Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারি, ২০২৫, ২৪ পৌষ ১৪৩১

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে বাড়ছে ডায়রিয়া রোগী 


দৈনিক পরিবার | আলমগীর রনি জানুয়ারি ৫, ২০২৫, ০২:১৯ পিএম চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে বাড়ছে ডায়রিয়া রোগী 

সারাদেশের মতোই শীতের তীব্রতা বাড়ছে চুয়াডাঙ্গাও। উত্তর থেকে বয়ে আসা হিমেল বাতাসে শীতের অনুভ‚তি বাড়িয়ে দিচ্ছে কয়েকগুণে। একদিকে যেমন বাড়ছে শীত, অন্যদিকে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। গত ১ সপ্তাহে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ২৪৩ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন ডায়রিয়া ওয়ার্ডে। এতে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। তবে এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। এছাড়া প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত হাসপাতালের বহিঃবিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছে প্রায় দুই শতাধিকেরও অধিক  রোগী। 
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ড সুত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে অর্থাৎ ২৮ ডিসেম্বর হতে গতকাল পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছেন ২৪৩ জন রোগী। গতকাল বিকেল ৫টা পর্যন্ত মোট ভর্তি ছিলো ৭২ জন রোগী। এতে ২৮ ডিসেম্বর নতুন ভর্তি হন ৪০ জন রোগী, ২৯ ডিসেম্বর ৩৮ জন, ৩০ ডিসেম্বর ৩২ জন, ৩১ ডিসেম্বর ২৫ জন, ১ জানুয়ারি ২৭ জন, ২ জানুয়ারি ৩৪ জন, ৩ জানুয়ারি ৩২ জন, ৪ জানুয়ারি ৫টা পর্যন্ত মোট ভর্তি ছিলো ১৫ জন রোগী।
ডায়রিয়া ওয়ার্ডের সিনিয়র নার্স রোকেয়া খাতুন বলেন, প্রতিদিন গড়ে ৩০ জনের ওপরে ডায়রিয়া রোগী আসছেন। তাদের মধ্যে বেশির ভাগই শিশু। একজন শিশু রোগীর সঙ্গে কমপক্ষে আরও দুই-তিনজন স্বজন থাকছেন। রোগী বেশি হওয়ায় চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা।
ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা গাড়াবাড়িয়া গ্রামের আম্বিয়া খাতুন নামে এক শিশু রোগীর মা বলেন, আমার ১ বছরের ছেলে গত দুই দিন আগে ডায়েরিয়া জনিত সমস্যা নিয়ে ভর্তি করিয়েছি। রোগীর এতো চাপ যে এখানে থাকতেই সমস্যা হয়ে যাচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গা ভালাইপুর এলাকার আসমা খাতুন নামের আরেক শিশুর মা বলেন, গতকাল থেকে পাতলা মল আর বমি হচ্ছিল মেয়ের। সকালে হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। হাসপাতাল েেক খাওয়া স্যালাইনসহ যাবতীয় ওষুধ দিলেও স্যালাইন সেট ও ক্যানোলা সাপ্লাই নেই বলে জানিয়ে দিলে বাইরে থেকে কিনে আনতে হচ্ছে। 
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. রকিব সাদী বলেন, হাসপাতালে কলেরা স্যালাইনসহ যাবতীয় ওষুধ সাপ্লাই আছে। তবে স্যালাইন সেট ও ক্যানোলা নেই। সেটা আশা করছি অল্প কিছু দিনের মধ্যে চলে আসবে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জুনিয়র কনসালট্যান্ট শিশু ডা. মাহবুবুর রহমান মিলন বলেন, রোটা ভাইরাস ও শীত জনিত কারণে শিশুরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এর মধ্যে ডায়রিয়া রোগী বেশি। বিশেষ করে শিশু রোগী বেশি রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে। এর কোনো মেডিসিন না থাকার কারণে ৪ থেকে ৫ দিন শিশুরা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত থাকছে। ৫ দিন পর ভাইরাস মারা গেলে সুস্থ হয়ে যাচ্ছে। এতে আতংকিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। 
তিনি আরো বলেন, এক্ষেত্রে কোনমতেই শিশুদের বাসি খাবার খাওয়ানো যাবে না। যতটা সম্ভব বাইরের খাবার এড়িয়ে চলা ভালো। শিশুদের প্রতি বেশি যতœ নিতে হবে। বাসি খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। মোটা কাপড় পরিধান করাতে হবে। রাস্তার ধারের অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার প্রতি মানুষের সচেতনতা না বাড়লে ডায়রিয়া মোকাবিলা করা কঠিন হয়ে যাবে। ১ থেকে ৬ মাসের শিশুদের বুকের দুধ ছাড়া অন্য কিছু খাওয়ানো যাবে না। খিচুড়ি খাওয়ানোর ক্ষেত্রেও সতর্ক হতে হবে। বাচ্চাদের বুকের দুধ খাওয়ানো চালিয়ে যেতে হবে এবং যতটুকু সম্ভব বাচ্চাদেরকে সতর্ক রাখতে হবে।

Side banner