পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের কুররাম জেলায় শিয়া-সুন্নি জনগোষ্ঠীর মধ্যে টানা ১১ দিনের সংঘাতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১২৪ হয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও ১৭৮ জন। রবিবার (১ ডিসেম্বর) পাকিস্তানি গণমাধ্যম জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য দেওয়া হয়েছে।
জিও নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২১ নভেম্বর দুটি গাড়িবহরে বন্দুক হামলার জেরে নতুন করে এই অঞ্চলে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনার পর শিয়া-সুন্নিদের বেশ কয়েকটি গোত্রের মধ্যে সহিংসতার মাত্রা ছাড়িয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ। এতে মূল মহাসড়ক বন্ধ থাকায় স্থানীয় পরিবহন সংকটের পাশাপাশি আফগানিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্যও পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।
এদিকে, চলমান পরিস্থিতির উন্নয়নে দেশটির খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আলি আমিন গান্দাপুর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সংঘাতে জড়িতদের কাছ থেকে সব ধরনের অস্ত্র জব্দ ও সশস্ত্র অবস্থানগুলো নির্মূল করার অভিযান চালুর নির্দেশ দিয়েছেন। নিকটবর্তী কোহাত জেলায় স্থানীয় শিয়া-সুন্নি গোষ্ঠীর নেতাদের উপস্থিতিতে আয়োজিত সালিশে (জিরগা নামে পরিচিত) তিনি এসব নির্দেশনা দেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, রোববার জিরগায় অংশগ্রহণকারীদের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আলি আমিন গান্দাপুর নিশ্চয়তা দেন, প্রাদেশিক সরকার যেকোনো উপায়ে এ অঞ্চলে শান্তি ও আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে অঙ্গীকারবদ্ধ। কুররাম জেলে থেকে সহিংসতার জেরে যারা বাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন, তাদের পুনর্বাসনের জন্য শিগগিরই উদ্যোগ নিতে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
মুখ্যমন্ত্রী আলি আমিন গান্দাপুর বলেন, সাধারণ মানুষের জীবন ও সম্পদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া সবচেয়ে জরুরি বিষয়। সংঘাতে লিপ্ত গোষ্ঠীদের কাছ থেকে সব বৈধ-অবৈধ অস্ত্র শিগগিরই জব্দ করা হবে। শান্তি প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত এসব অস্ত্র প্রশাসনের হেফাজতে থাকবে। যারা সামাজিকমাধ্যমে ঘৃণা ছড়াচ্ছেন, তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের ও গ্রেপ্তারের আহ্বানও জানান তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী আলি আমিন গান্দাপুর উপস্থিত নেতাদের শিগগিরই নতুন করে কার্যকর সংঘর্ষ-বিরতির ঘোষণা দিতে এবং আগের সব শান্তি চুক্তির প্রতি সম্মান জানাতে আহ্বান জানিয়ে বলেন, নাগরিকদের সহযোগিতা ছাড়া শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।
আপনার মতামত লিখুন :