বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে ওমরাহ করার জন্য ইতোমধ্যে আমন্ত্রণ জানিয়েছে সৌদি আরব সরকার। ডিসেম্বরের মাঝামাঝিতে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা করানোর আগে পবিত্র ওমরাহ পালন করবেন তিনি। এরপর প্রথমে যুক্তরাজ্য এবং পরে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার কথা রয়েছে খালেদা জিয়ার।
বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা জানান, উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে দু-তিনটি দেশে নেওয়ার দরকার হতে পারে। তাকে যুক্তরাষ্ট্রেও নেওয়া হতে পারে। সে জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ১২ অথবা ১৩ ডিসেম্বর তিনি যাত্রা শুরু করতে পারেন। তার সঙ্গে চিকিৎসকসহ ১৭ জন সফরসঙ্গী থাকবেন। যাওয়ার পথে সৌদি আরবে ওমরাহ পালন করার কথা রয়েছে তার।
এদিকে বুধবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে ভিসা প্রক্রিয়ার জন্য ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিতে গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’ থেকে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে যান খালেদা জিয়া। দূতাবাসের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতসহ দূতাবাসের কর্মকর্তারা এ সময় তাকে স্বাগত জানান। খালেদা জিয়ার সঙ্গে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম আব্দুস সাত্তার ও ব্যক্তিগত চিকিৎসক মোহাম্মদ মামুন।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসকরা জানান, বর্তমানে বিমানে ভ্রমণের মতো শারীরিক ফিটনেস খালেদা জিয়ার রয়েছে। তবে ঝুঁকি এড়াতে তার সফরে ছয়জন চিকিৎসক থাকবেন। যুক্তরাজ্যের ভিসা ইতোমধ্যে পাওয়া গেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসার কাজ এখনও শেষ হয়নি।
প্রসঙ্গত, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি তিনি কারাবন্দি হন। দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দি থাকার পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে তার সাজা স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে সাময়িক মুক্তি দেয়। এরপর থেকে ৬ মাস পরপর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি নেত্রীর সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছিল সরকার।
এমন অবস্থায় গত ৫ আগস্ট গণ আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে নির্বাহী আদেশে মুক্তি পান খালেদা জিয়া। এরপর থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে বিএনপি।
৭৯ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ফুসফুস, আর্থ্রাইটিস, কিডনি, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে বিভিন্ন সময়ে আইসিইউতে রেখে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে মেডিকেল বোর্ডের মাধ্যমে তাকে দীর্ঘ সময় চিকিৎসা নিতে হয়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরকার পতনের পর গত ২১ আগস্ট এভারকেয়ার হাসপাতালে এক মাস চিকিৎসাধীন থেকে বাসায় ফেরেন তিনি।
আপনার মতামত লিখুন :