Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা শনিবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫, ৫ মাঘ ১৪৩১

শীতে ওজন বৃদ্ধি এড়ানোর কার্যকরী সমাধান


দৈনিক পরিবার | স্বাস্থ্য ডেস্ক জানুয়ারি ১৭, ২০২৫, ০৪:৪৪ পিএম শীতে ওজন বৃদ্ধি এড়ানোর কার্যকরী সমাধান

দেহের অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি কারও কাম্য নয়। ওজন নিয়ন্ত্রণ কষ্টসাধ্য হলেও তা অসম্ভব নয়। শীতের সময় অল্প পরিশ্রমেই পাওয়া তাপ আরও বেশি কায়িক শ্রমের খোরাক জোগায়। চলুন জেনে নেওয়া যাক যেসব কৌশলগুলো অবলম্বন করলে ওজন বৃদ্ধি এড়ানোর কাজটা সহজ হয়ে আসবে।
ঘরের ভিতরে কর্মচঞ্চল রাখা:
শীতে ঘরের ভেতরে থাকার মুহুর্তগুলো দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের নড়াচড়া অব্যাহত রাখার দিকে মনযোগ দিতে হবে। বর্তমানে অনলাইন থেকেই ওয়ার্কআউট ভিডিওগুলোর মাধ্যমে হোম জিম সেট-আপ করা যায়। খুব বেশি আয়োজনের দিকে যেতে না চাইলে যোগব্যায়ামের মতো ব্যায়ামগুলো যথেষ্ট উপযোগী। ঘরে থাকার মুহুর্তগুলোতে শরীরের পেশী সচল রাখার জন্য ব্যায়ামই একমাত্র উপায় নয়। আরও একটি কার্যকর পদক্ষেপ হচ্ছে ঘর গোছানো। এটির উপযুক্ত সময় হতে পারে এই শীতকাল।
বাইরে শরীর চর্চা:
খোলা পরিবেশে শরীর চর্চার কোনো বিকল্প নেই। একান্তপক্ষে আবহাওয়া একটু সহনীয় হয়ে এলে ঘরের বাইরের শারীরিক অনুশীলনগুলো শুরু করা উচিত। দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়ে দীর্ঘক্ষণ ধরে ব্যায়াম না করে আবহাওয়া বুঝে ভিন্ন ভিন্ন সময় বেছে নেওয়া যায়। এতে করে অভ্যাস বজায় থাকবে এবং সেই সঙ্গে দেহের পেশীগুলো সচল থাকবে।
প্রোটিন ও ফাইবার সমৃদ্ধ খাবারের প্রতি গুরুত্বারোপ:
শীতের সময় প্রোটিন ও ফাইবার পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ খাবারগুলো সর্বোত্তম। প্রোটিন পেশী রক্ষণাবেক্ষণ, বিপাক এবং ক্ষুধা কমাতে সাহায্য করে। আর ফাইবার স্বল্পাহারেই পাকস্থলির পূর্ণতা বৃদ্ধি ও হজমে সহায়তা করে ঘন ঘন খাওয়ার উন্মাদনা কমায়। এ ছাড়াও এ ধরনের খাবার মসলা বা উচ্চ-চর্বিযুক্ত উপাদানগুলোর প্রয়োজন ছাড়াই আলাদা স্বাদ যোগ করতে পারে। যেমন মিষ্টি আলু, গাজর, শালগম এবং পালং শাকের মতো হাল্কা খাবারগুলো রাখা যেতে দুপুরে ও রাতের খাবারে রাখা যেতে পারে। এগুলোর সঙ্গে চর্বিহীন প্রোটিন ও কম সোডিয়াম সম্পন্ন স্যুপ অতিরিক্ত ক্যালোরি ছাড়াই তাপমাত্রার যোগান দিবে। এ ছাড়া মটরশুটি, ডিম ও শিমের সমন্বয়ের মাধ্যমে ফাইবার ও স্বাস্থ্যকর প্রোটিনের চাহিদা পূরণ হতে পারে।
ভিটামিন ডি গ্রহণ:
শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ভিটাামিন ডি। আর শীতকালে সূর্যালোকের অভাবে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি পূরণের জন্য কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো সব মৌসুমেই পাওয়া যায়। যেমন ফ্যাটযুক্ত মাছ, ডিমের কুসুম এবং ফর্টিফাইড দুগ্ধজাত খাবার। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় এই খাবারগুলো রাখা শরীরের প্রয়োজনীয় শক্তির যোগানের জন্য যথেষ্ট। এই ভিটামিনের অভাব খুব বেশি খারাপের দিকে এগোলে অবশ্যই পরিপূরক বিকল্পের জন্য বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।
পানিশূন্যতা এড়িয়ে চলা:
শীতে শরীর না ঘামলেও দেহে পানির ভারসাম্য ধরে রাখা আবশ্যক। বিপাকসহ শরীরের আভ্যন্তরীণ প্রতিটি কার্যকলাপে একটি অপরিহার্য উপাদান হচ্ছে পানি। অল্প মাত্রায় পানিশূন্যতাও কখনও কখনও অতি মাত্রায় ক্ষুধার উদ্রেক ঘটাতে পারে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা ছাড়াও এই সমস্যার একটি উপযুক্ত সমাধান হচ্ছে ভেষজ চা। এটি তৃষ্ণা মেটানোর পাশাপাশি দেহে আরামদায়ক তাপমাত্রা সরবরাহ করে। তবে এক্ষেত্রে যতটুকু সম্ভব চিনির ব্যবহার কমাতে হবে।
প্রতিদিন ঘুমের নিয়ম-কানুন:
হরমোন নিয়ন্ত্রণে রুটিন মাফিক ঘুমের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। প্রতিদিন ঘুমাতে যাওয়ার সময় এবং ঘুম থেকে ওঠার সময়ের মধ্যে সামঞ্জস্যতা রাখতে হবে। এমনকি মাঝের ঘুমের সময়টিও ঠিক রাখতে হবে। অপর্যাপ্ত ঘুম মানেই মেজাজের ভারসাম্যহীনতা, যার রেশ ধরে আসে ক্লান্তি, বিষণ্নতা এবং কর্মবিমুখতা। এ সবকিছু পরিচালিত করে মানসিক চাপের দিকে, যে অবস্থায় অনেকেই অতিরিক্ত অস্বাস্থ্যকর এবং অতিরিক্ত আহারের প্রতি আকৃষ্ট হয়।
মানসিক চাপ এড়িয়ে চলা:
প্রচণ্ড মানসিক চাপের সময় দেহের ভেতর কর্টিসল নামক হরমোনের অধিক মাত্রায় নিঃসরণ ঘটে। ফলে অধিক চর্বি বা চিনিযুক্ত খাবারের জন্য প্রচণ্ড উন্মাদনা সৃষ্টি হয়। এই প্রভাবকে প্রশমিত করতে মেডিটেশন ও বাইরে অল্প হাঁটার পরামর্শ দেওয়া হয়। নিয়মিত শরীর চর্চা শরীরের ক্যালোরি পোড়ানোর পাশাপাশি মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণেরও একটি মোক্ষম হাতিয়ার। তবে ব্যায়াম ছাড়াও দুশ্চিন্তা মুক্তির আরও কিছু কার্যকর উপায় রয়েছে। তন্মধ্যে ঘর গোছানো। আরেকটি হচ্ছে বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত হওয়া। দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত থাকার আরও একটি আকর্ষণীয় উপায় হচ্ছে পরিবার বা বন্ধুদের সঙ্গে ভ্রমণে যাওয়া। প্রকৃতির সান্নিধ্যে যে কোনো দুশ্চিন্তা নিমেষেই কমে যায়। সর্বপরি, স্থুলতা এড়িয়ে ফিটনেস ধরে রাখার ক্ষেত্রে ভ্রমণ হতে পারে নিশ্চয়তার মাপকাঠি।

Side banner