Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তারের প্রতিশ্রুতি ইউরোপের ৭ দেশ


দৈনিক পরিবার | আন্তর্জাতিক ডেস্ক নভেম্বর ২৩, ২০২৪, ০৯:৪৭ পিএম নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তারের প্রতিশ্রুতি ইউরোপের ৭ দেশ

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর থেকেই বেশ বিপাকে পড়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ঘনিষ্ঠতম মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আইসিসির এ রায়ের তীব্র নিন্দা জানালেও নেতানিয়াহুর ওপর থেকে তাদের হাত গুটিয়ে নিচ্ছেন অন্য পশ্চিমা মিত্ররা। মাত্রই দিন তিনেক আগে জারি করা আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আমলে নিয়ে এরই মধ্যে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীকে গ্রেপ্তারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে নেদারল্যান্ডস, সুইজারল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, ইতালি, সুইডেন, বেলজিয়াম ও নরওয়ের সরকার।
স্পষ্টভাবে প্রতিশ্রুতি না দিলেও ইউরোপের এ সাতটি দেশের বাইরে নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তারের ইঙ্গিত দিয়েছে ইসরায়েলের আরেক ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাজ্যও।
এর আগে, নেদারল্যান্ডসের হেগে চলতি বছরের মে মাসে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্তের নেতানিয়াহু, গ্যালান্ত ও গাজা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সামরিক শাখার প্রধান মোহাম্মদ দেইফ, হামাসের তৎকালীন প্রধান ইসমাইল হানিয়া ও ইয়াহিয়া সিনওয়ারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন আইসিসির প্রধান কৌঁসুলি করিম খান।
করিম খানের আবেদনে সাড়া দিয়ে গত বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) নেতানিয়াহু, গ্যালান্ত ও মোহাম্মদ দেইফের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত। হানিয়া ও সিনওয়ার এরই মধ্যে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হওয়ায় তালিকা থেকে তাদেরকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার এ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর ইতালির প্রতিরক্ষামন্ত্রী গুইদো ক্রসেত্তো এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, আমি মনে করি, নেতানিয়াহু ও গ্যালান্তের সঙ্গে হামাসের সামরিক শাখার প্রধানকে এক কাতারে বিচার করা আইসিসির একটি ভুল। তবে এই পরোয়ানা প্রত্যাহার কিংবা অকার্যকর হওয়ার আগে নেতানিয়াহু কিংবা গ্যালান্ত যদি ইতালি সফরে আসেন, তাহলে বাধ্য হয়েই তাদেরকে গ্রেপ্তার করতে হবে আমাদের।
তিনি বলেন, এটা কোনো রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নয়। ইতালি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গঠন সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরকারী একটি দেশ। তাই আইসিসির যেকোনো পদক্ষেপ, যে কোনো সিদ্ধান্ত আমরা মেনে নিতে বাধ্য।
নেদারল্যান্ডসের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাসপার ভেল্ডক্যাম্প শুক্রবার (২২ নভেম্বর) দেশটির পার্লামেন্টে দেওয়া এক বক্তব্যে বলেছেন, সরকার আইসিসির নির্দেশ মেনে চলা ও যাদের ওপর পরোয়ানা জারি হয়েছে, তাদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ নয়- এমন যাবতীয় যোগাযোগ বন্ধ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ক্রিস্তোফি লেমোনি আইসিসির এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানাকে ‘জটিল আইনি ইস্যু’ বলে মন্তব্য করেছেন। তবে, নেতানিয়াহু ফ্রান্স সফরে এলে তাকে গ্রেফতার করা হবে কি না, সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি তিনি।
অস্ট্রিয়াও আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানার প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেছে। তবে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলেক্সজান্ডার শ্যালেনবার্গ বলেন, পরোয়ানাটি তার কাছে পুরোপুরি বোধগম্য নয়।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টেরমারের মুখপাত্র এ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলার জন্য যুক্তরাজ্যের যে বাধ্যবাধকতা রয়েছে, তা সবসময় মেনে চলা হবে।
নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তার করার সিদ্ধান্ত অকপটে জানিয়েছেন আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সিমন হ্যারিস। তিনি বলেছেন, নেতানিয়াহু যদি আয়ারল্যান্ডে পা দেন, তাহলে তাকে অবশ্যই গ্রেপ্তার করা হবে। আমরা আন্তর্জাতিক আদালতকে সমর্থন করি এবং তাদের পরোয়ানা প্রয়োগ করি।
নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার জারির ব্যাপারে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠতম মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আইসিসির এ রায়কে ‘জঘন্য’ হিসেবে অভিহিত করেছেন তিনি। এর প্রতিক্রিয়ায় আয়ারল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিখায়েল মার্টিন বলেছেন, আমি প্রেসিডেন্ট বাইডেনের বক্তব্যের বিরোধিতা করছি। কারণ, গাজায় যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হয়েছে। এটি গাজাবাসীর ওপর সমষ্টিগত শাস্তি, এটি গণহত্যা।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সুর মিলিয়ে নেতানিয়াহুর পক্ষে নিজেদের সমর্থন প্রকাশ করেছে হাঙ্গেরি। আইসিসির এই পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়ে দেশটির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান বলেছেন, আমি শিগগিরই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীকে হাঙ্গেরি সফরের জন্য আমন্ত্রণ জানাবো।

Side banner