আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সাংবাদিকদের অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডের জন্য নতুন নীতিমালা প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেসসচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) রাজধানীর হেয়ার রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান তিনি।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, এই নীতিমালার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা অনুযায়ী মুক্ত সাংবাদিকতার জন্য যা যা করার দরকার কমিটি তা সুপারিশ করবে। কমিটির সুপারিশের পর তথ্য মন্ত্রণালয় ও সাংবাদিক প্রতিনিধিসহ সর্বোচ্চ বডি সেই নীতিমালা চূড়ান্ত করবে।
তিনি বলেন, সর্বশেষ ২০২২ সালের অ্যাক্রিডিটেশন নীতিমালার বেশ কিছু ধারায় আপত্তিকর শব্দ ও বিধান রয়েছে। সেগুলো বাতিল করার সুপারিশ করা হবে। এসবের মধ্যে একটি ছিল সরকারের উন্নয়ন প্রচার করতে হবে। এটা স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থী। এটা বাদ দেওয়ার সুপারিশ করা হবে।
তিনি আরো বলেন, সর্বশেষ নীতিমালায় বলা ছিল সাংবাদিকরা বিদেশ গেলে সরকারের কিছু সংস্থাকে জানিয়ে যেতে হবে। এটা চরম অবমাননাকর। সেটা বাতিল করার সুপারিশ থাকবে।
আজাদ মজুমদার বলেন, সার্কুলেশন অনুযায়ী কার্ড দেওয়ার যে বিধান রয়েছে সেটি বাতিল করে পত্রিকায় সাংবাদিকদের সংখ্যা অনুযায়ী ৩০ শতাংশ বা সর্বোচ্চ ১৫ জনকে কার্ড প্রদান করা হবে।
ফ্রিল্যান্স সাংবাদিকের ক্ষেত্রে নতুন নীতিমালায় সুপারিশ করা হয়েছে। একজন সাংবাদিক কমপক্ষে ২০ বছর সাংবাদিকতায় যুক্ত থাকতে হবে অথবা সাংবাদিকতার অধিকার নিয়ে কাজ করেন এমন ব্যক্তিরা ফ্রিল্যান্সার কার্ড পাবেন।
আগে কার্ড ইস্যু করতো প্রধান তথ্য কর্মকর্তা। এবার সাংবাদিকসহ বিভিন্ন সংগঠন নিয়ে যে কমিটি হবে তারাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে কোনো সাংবাদিক কার্ড না পেলে তিনি আপিল করতে পারবেন।
আপিল বোর্ডে জাতীয় পর্যায়ে পত্রিকার সম্পাদক, বিচারপতিসহ বিভিন্ন সেক্টরের লোকজন থাকবেন। জেলা পর্যায়ে সাংবাদিকদের ক্ষেত্রে জেলা থেকেই তাদেরকে কার্ড দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হবে।
আগের নীতিমালায় স্থায়ী ও অস্থায়ী দুই ধরনের কার্ড ইস্যু করা হয়েছে। এবার একটি কার্ড দেওয়া হবে। সেটির মেয়াদ হবে তিন বছর।
আগে ফৌজদারি মামলা হলেই প্রধান তথ্য কর্মকর্তা অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিল করতে পারতেন। এখন কারও বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হলেই তার কার্ড বাতিল হবে না, যতক্ষণ না তার বিরুদ্ধে মামলার রায় না হবে। তবে তার বিরুদ্ধে চূড়ান্ত চার্জশিট হলে কমিটি তার কার্ড স্থগিত করবে।
আজাদ মজুমদার জানান, ১৬৭ জন সাংবাদিকের কার্ড বাতিল করা হয়েছে। তাদের মধ্যে মাত্র সাতজন কার্ড পুনঃবিবেচনার জন্য আবেদন করেছেন।
মিডিয়া ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম, সিনিয়র সহকারী প্রেসসচিব ফয়েজ আহম্মদ উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন :