন জানায়, সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত অপেক্ষা করছেন তবুও চেয়ারম্যানের দেখা নেই।
এ সময় স্থানীয় জনসাধারণ অভিযোগ করে বলেন, গত ৫ আগস্ট সোমবার শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর থেকে জনপ্রতিনিধিদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বলতে গেলে চেয়ারম্যানদের সবাই নিখোঁজ। লোকজন প্রতিদিন এভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে অপেক্ষা করেও সেবা পাচ্ছেন না।
বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন পরিষদের প্রায় সব চেয়ারম্যানই বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলেন। স্থানীয় এমপি ক্যাপ্টেন এ বি তাজুল ইসলামের বিশ্বস্ত এসব চেয়ারম্যানদের অনেকে নানাবিধ অপকর্মের সাথে জড়িত ছিলেন। নিজের এহেন স্বার্থে ক্যাপ্টেন এ বি তাজুল ইসলাম তার আপন ভাতিজা ছয়ফুল্লাকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম তুষারকেও বলি দিয়েছিলেন।
এদিকে পৌরসভা বাতিল হওয়ার পর মেয়র তফাজ্জল হোসেনও গা ঢাকা দিয়েছেন। ফলে পুরো বাঞ্ছারামপুর উপজেলার সেবা প্রত্যাশী সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
উল্লেখ্য, বাঞ্ছারামপুর পৌরসভার মেয়র তফাজ্জল হোসেনও বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন :