মস্তিষ্কের কোষগুলোর অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণে ব্রেন ক্যান্সার হয়। এটা প্রাণঘাতি রোগ। সরাসরি এই রোগ প্রতিরোধের নির্দিষ্ট কোনো উপায় নেই। তবে জীবনযাত্রার পরিবর্তন ও স্বাস্থ্যকর অভ্যাসের মাধ্যমে কিছুটা হলেও ঝুঁকি থাকা যায়।
নিচে প্রতিরোধের ১০টি উপায় নিয়ে আলোচনা করা হলো।
সুষম খাবার গ্রহণ করুন
মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য রক্ষায় সঠিক খাদ্যাভ্যাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার (যেমন: ব্রকোলি, পালং শাক) খাওয়ার অভ্যাস করুন। চর্বি ও প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন। পর্যাপ্ত প্রোটিন, ভালো ফ্যাট (যেমন: মাছের তেল, বাদাম) এবং শস্যজাতীয় খাবার খান।
রেডিয়েশন থেকে দূরে থাকুন
দীর্ঘ সময় উচ্চতর রেডিয়েশনের সংস্পর্শে থাকা থেকে বিরত থাকুন। ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারে সতর্ক থাকুন এবং প্রয়োজনে ইয়ারফোন বা স্পিকার ব্যবহার করুন।
দূষণ এড়িয়ে চলুন
বায়ু দূষণ এবং রাসায়নিক পদার্থের সংস্পর্শ কমান। ক্ষতিকর রাসায়নিক ব্যবহার করলে (যেমন: রঙ, কীটনাশক) সুরক্ষার জন্য গ্লাভস ও মাস্ক ব্যবহার করুন।
ধূমপান ও অ্যালকোহল বর্জন করুন
ধূমপান এবং অতিরিক্ত অ্যালকোহল গ্রহণ ব্রেন ক্যান্সারসহ অন্যান্য ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। এগুলো একেবারে এড়িয়ে চলা উচিত।
শরীরচর্চা করুন
প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটুন বা হালকা ব্যায়াম করুন। যোগব্যায়াম ও মেডিটেশন ব্রেনের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
পর্যাপ্ত ঘুম নিন
মস্তিষ্কের জন্য প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা গভীর ঘুম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঘুম কম হলে মস্তিষ্কের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
মানসিক চাপ কমান
অতিরিক্ত মানসিক চাপ ব্রেনের কার্যক্ষমতা নষ্ট করে। রিলাক্সেশন, ধ্যান এবং সৃজনশীল কাজ স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে।
পরিবারের ইতিহাস জানুন
যদি পরিবারের কারও ব্রেন ক্যান্সার থাকে, তবে চিকিৎসকের সঙ্গে আলোচনা করুন। প্রয়োজন হলে জেনেটিক টেস্ট করান। সতর্ক থাকুন।
পর্যাপ্ত পানি পান করুন
প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন। ডিহাইড্রেশন মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমায় এবং ব্রেনের কোষ দুর্বল করে।
নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করুন
বছরে অন্তত একবার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করুন। মাথাব্যথা, চোখে ঝাপসা দেখা, কিংবা কোনো অস্বাভাবিক লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ব্রেন ক্যান্সার প্রতিরোধের উপায়গুলো মূলত স্বাস্থ্যকর জীবনধারার ওপর নির্ভরশীল। দূষণমুক্ত পরিবেশ, সুষম খাদ্য, পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং মানসিক প্রশান্তি মস্তিষ্ককে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। নিজের যত্ন নিন, সুস্থ থাকুন এবং জীবনে আনন্দের সঙ্গে এগিয়ে চলুন।
সূত্র: ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ
আপনার মতামত লিখুন :