Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৮ ফাল্গুন ১৪৩১

ডিসি সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার নানা পরামর্শ


দৈনিক পরিবার | নিজস্ব প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৫, ০৪:৩৫ পিএম ডিসি সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার নানা পরামর্শ

শুরু হয়ে গেল জেলা প্রশাসক সম্মেলন ২০২৫। রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নিজ কার্যালয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
এদিন সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে নিজ নিজ জেলার উন্নয়নে ডিসিদেরকে প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব রাখার পাশাপাশি একগুচ্ছ পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।  
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সরকারকে একটা টিম হতে হবে। সরকার চালাতে টিম ওয়ার্ক লাগে। টিম গঠনের জন্য সবাই একত্র হয়, তখন কার কী করণীয়, সেগুলো নিয়ে আলোচনা থাকে। কার কী ঘাটতি রয়েছে, সেসব বিষয় থাকে। কারণ খেলা হলো সামগ্রিক একটা জিনিস। একজনের ভুল কাজে পুরো টিম তার সাফল্য থেকে বঞ্চিত হয়। তাই আমরা এমন ভুল যেন না করি, যাতে পুরো টিমের সাফল্য ব্যাহত হয়। এগুলো নিয়ে আমাদের আজকের আলোচনা।    
ড. ইউনসূ বলেন, সরকার গঠনের পর ছয় মাস চলে গেল। আয়োজনের জন্য এটাকে আমরা বলছি প্রথম পর্ব। আয়োজনের সময় অনেক ভুলভ্রান্তি হয়েছে। এখন সেগুলো ঠিক করে পুরো খেলার জন্য প্রস্তুত হতে হবে। সেই প্রস্তুতি হলো কি না বা কী কী ঘাটতি রয়েছে সেগুলো ঠিক করতে হবে।
তিনি বলেন, আজকের এই বৈঠক যদি বড় কোম্পানির এক্সিকিউটিভদের নিয়ে হতো। তাদের যারা শরিক থাকতো তারা কী বলতো, নিশ্চয় ম্যানেজিং  ডিরেক্টরের প্রশংসায় সময় নষ্ট করতো তা। তারা বলতো আমাকে এই কাজ দিয়েছেন, আমি এই কাজ করেছি, আমার এই সাফল্য হয়েছে, এখন ওই কাজের জন্য প্রস্তুত। এখানে দুটি উদাহরণ তুলে ধরলাম। একটা মাঠের খেলোয়াড়দের নিয়ে আরেকটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ফিল্ড অফিসারদের বক্তব্য।    
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এই সরকারের খোলোয়াড় আমরা যারা আছি, তাদের ভূমিকা ওই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে কোনো একটির মতো হতে হবে। অমরা কী করছি কী করা দরকার সেগুলো নিয়ে আলোচনা।  
ড. ইউনূস বলেন, আজকের এই সম্মেলনে আমাকে প্রধান অতিথি বলাতে কষ্ট পেলাম। যেন আমাকে বাইরে রাখা হলো এই খেলার মাঠ থেকে। হওয়া উচিত ছিল আমি খেলার ক্যাপ্টেন। আমি অতিথি না, ক্যাপ্টেন হিসেবে বক্তব্য দিতে চাই।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সরকারে কাজ হাতেগোনা মাপা জিনিস। কাজ একই, তবে বারে বারে একই ভঙ্গিতে আসছে। সেসব কাজ কে কীভাবে করছি, কীভাবে করলে ভালো হতো, ক্যাপ্টেনের সিগন্যালটা কীভাবে যাওয়া দরকার, এগুলো নিয়ে আলোচনা হবে।
কো-অর্ডিনেশন নিয়ে সম্মেলনে আলোচনার পরামর্শ দিয়ে ড. ইউনূস বলেন, আমাদের বোঝাবুঝির মধ্যে যেন গলদ না থাকে। সেখানে কী কী বিষয়ে অন্তর্ভুক্ত সবার ভালো করেই জানা আছে। জেলার দায়িত্ব সামগ্রিকভাবে একজনের ওপর। তার সঙ্গে বাকিদের কো-অর্ডিনেশন করতে হয়। সেই কো-অর্ডিনেশনের কি সমস্যা, নাকি পৃথক পৃথকভাবে হবে এগুলো পরিষ্কার করে নেওয়া।
দায় নিয়ে কাজ করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, আমরা হলাম সরকার। তাই দায় এড়ালে হবে না। নারী ও শিশুদের রক্ষা বিশেষ দায়িত্ব। সংখ্যালঘুদের রক্ষা মস্তবড় দায়িত্ব। কারণ বিষয়টি নিয়ে আমাদের ওপর সারা দুনিয়া নজর রাখে। সরকারের দায়িত্ব হলো সব নাগরিকের সুরক্ষা বিধান করা। সামনে আমাদের যেসব কর্মসূচি নেব, সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার কথা মাথায় থাকবে।’
ডিসিদেরকে প্রতিযোগিতার পরামর্শ দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা এরপর বলেন, একটা প্রতিযোগিতামূলক ব্যবস্থা থাকতে পারে। আমার জেলার বাজারদর সবচেয়ে ভালো। আমার জেরার শান্তিশৃঙ্খলা সবচেয়ে ভালো। আমার জেলায় কোনো চাঁদাবাজি নেই। খেলোয়াড়দের মধ্যে প্রতিযোগিতায় আমি ওপরে আছি। এমন চেষ্টায় যেন পিছিয়ে না পড়ি। র‌্যাংকিং থাকলে নিজেদের মধ্যে আনন্দ হয়। সবার মধ্যে প্রতিযোগিতার মনোভাব আসুক।
তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এটাই সুযোগ নিজেকে প্রকাশ করার, সৃজনশীলতা প্রকাশ করার। গৎবাঁধা কাজ থাকবে, তবে সৃজনশীলতাও থাকতে হবে।
জন্ম সনদ নিয়ে ভোগান্তি কমানোর নির্দেশ দিয়ে ড. ইউনূস বলেন, ‘যেকোনো সময় প্রতিটি নাগরিককে জন্ম সনদ প্রদানের সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। ডিসিদের উদ্ভাবনী শক্তি দিয়ে জন্ম সনদ প্রদানের ভোগান্তি কমাতে হবে। একইভাবে পাসপোর্ট প্রদানের ক্ষেত্রেও ভোগান্তি কমাতে আন্তরিক হতে হবে। পাসপোর্ট করতে হলে পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগবে না, এটা সবার নাগরিক অধিকার।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, কীভাবে কোন জেলায় শিক্ষার মান উন্নয়ন করা যায়, এ ব্যাপারে কাজ করতে হবে।

Side banner