নাম তার মঙ্গল মিয়া। করতেন কৃষি কাজ। তার নিজের ৪ শতক জায়গায় ছিলো একটি আম গাছ। যা এখনো আছে। সেই আম গাছের আম ছিলো অতি সুমিষ্ঠ। আম মিষ্টি বিধায় এলাকার কিছু মানুষসহ প্রাইমারি স্কুলের দুষ্টু শিক্ষার্থীরা সড়কের ধারের এই আম গাছের আমের প্রতি দারুন আকর্ষণ থেকে ঢিল ছুড়তো। কেউ কেউ চুরি করে খেয়ে ফেলতো।
তাই দেখে বৃদ্ধ মঙ্গল মিয়া শিশুদের ভয় দেখাতে আম গাছের ঢালায় কিছু লাল কাপড়ের টুকরো বেঁধে দেন। লাল কাপড়ে যদি তারা ভয় পায়। লাল কাপড়কে স্থানীয় ভাষায় বলা হয় 'ত্যানা'। মঙ্গল মিয়ার বুদ্ধি কাজে দিলো। লাল ত্যানায় বা কাপড়ের টুকরো দেখে ভয়ে সে আম গাছে কেউ আর ঢিল ছুঁড়ে না, চুরিও হয় না। তার এই কেরামতি চারপাশে ছড়িয়ে যায়। ২০২২ সালে তিনি মারা যান। তথ্যগুলো জানান তারই ভাতিজা মির্জা মাহবুব।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ছলিমাবাদ সদর ইউনিয়নে সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গো-বেচারা টাইপের মঙ্গল মিয়া ২ বছর আগে মারা যাবার পর শুরু হয় কিছু মাজার ব্যবসায়ীর কর্মকাণ্ড। যা সৈয়দ ওয়ালিওল্লাহ'র বিখ্যাত লাল সালুর উপন্যাসের কথাই মনে করিয়ে দেয়।
ঐ আাম গাছটির কাছে তাকে কবরস্থ করার পর সারা গাছে লাল-নীল সহ বিভিন্ন ত্যানা টানিয়ে দেয়া হয়। গত বছর তার কতিপয় অতি উৎসাহী কিছু ভক্ত ও প্রবাসী ২ ছেলের সহায়তায় কবরটিকে পাকা করে মাজারে রূপ দেয়ার পর মঙ্গল মিয়া হয়ে যান 'ত্যানা শাহ'। তার প্রথম ওরশ ঘটা করে পালন করেছে ভক্তরা। অথচ, এলাকার বহুলোক সহ তার নিকট আত্মীয় সুমন মেম্বার জানান, তিনি মাজার পুজারী ছিলেন না। তিনি কোনো আধ্যাত্মিক শক্তি বহন করতেন না। তার কোনো মুরিদ আশেকান ছিল না।
আম গাছের আম রক্ষার জন্য লাল কাপড় দিয়েছেন মাত্র। কিন্তু এটি নিয়ে এখন মাতামাতি চলছে।
প্রবাসী ছেলেদের সাথে চেষ্টার পরেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
তার ভাতিজা মাহবুব জানান, আমার চাচা মঙ্গল মিয়া সাদাসিধে জীবন যাপন করতেন। তাকে একটা মহল তার মাজার বানিয়ে, সে মাজারে লাল ত্যানা লাগিয়ে বানিয়ে দিলো ত্যানা শাহ্। এটি ঠিক নয়। ওরশ বন্ধ করার জন্য তিনি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
আপনার মতামত লিখুন :