Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

পীরগাছায় সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিক পরিবারকে হুমকি


দৈনিক পরিবার | মো. জমির উদ্দিন  নভেম্বর ১৬, ২০২৪, ১১:২১ পিএম পীরগাছায় সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিক পরিবারকে হুমকি

মাদকদ্রব্য ও ব্যবহৃত মোটর সাইকেলসহ পীরগাছা মহিলা কলেজের ইতিহাস বিষয়ের প্রভাষক শেখ ফরিদ কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে গ্রেফতার হওয়ার ছবিসহ বিভিন্ন পত্রিকা ও টেলিভিশনে নিউজ প্রকাশ করায় পীরগাছা রিপোর্টার্স ক্লাবের সভাপতি, রংপুর রিপোর্টার্স ক্লাবের সদস্য, গ্লোবাল টেলিভিশন ও প্রতিদিনের সংবাদের ব্যুরো প্রধান আব্দুর রহমান রাসেল এবং তার পরিবারকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শেখ ফরিদের বিরুদ্ধে। 
এই ঘটনায় ভুক্তভোগী এই সাংবাদিক পীরগাছা থানায় একটি অভিযোগ ও রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানায় একটি জিডি করেছেন। 
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ নভেম্বর শুক্রবার দুপুর ১২ টায় রংপুরের পীরগাছা উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের আদম-সবুজ পাড়া গ্রামে সাংবাদিক আব্দুর রহমান রাসেলের বসত বাড়িতে গিয়ে তার অসুস্থ মা ও বাবা, চাচার তাদের সামনে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করিলে তার মা গালিগালাজ এর কারণ জিজ্ঞাসা করিলে একই গ্রামের মৃত আবুল কাশেমের পুত্র পীরগাছা মহিলা কলেজের প্রভাষক শেখ ফরিদের মাদকদ্রব্যসহ আটককৃত ছবি প্রকাশ করেছে কেন, মর্মে বিভিন্ন হুমকি ধামকি প্রদান করে। 
এ ঘটনায় সাংবাদিকের বাবা মোহাম্মদ আলী বলেন, আমার ছেলে রংপুর শহরে সাংবাদিকতা করে। ফরিদের মাদকসহ পুলিশের হাতে ধরা পড়ার ছবি দিয়ে নিউজ করেছে এজন্য বাড়িতে এসে আমাকে হুমকি প্রদান করে চলে যায়। এবং আরোও বলে যে তোর ছেলে কীভাবে সাংবাদিকতা করা তা দেখে নিব। 
প্রশ্নের জবাব জানতে চাইলে, সে টাকার গরম দেখিয়ে রড ধারনের ক্ষতি করবে। কত সাংবাদিক কে মেরে ফেলেছে কিছুই হয়নি। তোর ছেলেকেও মেরে ফেলবো আমার কিছুই হবে না। প্রশাসনের কাছে বিচার চাই। 
মাদক ব্যবসায়ী শেখ ফরিদের সাথে গণমাধ্যম কর্মীদের কথা হলে তিনি বলেন, মাদকসহ ধরা পড়ার ছবি বিভিন্ন পত্রিকা ও টেলিভিশনে প্রকাশ করা হয়েছে এর জবাব চাই। মাদকসহ আটকৃত ছবি কেন প্রকাশ করবে এজন্য তার জবাব দিতে হবে। তা নাহলে ওর যা করার আমি করব। 
এ বিষয়ে পীরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি একজন গণমাধ্যম কর্মীর বাড়িতে গিয়ে তার অসুস্থ মা-বাবার সাথে কেন এমন আচরণ করেছে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। 
এ বিষয়ে পীরগাছা মহিলা কলেজের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল হক সুমন এর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, শেখ ফরিদ মাদকদ্রব্য ও ব্যবহৃত মোটরসাইকেলসহ গ্রেফতার হওয়ায় সাময়িকভাবে বরখাস্ত হয়। সাংবাদিকের পরিবারকে হুমকি দিয়েছে অভিযোগ পেয়েছি। একজন গণমাধ্যমকর্মীর পরিবারকে হুমকি দিতে পারে না। নতুন বাংলাদেশে স্বাধীনভাবে সাংবাদিকতা করবে এটাই স্বাভাবিক। মাদকসহ আটককৃত ছবি নিয়ে নিউজ করবে এতে দোষের কিছু নয়। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখার জন্য পীরগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ কে নির্দেশ দিয়েছি। 
এ ঘটনায়, পীরগাছা রিপোর্টার্স ক্লাবের সভাপতি, রংপুর রিপোর্টার্স ক্লাবের সদস্য, গ্লোবাল টেলিভিশন ও প্রতিদিনের সংবাদের ব্যুরো প্রধান আব্দুর রহমান রাসেলের সাথে কথা হলে তিনি জানান, শেখ ফরিদ দীর্ঘদিন থেকে বিভিন্ন ভাবে সন্ত্রাসীবাহিনী দ্বারা পরিকল্পিতভাবে পরিবারের ক্ষতি করার চেষ্টা করছে। স্বাধীন বাংলাদেশে অপরাধীদের তথ্য তুলে ধরতে ও নিরপেক্ষ সাংবাদিকতা করতে দিবে না। মিথ্যা মামলায় ফেলাইয়া জেল হাজতে পাঠাবে মর্মে হুমকি ধামকি ও ভয়ভীতি প্রদান করে চলে যায়। এর আগে গত ৩১ শে অক্টোবর বিকালে একই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মুঠোফোনে বিভিন্নভাবে আমাকে হুমকি দেয় এই মাদক সম্রাট শেখ ফরিদ। প্রশাসনের কাছে দাবি গণমাধ্যম কর্মীদের বাড়িতে গিয়ে এইভাবে অতর্কিতভাবে হামলার চেষ্টা করে। অন্তরর্বতীকালীন সরকারের কাছে আমি এর বিচার চাই। সেই মাদকসম্রাট শেখ ফরিদ পাঁচ মাস জেলহাজত খাটার পর জামিনে বেরিয়েছে আবারো রমরমা মাদক ব্যবসা করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছা। খুব অল্প সময়ে এজেন্ট ব্যাংকের মালিক, গাড়ি-বাড়ি ও অঢেল সম্পদের মালিক। কলেজের চাকরির অন্তর আড়ালে রমরমা মাদক ব্যবসা করে। প্রভাষক হিসেবে চাকরিরত অবস্থায় কুড়িগ্রামের ফুলবাড়িতে ১৮ বোতল ফেন্সিডিল নিয়ে ব্যবহৃত গাড়িসহ গ্রেফতার হওয়ার পরে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে ওই প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ। কে এই মাদকসম্রাট শেখ ফরিদ। খুঁটির জোর কোথায় তা খতিয়ে দেখতে চোখ রাখুন আগামী পড়বে। 
উল্লেখ্য যে, গত (৫ সেপ্টেম্বর) ২০১৯ সালে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ি উপজেলার বোর্ডেরহাট এলাকা থেকে ১৮ বোতল ফেনসিডিলসহ রংপুর জেলার পীরগাছা উপজেলার আদম সবুজ পাড়া গ্রামের মৃত আবুল কাশেমের ছেলে শেখ ফরিদ (৪৫) কে আটক করে  ফুলবাড়ি থানা পুলিশ। ফেন্সিডিল ব্যবসায়ী শেখ ফরিদ এর বিরুদ্ধে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়।

Side banner