এখন থেকে দেশের বাইরে যেতে হলে আগে থেকেই ভাবতে হয় কোথায় যাওয়া যাবে আর কোথায় যাওয়া যাবে না। কারণ ট্যুরিস্ট ভিসা নিয়ে দেশের বাইরে গিয়ে থেকে যাওয়ার প্রবণতার কারণে বাংলাদেশীদের জন্য বন্ধ হয়ে যাচ্ছে অনেক দেশে যাওয়ার সুযোগ। যদিও আলোচনা ছাড়া হুট করে ভিসা বন্ধের পক্ষে না ট্যুর অপারেটররা। তার বলছেন, অনিয়ম বন্ধে প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগের।
দেশের বাইরে ঘুরতে যাওয়া মো. শাহজালাল সম্রাট একজন। বছরে কমপক্ষে দুইবার তিনি দেশের বাইরে যান। তিনি বলেন, এম্বাসিকে বিশ্বাস করাতে কষ্ট হয় যে আমরা রিয়েল ট্রাভেলার। তখন তাদেরকে বিভিন্ন ধরণের প্রমাণ দিতে হচ্ছে তাদেরকে। কিছু কিছু এম্বাসি বা ট্রাভেল এজেন্সি ভিডিও কলে অফিস দেখতে চায়।
গত কয়েক বছরে বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের জন্য বন্ধ বা সীমিত হয়েছে বেশ কিছু দেশের দরজা। এ তালিকায় আছে তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সিঙ্গাপুর, কম্বোডিয়া সহ মধ্য এশিয়ার একাধিক দেশ। এ তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন ভিয়েতনাম।
এ খাত সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, পর্যটনের নামে একশ্রেণির অসাধু চক্রের আদম ব্যবসা এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী। অভিযোগ আছে, সরকারও তেমন মনোযোগী নয় এ বিষয়ে।
অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেলস এজেন্টস অব বাংলাদেশের (আটাব) সাধারণ সম্পাদক আফসিয়া জান্নাত সালেহ বলেন, অসৎ উদ্দেশে ট্যুরিজমের নামে লোক পাঠিয়ে দিলো, সেই লোক গিয়ে আর ফেরত এলো না তখন সেই সব দেশের কাছে বাংলাদেশ নিয়ে একটা নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়। এরপর রিয়েল ট্রাভালাররা এর জন্য ভুক্তভোগী হন।
ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টোয়াব) পরিচালক তাসনিম আমিন শোভন বলেন, যখন ওভার স্টে করা হয় তখন বাংলাদেশের ব্যক্তিদের ভিসা না দিতে সেসব দেশের সরকার বাধ্য হয়।
অভিযোগ থাকলেও, আলোচনা ছাড়া ভিসা বন্ধ করাটা সমীচীন নয় বলে মনে করেন ট্যুর অপারেটররা। জোর দিতে চান সচেতনতা তৈরিতে।
অভিবাসন খাতের বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান রামরুর নির্বাহী পরিচালক মনে করেন, এমন পরিস্থিতি এড়াতে সরকারের উদ্যোগটা জরুরি। আর নিতে হবে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান রেফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্ট রিসার্চ ইউনিটের (রামরু) নির্বাহী পরিচালক সি আর আবরার বলেন, বিদেশে যাদেরকে আটকানো হয় বা ফেরত পাঠানো হচ্ছে সেখান থেকেই তো ফলোআপ করা যায় তাদেরকে কারা পাঠিয়েছিল, কিভাবে পাঠিয়েছিল। সেখানে গবেষকদের সঙ্গে রাষ্ট্রের একটা যোগসূত্র হওয়া দরকার। যার মাধ্যমে এটা আমরা বিশ্লেষণ করে দেখতে পারি। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে অন্য দেশও এমন পথে হাটতে পারে বলে আশঙ্কা এই গবেষকের।
আপনার মতামত লিখুন :