দায়িত্ব গ্রহণের আগেই ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের উদ্বেগকে পাত্তা না দিয়ে আক্রমণাত্মক পররাষ্ট্র নীতির ছক কাটতে শুরু করেছেন। গ্রীণল্যান্ড পেতে ‘সামরিক শক্তি ব্যবহার’ করতে পারেন ট্রাম্প! এমন কথা শুনা যাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গ্রীণল্যান্ড অধিগ্রহণ করতে ‘সামরিক’ বা ‘অর্থনৈতিক বল’ প্রয়োগের সম্ভাবনা নাকচ করেননি। ৫ নভেম্বরের নির্বাচনে জয় পাওয়ার পর থেকে ট্রাম্প একটি বৃহত্তর সম্প্রসারণবাদী লক্ষ্য প্রচার করা শুরু করেছেন। গ্রীণল্যান্ডের অধিগ্রহণের আকাঙ্খা এই প্রচারের অংশ।
মঙ্গলবার ফ্লোরিডায় ট্রাম্পের মার-এ-লাগো এস্টেটে এক বিস্তৃত সংবাদ সম্মেলনে তাকে জিজ্ঞেস করা হয়, তিনি ডেনমার্কের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল গ্রীণল্যান্ড ও পানামার পানামা খাল অধিগ্রহণ করতে সামরিক বা অর্থনৈতিক শক্তি ব্যবহারের সম্ভাবনা বাতিল করে বিশ্বকে আশ্বস্ত করতে চান কি না।
উত্তরে তিনি বলেন, না, আমি আপনাকে এই দু’টির একটির ক্ষেত্রেও আশ্বস্ত করতে পারি না। কিন্তু আমি এটি বলতে পারি, অর্থনৈতিক নিরাপত্তার জন্য এগুলো আমাদের দরকার।
ডেনমার্ক এবং পানামা, উভয়েই তাদের কোন ভূখণ্ড ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।
২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিতে যাওয়া ট্রাম্প প্রতিবেশী দেশ কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য বানানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট নেটোর মিত্র দেশগুলোর কাছ থেকে অনেক বেশি প্রতিরক্ষা ব্যয় দাবি করবেন বলে জানিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি মেক্সিকো উপসাগরের নাম পাল্টে আমেরিকা উপসাগর করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
দায়িত্ব গ্রহণের এখনও দুই সপ্তাহ বাকি, তার আগেই ট্রাম্প কূটনৈতিক বিষয়গুলোকে তেমন বিবেচনায় না এনে বা যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের উদ্বেগকে পাত্তা না দিয়ে আক্রমণাত্মক পররাষ্ট্র নীতির ছক কাটতে শুরু করেছেন।
ট্রাম্প কানাডার প্রতিরক্ষা ও দেশটির পণ্য আমদানিতে শত শত কোটি ডলার ব্যয় করার সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, কানাডাকে রাশিয়া এবং চীনের কাছ থেকে রক্ষা করতে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রচুর ব্যয় করতে হচ্ছে, তার চেয়ে তাদের উচিত ‘আমাদের একটি অঙ্গরাজ্য’ হয়ে যাওয়া। তিনি দুই দেশের সীমান্তকে ‘কৃত্রিমভাবে টানা একটি রেখা’ বলে মন্তব্য করেন।
কিন্তু কানাডার বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, দুই দেশ একীভূত হয়ে যাওয়া ন্যূনতম কোন সম্ভাবনা নেই।
ট্রাম্প জানান, ডেনমার্ক যদি তার গ্রীণল্যান্ড কেনার প্রস্তাবে বাধা দেয় তাহলে তিনি দেশটির পণ্যের ওপর খুবই চড়া শুল্ক আরোপ করবেন। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে গ্রীণল্যান্ডের মালিকানা নেওয়া জরুরি বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ট্রাম্পের এসব মন্তব্যের কিছুক্ষণ আগে তার ছেলে ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র ব্যক্তিগত এক সফরে গ্রীণল্যান্ডে উপস্থিত হন।
ডেনমার্ক জানিয়েছে, তাদের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল গ্রীণল্যান্ড বিক্রি হবে না।
আপনার মতামত লিখুন :