এখনো অনেকে রয়েছে রাষ্ট্র কাঠামোতে তারা চায় না এই অভ্যুত্থান টিকে থাকুক বলে জানিয়েছেন জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) রাজধানীর সেগুনবাগিচার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজ/শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শহীদ পরিবারকে চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে এ চেক বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সারজিস আলম বলেন, আমরা রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে এখনো বিভিন্ন জায়গায় ব্যত্যয় দেখি। কারণ বিগত ১৬ বছরে এ সুবিধাভোগীরা ছিল। এখনো তারা বিভিন্ন চেহারায়, বিভিন্ন রূপে ঘাপটি মেরে আছে। না হয় গিরগিটির মতো রূপ পাল্টে রয়েছে। সবচেয়ে বড় সমস্যাটি হচ্ছে এখন বিভিন্ন সিস্টেমে আমরা যাই। রাষ্ট্র কাঠামোর যৌক্তিক দাবি নিয়ে, ওই মানুষগুলো এখনো তাদের জায়গা থেকে বিভিন্ন অবহেলা দেখায়। আমরা যখন শহীদ পরিবার ও সহযোদ্ধাদের ফাইল নিয়ে সচিবালয়ে যাই, আমাদের টেবিলে টেবিলে গিয়ে সামনে দাঁড়াতে হয়। এখনো অনেকে রয়েছেন রাষ্ট্র কাঠামোতে, তারা চায় না এ অভ্যুত্থান টিকে থাকুন।
তিনি বলেন, আমরা জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে দেশের প্রতিটি বিভাগে যাচ্ছি। একটি প্রোগ্রাম নিয়ে শহীদ পরিবারের পাশে বাংলাদেশ। প্রতি সপ্তাহে শনিবার আমরা আমাদের শহীদ পরিবারের সদস্য যারা রয়েছেন তাদের সামনে গিয়ে দাঁড়াই। তাদের সামনে গিয়ে যখন দাঁড়ায় তখন একটি জিনিস মনে হয়, এ সময় দেশের রাষ্ট্র কাঠামোর পরিচালনার জন্য যারা দায়িত্ব পালন করছেন তাদেরও প্রত্যেক সপ্তাহে অন্তত একদিন শহীদ পরিবারের সামনে ৩০ মিনিটের জন্য হলেও দাঁড়ানো উচিত।
তিনি আরও বলেন, আজকের এ বাংলাদেশে আমাদের শুনতে হয় সেই কালপিট, সেই নরপিশাচরা যখন প্রশ্ন তুলে বলে, স্নিগ্ধ আর মুগ্ধ এক ব্যক্তি। তখন আমাদের মনে হয় সেই নরপিশাচরা এত বড় হত্যাযজ্ঞ ঘটিয়েছে, ওদের প্রত্যেককে প্রতিদিন শহীদ পরিবারের সামনে দাঁড় করিয়ে দেওয়া উচিত। নরপিশাচদের বিন্দু মাত্র অনুশোচনা নেই। প্রায় দুই হাজার মানুষকে খুন করার সেই ফ্যাসিবাদী দোসরদের বিন্দুমাত্র অনুশোচনা নেই। প্রায় অর্ধ লাখ মানুষকে রক্তাক্ত করা, শত শত ভাই-বোনকে পৃথিবীর আলোর মুখ দেখতে না দেওয়া। শত-শত বীর যোদ্ধা রয়েছে যারা আর নিজের পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়াতে পারবে না। শত শত বীর যোদ্ধা আছে তারা আর কোনো দিন নিজের বাবা-মা ও স্ত্রীকে নিজের হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরতে পারবে না। সেই নরপিশাচদের আমাদের সহযোদ্ধাদের সামনে দাঁড় করিয়ে দেওয়া উচিত। অনুষ্ঠানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এস এম আমানুল্লাহর সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, আজ ২৫ শহীদ পরিবারের সদস্যদের হাতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তিন লাখ টাকা ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে পাঁচ লাখ টাকার চেক তুলে দেওয়া হয়।
আপনার মতামত লিখুন :