কাঠগড়ায় বড় ছেলে আসিবুর রহমান খানের সঙ্গে পাঁচ মাস দেখা নেই বলে কাঁদলেও এর কিছু সময় পর ঠিকই হাসতে হাসতে হাজতখানায় গেলেন সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান। বিষয়টি রীতিমতো আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার (১৭ মার্চ) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলামের আদালতে। এদিন তার শুনানি চলাকালে প্রথমে তিনি কেঁদে ফেলেন। পরে আদালত বাড্ডা থানার রফিকুল ইসলাম হত্যা মামলায় তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
জানা গেছে, সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খানকে আজ সকাল ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে আদালতের কাঠগড়ায় তোলা হয়। তখন তিনি আইনজীবীর সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ করেন। পরে তার উপস্থিতিতে ১০টা ৮ মিনিটে শুনানি শুরু হয়।
শুনানিতে শাজাহান খানের আইনজীবী মিজানুর রহমান বাদশা বলেন, শাজাহান খান আটবারের সংসদ সদস্য ও দুইবারের মন্ত্রী ছিলেন। তিনি ঐতিহ্যগতভাবে রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। এর আগে তাকে দুইবার রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। রিমান্ডে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তিনি আরও বলেন, তার (শাজাহান খান) বয়স ৭৬ বছর। রোজার মধ্যে রিমান্ডে নিলে হয়রানি হবে এবং ফের অসুস্থ হয়ে পড়বেন তিনি। তাই রিমান্ড নামঞ্জুর করা হোক।
রিমান্ড শুনানি চলাকালে ১০টা ২৭ মিনিটে শাজাহান খান বলেন, মাননীয় আদালত আমি কথা বলতে চাই। পরে আদালতের অনুমতি নিয়ে তিনি কথা বলতে শুরু করেন।
এ সময় তিনি বলেন, আমি জড়িত না। কেন এই মামলা হলো? শুধু আমার বিরুদ্ধে না, আমার বড় ছেলে আসিবুর রহমানকেও আসামি করা হয়েছে।
কাঁদতে কাঁদতে তখন সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ছেলের সঙ্গে আমার পাঁচ মাস দেখা নেই।
এরপর বিচারক বলেন, আপনার বিষয়ে আইনজীবী কথা বলেছেন। শাজাহান খান তবুও যেন মানবার পাত্র নন। দুই হাত জোড় করে তিনি কথা বলার জন্য সময় চান এবং বিচারকের উদ্দেশে বলেন, আমার কথা শুনতে হবে, আমাকে একটু সময় দেন। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এই মামলা দেওয়া হয়েছে।
এ সময় কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে তাকে টিস্যু দিয়ে দুই চোখ মুছতে দেখা যায়। শুনানি শেষে আদালত তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পরে ১০টা ৪০ মিনিটে হেলমেট, বুলেট প্রুভ জ্যাকেট ও হাতকড়া পরিয়ে তাকে আদালত থেকে বের করা হয়।
হাজতখানায় নেওয়ার সময় তিনি বলেন, পুলিশ বলেছে কথা বলা নিষেধ। অথচ এটা গণতান্ত্রিক দেশ। আমি সারাজীবন কথা বলে এসেছি, কথা বলেই যাব।
এরপর হাসতে হাসতে হেঁটে হাজতখানায় যান আওয়ামী সরকারের সাবেক এই মন্ত্রী।
আপনার মতামত লিখুন :