এবার গাজার যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনিদের অস্থায়ীভাবে আশ্রয় দেওয়ার কথা জানিয়েছেন ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো। এক বিবৃতিতে তিনি জানান, ইন্দোনেশিয়ায় প্রথম পর্যায়ে গাজার প্রায় ১,০০০ ফিলিস্তিনিকে আশ্রয় দেওয়া হতে পারে।
এদিকে, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গাজায় ইসরাইলের অবরোধকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তিনি বলেছেন, এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা এই অবরোধের কারণে গাজার পরিস্থিতি অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। এসময়, গুতেরেস আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি অবহেলা করার জন্য ইসরাইলের সমালোচনা করেছেন।
৮ এপ্রিল তার বক্তব্যে তিনি জেনেভা কনভেনশনের ৫৫, ৫৬ ও ৫৯ অনুচ্ছেদগুলোর উল্লেখ করেন, যেখানে বলা হয়েছে, দখলদার রাষ্ট্রগুলোর দায়িত্ব হচ্ছে তাদের অধীনে থাকা জনগণের খাদ্য ও চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা।
এদিকে, গাজাবাসীকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জোরপূর্বক উৎখাত করার সিদ্ধান্তেরও তিনি স্পষ্ট বিরোধিতা করেন বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তার মতে, এটি আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এর সঠিক সমাধান হল গাজাবাসীদের তাদের নিজস্ব ভূমিতে থাকতে দেওয়া ও ইসরাইলিদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে একসাথে বসবাস করার সুযোগ প্রদান করা।
তবে, কে শোনে কার কথা? গাজার মানুষের উপর নৃশংস গণহত্যা চালিয়ে হয়তো তাদের জাতিগতভাবে নির্মূল করে দিবে ইসরাইল অথবা তাদের অন্য কোথাও গিয়ে বসবাসে বাধ্য করবে তারা। আর এই বিষয়টিতে ইসরাইলকে সম্পূর্ণ শেল্টার প্রদান করে যাচ্ছে আমেরিকা।
এদিকে, ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো জানিয়েছেন, তার সরকার গাজায় যুদ্ধের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ফিলিস্তিনিদের সাময়িক আশ্রয় দেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। তিনি জানান, তিনি তার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ফিলিস্তিনি প্রতিনিধি ও অন্যান্য পক্ষগুলোর সঙ্গে দ্রুত আলোচনা শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে আহত ফিলিস্তিনিদের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ ইন্দোনেশিয়ায় আশ্রয় দেওয়ার ব্যবস্থা করা যায়।
এসময় সুবিয়ান্তো বলেন, আহতরা ইন্দোনেশিয়ায় সাময়িকভাবে থাকতে পারবেন যতক্ষণ না তারা পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠেন ও গাজার পরিস্থিতি তাদের ফিরে যাওয়ার জন্য নিরাপদ হয়ে ওঠে। তিনি আরও বলেন, ফিলিস্তিনিদের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতার প্রতি ইন্দোনেশিয়ার দৃঢ় প্রতিশ্রুতি তার সরকারকে আরও তৎপর হয়ে কাজ করতে অনুপ্রাণিত করেছে। তবে, কি আদৌ কোনদিন নিজ ভূখণ্ডে ফিরতে পারবেন ফিলিস্তিনিরা?
এর আগে যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজার ফিলিস্তিনিদের স্থায়ীভাবে স্থানান্তরের পরিকল্পনাকে দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছিল ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ইন্দোনেশিয়া দীর্ঘকাল ধরে ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাতের সমাধানে দুই রাষ্ট্রের ভিত্তিতে শান্তি প্রতিষ্ঠার পক্ষে মত প্রকাশ করে আসছে। এর পাশাপাশি, তারা গাজায় মানবিক সাহায্যও প্রদান করেছে।
আপনার মতামত লিখুন :