জনগণের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে ইতালির সড়ক আইনে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে দেশটির স্থানীয় সরকার। এই পরিবর্তনের কারণে অনেক প্রবাসী বাংলাদেশি নতুন নীতিমালার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে গিয়ে বিপাকে পড়ার আশঙ্কা করছেন।
সম্প্রতি ইতালির সড়ক মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নতুন সড়ক আইন কার্যকর করার ঘোষণা দেওয়া হয়।
সহজে চালানো শেখা যায় এবং লাইসেন্সের প্রয়োজন হয় না বলে অনেক প্রবাসী বাংলাদেশি ইতালিতে ই-বাইক ও মনোপাত্তিনো (স্কুটি) ব্যবহার করে কাজে যাতায়াত করেন। এছাড়া ফুড ডেলিভারি কাজে এই যানবাহনগুলো বহুল ব্যবহৃত।
নতুন আইন কী বলছে?
১. বীমা বাধ্যতামূলক: ১৪ ডিসেম্বর থেকে সব ই-সাইকেল ও স্কুটির জন্য বীমা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
২. যাত্রী বহনে নিষেধাজ্ঞা: ই-সাইকেল বা স্কুটিতে একাধিক যাত্রী বহন করা যাবে না।
৩. নিরাপত্তা সরঞ্জাম: যান চালানোর সময় হেলমেট এবং ট্রাফিক লাইট ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
৪. ট্রাফিক নিয়ম অমান্যে জরিমানা: সড়কের ট্রাফিক সংকেত অমান্য করলে এবং উঁচু হাঁটা-চলার জায়গা বা সাইকেল লেন ব্যবহার না করলে জরিমানা দিতে হবে।
নিয়ম অনুযায়ী, বিপরীতমুখী যান চলাচল করলেও জরিমানা আরোপ করা হবে। যদি কেউ এই নিয়ম না মানেন, তাহলে তাকে সর্বোচ্চ ৪০০ ইউরো পর্যন্ত জরিমানা করা হতে পারে।
প্রবাসীদের প্রতিক্রিয়া
মিলানের ডেলিভারি কর্মী রাসেল বেপারি বলেন, অনেকদিন ধরে নীতিমালা না মেনে চলতে অভ্যস্ত আমরা। হঠাৎ করে আইন পরিবর্তনের কারণে নতুন নিয়ম মানতে কিছুটা সময় লাগবে। তবে তিনি স্বীকার করেন, এই আইন সবার জন্য নিরাপদ।
বলোনিয়ার প্রবাসী সবুজ হাওলাদার জানান, ইতালিয়ান লাইসেন্স না থাকায় কাজের জন্য ই-স্কুটি ব্যবহার করি। নতুন নিয়মে বীমার জন্য প্রতি বছর অতিরিক্ত খরচের মুখে পড়তে হবে। তবে তিনিও মনে করেন, এই আইন জীবনের নিরাপত্তার জন্য দরকারি।
রোমের ফুড ডেলিভারি কর্মী শুভ বলেন, যত্রতত্র চলাচলের কারণে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ে। নতুন আইন মানলে এই ঝুঁকি কমবে।
আরও বিধিনিষেধ
অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালালে ২২০ থেকে ৮৮০ ইউরো পর্যন্ত জরিমানা এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স সাময়িকভাবে স্থগিত করা হবে। এছাড়া মদ্যপান অবস্থায় গাড়ি চালানো বা চালানোর সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার করলে ২৫০ থেকে এক হাজার ইউরো পর্যন্ত জরিমানা দিতে হবে।
ইতালির নতুন সড়ক আইন সবার জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভূমিকা রাখবে বলে আশা স্থানীয় সরকারের। যদিও প্রাথমিকভাবে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য এটি কিছুটা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে, তবে দীর্ঘমেয়াদে এই আইন সড়কে শৃঙ্খলা আনতে সহায়ক হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আপনার মতামত লিখুন :