Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সাহিত্যিক কাজী ইমদাদুল হকের ১৪৩ তম জন্মদিন


দৈনিক পরিবার | ইমদাদুল হক নভেম্বর ৩, ২০২৪, ০২:২৬ পিএম সাহিত্যিক কাজী ইমদাদুল হকের ১৪৩ তম জন্মদিন

৪ নভেম্বর সুসাহিত্যিক কাজী ইমদাদুল হকের ১৪৩তম জন্ম বার্ষিকী। এ উপলক্ষে সাহিত্যিক ইমদাদুল হকের জন্মস্থান পাইকগাছায় বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। কাজী ইমদাদুল হক স্মৃতি পরিষদের উদ্যোগে সোমবার সকালে উপজেলার নতুন বাজার চত্ত্বরে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে সাহিত্যিকের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পন, আলোচনা সভাও পুরুষ্কার বিতরন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
বিশ শতকের সূচনালগ্নে যন্ত্রণাজর্জর এই যুগ-প্রতিবেশে বাংলা সাহিত্য-ক্ষেত্রে মুক্তচিত্ত-দ্রোহী এক আধুনিক শিল্পী রুপে আবির্ভূত হন কাজী ইমদাদুল হক। তিনি ছিলেন সংস্কারমুক্ত, উদার মানবতাবাদী, মননশীল এবং যুক্তিবাদী শিল্পদৃষ্টিসম্পন্ন ঔপন্যাসিক। কুসংস্কারাচ্ছন্ন প্রথালালিত সামন্ত-মূল্যবোধে স্নিগ্ধ মুসলিম সমাজ-অঙ্গনে বাসন্তি হাওয়ার প্রত্যাশায় ইমদাদুল হক সাহিত্যক্ষেত্রে দ্রোহীসত্তা নিয়ে আবির্ভূত হয়েছিলেন। তবু তিনি বিদ্রোহী নন, সমাজ ভাঙার ডাক নেই তার কর্মে-বরং মুসলিম সমাজের বিবিধ খণ্ডচিত্র আর গ্লানির অঙ্গন উপস্থাপন করেই তিনি তৃপ্ত থেকেছেন। মুসলমান সমাজের ক্ষয়িষ্ণু আর্দশ ও রীতিনীতির বিপরীতে স্বাধীনচেতা ও প্রগতিশীল শিক্ষিত মনের নব্যসমাজ প্রতিষ্ঠার বাসনাই তাঁর উপন্যাসে ঔপন্যাসিক প্রাঞ্জল ভাষায় ব্যক্ত করার প্রয়াস পেয়েছেন। চুয়াল্লিশ বছরের কর্মচঞ্চল জীবনে ইমদাদুল হকের প্রধান কীর্তি আবদুল্লাহ্ (১৯৩৩) উপন্যাস। একটিমাত্র উপন্যাস লিখে ইমদাদুল হক বাংলা সাহিত্যে রেখে গেছেন তার স্বতন্ত্র প্রতিভার স্বাক্ষর।
কাজী ইমদাদুল হক ১৮৮২ সালে খুলনার পাইকগাছা উপজেলার গদাইপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা কাজী আতাউল হক আসামের জরিপ বিভাগে চাকরি করতে করতেন এবং পরবর্তীতে খুলনার ফৌজদারি আদালতের মোক্তার নিযুক্ত হন।
১৯০৪ সালে খুলনা শহরে মৌলভী আব্দুল মকসুদ সাহেবের জ্যেষ্ঠ কন্যা সামসন্নেসা খাতুনকে বিয়ে করেন। কাজী ইমদাদুল হকের চার পুত্র ও ২ কন্যা কাজী আনারুল হক, কাজী সামছুল হক, কাজী আলাউল হক, কাজী নুরুল হক এবং কন্যা জেবুন্নেছা ও লতিফুন্নেছা।
১৯০০ সালে কাজী ইমদাদুল হক কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে বিএ সম্পন্ন করেন। ১৯১৪ সালে তিনি বিটি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯০৪ সালে কাজী ইমদাদুল হক কলকাতা মাদ্রাসায় শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। এর দুই বছর পর ১৯০৬ সালে আসামের শিলং বিভাগে শিক্ষাবিভাগের উচ্চমান সহকারী হিসেবে যোগ দেন। ১৯০৭ সালে তিনি ঢাকা মাদ্রাসার শিক্ষক হন। ১৯১১ সালে তিনি ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজে ভূগোলের অধ্যাপক হন। এরপর ১৯১৪ সালে ঢাকা বিভাগে মুসলিম শিক্ষা সহকারী স্কুল পরিদর্শক হিসেবে যোগ দেন। ১৯১৭ সালে তাকে কলকাতা ট্রেনিং স্কুলের প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। ১৯২১ সালে তিনি সদ্য প্রতিষ্ঠিত ঢাকা বোর্ডের সুপারিন্টেনডেন্ট হন। আমৃত্যু তিনি এই পদে বহাল ছিলেন।
শিক্ষা বিভাগে বিভিন্ন কাজে অসামান্য দক্ষতা, গভীর দায়িত্ববোধ ও উদ্ভাবনী শক্তির স্বীকৃতিস্বরূপ তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার তাকে ১৯১৯ সালে খান সাহেব উপাধিতে ভূষিত করেন ও ১৯২৬ সালে তাকে খান বাহাদুর উপাধিতে ভূষিত করে। খ্যাতিমান সাহিত্যিক কাজী ইমদাদুল হক ১৯২৬ সালের ২০ মার্চ কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।

Side banner