শীতের সময় মানুষের সর্দি-কাশি, টনসিলাইটিস, নিউমোনিয়াসহ শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন রোগ, অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্ট, আর্থ্রাইটিস বা বাতব্যথা, হার্টের সমস্যার প্রকোপ বেড়ে যায়। বিশেষ করে শিশুদের অ্যাজমা, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, ব্রংকিওলাইটিসসহ নানা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। সেই সাথে শীতে শিশু থেকে বৃদ্ধ সবার জন্য বেড়ে যায় সর্দি, কাশি, হাঁচির মতো নানা রোগের প্রকোপ। শ্বাসকষ্ট, অ্যালার্জিজনিত রোগের মাত্রাও বাড়ে। এ সময় শরীরে রোগব্যাধি বাসা বাঁধার আগেই সতর্ক হওয়া জরুরি।
বিশেষ করে বয়স্ক ও শিশুদের প্রচন্ড শীত মোকাবিলায় নিম্নলিখিত প্রয়োজনীয় সাবধানতা অবলম্বন করার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়েছেন:
১. ঠাণ্ডা খাবার ও পানীয় পরিহার করা আবশ্যক। কুসুম কুসুম গরম পানি পান করা ভালো, হালকা গরম পানি দিয়ে গড়গড়া করা উচিত।
২. প্রয়োজনমতো গরম কাপড় পরা, তীব্র শীতের সময় কানঢাকা টুপি পরা এবং গলায় মাফলার ব্যবহার করতে হবে। গরম কাপড় দিয়ে শিশুদের মাথা ঢেকে রাখলে শরীরের সঠিক তাপমাত্রা বজায় থাকবে।
৩. হাত ধোয়ার অভ্যাস করা, বিশেষ করে চোখ বা নাক মোছার পরপর হাত ধোয়া প্রয়োজন।
৪. সম্ভব হলে ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের ঘর থেকে বাইরে বের না করাই উত্তম।
৫. শিশু ও বয়স্কদের সব সময় হাত ও পায়ের মোজা পরিধান করা বাঞ্ছনীয়। প্রয়োজনে গরম পানি ব্যবহার করা জরুরি।
৬. শীতবস্ত্র, লেপ-তোশক নিয়মিত রোদে দিতে হবে। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে অবশ্যই শিশুকে পর্যাপ্ত পরিমাণে স্যালাইন খাওয়াতে হবে।
৭. সহনীয় গরম পানিতে শিশুকে গোসল করানো উত্তম।
৮. সুস্থ শিশুকে সর্দি-কাশি, ব্রংকিওলাইটিস, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুর কাছে যেতে দেয়া যাবে না।
৯. সুষম ও পুষ্টিকর খাবার ভিটামিন ‘এ’ ও ‘ডি’ গ্রহণ করতে হবে।
১০. শীতের শুষ্কতায় অনেকের ত্বক আরও শুষ্ক হয়, ত্বক ফেটে যায় এবং চর্মরোগ দেখা দেয়। হাত ও পায়ের তালু এবং ঠোঁটে পেট্রোলিয়াম জেলি লাগাতে হবে। ত্বকের সুরক্ষায় ময়েশ্চারাইজার যেমন: ভ্যাসলিন, গ্লিসারিন, অলিভ অয়েল ও সরিষার তেল ব্যবহার করা আবশ্যক।
১১. আগুন পোহাতে সতকর্তা অবলম্বন করতে হবে।
১২. যেখানে-সেখানে কফ, থুথু বা নাকের শ্লেষ্মা ফেলা যাবে না।
১৩. হাঁপানির রোগীরা শীত শুরুর আগেই চিকিৎসকের পরামর্শমতো প্রতিরোধমূলক ইনহেলার বা অন্যান্য ওষুধ ব্যবহার করতে পারেন।
১৪. যাদের অনেক দিনের শ্বাসজনিত কষ্ট আছে, তাদের ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং নিউমোক্কাস নিউমোনিয়ার টিকা নেয়া উচিত। অ্যাজমা প্রতিরোধে অবশ্যই ধুলোবালি থেকে দূরে রাখতে হবে।
১৫. শৈত্যপ্রবাহ সামাল দিতে সবসময় গরম কাপড় পরা এবং শীতল বাতাস এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা।
আপনার মতামত লিখুন :