Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা বুধবার, ১২ মার্চ, ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১

সিরিয়ায় খুলছে পর্যটনের দুয়ার 


দৈনিক পরিবার | প্রবাস ডেস্ক ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৫, ১০:২৭ পিএম সিরিয়ায় খুলছে পর্যটনের দুয়ার 

শীতকালীন এক শান্ত আবহাওয়ায় সিরিয়ার দামেস্ক থেকে সিরিয়ার পর্যটন উদ্যোক্তা আয়ুব আলসমাদি সিএনএন ট্রাভেলকে জানান, আগের তুলনায় সিরিয়ায় সবকিছু অনেক ভালো হয়েছে। আসাদ শাসনের পতনের পর দেশটির পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্যহারে উন্নতি লাভ করেছে এবং জনগণ এখন অত্যন্ত আশাবাদী।
২০২৪ সালের ৮ ডিসেম্বর দামেস্কে সিরিয়ার বিদ্রোহীদের আক্রমণে পতন ঘটে বাশার আল-আসাদের। আসাদ মস্কোতে পালিয়ে যাওয়ার পর বর্তমানে দামেস্কে ফ্রি সিরিয়া আন্দোলনের সবুজ, সাদা এবং কালো পতাকা উড়ছে। আলসমাদির প্রত্যাশা সিরিয়ার বিধ্বস্ত পর্যটন শিল্প আবারও পুনরুজ্জীবিত হবে।
২০১১ সাল থেকে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ হাজার হাজার মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। তবে, সম্প্রতি পরিস্থিতি উন্নত হওয়ায় আন্তর্জাতিক বিমানসংস্থাগুলো তাদের কার্যক্রম পুনরায় চালু করেছে। কাতার এয়ারওয়েজ এবং তুর্কি এয়ারলাইন্স দামেস্কে তাদের ফ্লাইট পরিচালনা পুনরায় শুরু করেছে।
যদিও অনেক দেশের সরকার তাদের নাগরিকদের সিরিয়া ভ্রমণ না করার পরামর্শ দিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর সন্ত্রাসবাদ, গৃহযুদ্ধ এবং অপহরণের ঝুঁকি উল্লেখ করে সিরিয়া ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
আসাদের পতনের ৬ সপ্তাহ পর আলসমাদি তার প্রথম পর্যটক দলকে জানুয়ারির মাঝামাঝি লেবানন-সিরিয়া সীমান্তে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন। 
তিনি বলেন, সিরিয়ার যুদ্ধের খবর সমস্ত পৃথিবী জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে, এখন আসাদ চলে গেছে।  তিনি নিশ্চিত যে, সিরিয়ায় পর্যটন দ্রুত বৃদ্ধি পাবে। অন্য দেশগুলো সিরিয়া যেও না- এই কথা বলা বন্ধ করলে, সিরিয়ার পর্যটন শিল্প নতুন জীবন পাবে।
সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধের আগে দেশের অর্থনীতির একটি বড় অংশ পর্যটন শিল্পের ওপর নির্ভরশীল ছিল। এখানে অবস্থিত প্রাচীন ইতিহাসের স্মৃতিস্তম্ভগুলো, যেমন পালমিরা, যা আইএসআইএস দ্বারা ধ্বংস হয়ে যায়, পর্যটকদের কাছে বিশেষ আকর্ষণ ছিল। এছাড়া, ক্রুসেড যুগের দুর্গগুলোও দর্শনার্থীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্য ছিল। দামেস্ক বিশ্বের প্রাচীনতম শহরগুলোর একটি। এটি বহু পর্যটকের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু ছিল।
২০১৭ সালে আসাদ সরকার সিরিয়ায় পর্যটন পুনরায় শুরুর উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তবে, সরকার এবং গোপন পুলিশ কর্তৃক পর্যটন দলকে অনুসরণ করা হতো। তাই পর্যটকরা সেসময় নিজেদের নিরাপদ বোধ করতেন না। অনেক গাইডদেরকে মাঝে মাঝে কারাগারে প্রেরণ করা হতো। হাব্বাব নামের একজন সিএনএনকে বলেন, যতবারই তিনি পর্যটকদের সিরিয়া নিয়ে যেতেন, গোপনে পুলিশ তার অফিসে এসে তাদের সম্পর্কে জানতে চাইত। তারা মনে করতো সব পর্যটকই গুপ্তচর। তবে, বর্তমানে সিরিয়ায় আসা পর্যটকরা মুক্তভাবে চলাচল ও কথা বলতে পারছেন। স্থানীয়রা নিজেদের পুনর্গঠন শুরু করেছে। দোকানপাট এবং ব্যবসা পুনরায় চালু হচ্ছে।
সিএনএন ট্র্যাভেলকে হাব্বাব আরও বলেন, কয়েক দশক পর প্রথমবারের মতো সুখ ও আশা অনুভব করছে সিরিয়ার নাগরিকরা। 
তিনি বলেন, এখন সিরিয়ায় এক বিশাল উৎসবের মতো চলছে। তিনি বলেন, লাখ লাখ পর্যটক যারা একসময় সিরিয়ায় এসেছিলেন, তারা আবারও ফিরে আসতে চাইবেন বলে তিনি নিশ্চিত।

Side banner