নওগাঁ শহরে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো স্থানীয় লেখকদের পথ বইমেলা। শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা থেকে নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড়ে জেলা পরিষদের পার্কের গেটে দিনব্যাপী এই বইমেলা শুরু হয়।
এ বছর নওগাঁ সাহিত্য পরিষদের ৭ম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত বইমেলায় নওগাঁ জেলার ৫০ জন লেখক অংশ নেন। তাদের লেখা মোট ৩০০টিরও বেশি বই মেলায় প্রদর্শিত হয়, যার মধ্যে কবিতা, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ এবং শিশুদের বইও ছিল। বইগুলোর মূল্য ছিল ১০০ টাকা থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে।
মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা কালচারাল অফিসার তাইফুর রহমান। সভাপতিত্ব করেন দেশের খ্যাতিমান কথাসাহিত্যিক বরেন্দ্র ফরিদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন নওগাঁ সাহিত্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল নয়ন। এ সময় নওগাঁর বিভিন্ন বিশিষ্ট সাহিত্যিক, শিক্ষক, সাংবাদিক, কবি এবং সমাজসেবকরা উপস্থিত ছিলেন। বক্তারা মেলার গুরুত্ব তুলে ধরে নওগাঁর সাহিত্য ও সংস্কৃতির বিকাশে এ ধরনের উদ্যোগের ভূমিকা আলোচনা করেন।
মেলায় অংশগ্রহণকারী লেখকরা জানান, এই আয়োজনের উদ্দেশ্য নতুন প্রজন্মের মধ্যে সাহিত্য পাঠের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করা এবং মোবাইল ও সামাজিক মিডিয়া থেকে একটু হলেও তাদের দূরে রাখার চেষ্টা করা। বইমেলা তাদের কাজের মাধ্যমে নওগাঁর ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং সম্ভাবনাকে তুলে ধরার একটি বড় মঞ্চ হিসেবে কাজ করেছে।
বইমেলার অন্যতম আকর্ষণ ছিল যে, এই মেলায় শুধুমাত্র নওগাঁর লেখকদের বই বিক্রি ও প্রদর্শন করা হয়েছিল, যা সাধারণত অন্যান্য বই মেলা থেকে একেবারেই আলাদা। অনেকেই মেলায় এসে নওগাঁর ইতিহাস ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে আগ্রহী ছিলেন। কিছু বইতে বিশেষভাবে উঠে এসেছে নওগাঁর সম্ভাবনা এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য।
মেলার আয়োজকদের মতে, তাদের উদ্দেশ্য ছিল নওগাঁর সাহিত্যকে দেশব্যাপী পরিচিতি দেওয়া এবং শহরের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সাহিত্যিক আগ্রহ জাগানো। বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বইমেলার পরিবেশ ছিল মুখরিত, এবং দর্শনার্থীদের আগমন বাড়তে থাকে। স্থানীয় মানুষদের মধ্যে লেখকদের কাজ সম্পর্কে জানার আগ্রহও ছিল চোখে পড়ার মতো।
মেলার আয়োজন ছিল একটি মিলনমেলার মতো, যেখানে বগুড়া, জয়পুরহাটসহ পার্শ্ববর্তী জেলার লেখকরা এসে যোগ দেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে মেলা এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গির জন্ম দেয়, যা নওগাঁবাসী অনেক দিন স্মরণ রাখবে।
আপনার মতামত লিখুন :