কয়েক দিন আগে পুনর্গঠন করা হয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড। কিন্তু ১৫ সদস্যের এ কমিটির সংস্কার ও পুনর্গঠনের দাবিতে মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) এফডিসিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন চলচ্চিত্র নির্মাতা-প্রযোজকরা। একই সঙ্গে সেন্সর সার্টিফিকেশন বোর্ডের দাবিও জানান তারা।
এ প্রসঙ্গে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির মহাসচিব শাহীন সুমন বলেন, নতুন সেন্সর বোর্ডে আমাদের অনেক সিনিয়র পরিচালক আছেন, তাদেরকে যুক্ত করলে সুন্দর হতো। এখনও বিশ্বাস করি, সার্টিফিকেশন বোর্ড তৈরি হবে। আর যদি না হয়, তাহলে সেন্সর বোর্ডে আমাদের চলচ্চিত্রের সিনিয়র নির্মাতাদের যুক্ত করে বোর্ড গঠন করলে চলচ্চিত্রের জন্য ভালো হবে।
কয়েকটি প্রশ্ন ছুড়ে চিত্রনায়ক ওমর সানী বলেন, পাকিস্তান আমল থেকে সেন্সর বোর্ড গঠন হয়ে আসছে। সবার দাবি, বাংলাদেশ চলচ্চিত্রে অনৈতিক কিছু হোক সেটা আমরা কেউ চাই না। আমাদের চলচ্চিত্র একই জায়গায় বন্দি হয়ে আছে। বিগত দিনে এটার পরিবর্তন করার চেষ্টা করেছি। এটা দেখানো যাবে না, ওটা দেখানো যাবে না। একই জিনিস দর্শক আর কত দেখবে? ভালোকে ভালো আর মন্দকে মন্দ যদি দেখাতে না পারি, তা হলে দর্শক কেন দেখবেন?
অভিনেতা বলেন, সেন্সর বোর্ডের মেম্বার হওয়ার জন্য অনেক অভিজ্ঞতা দরকার। কিন্তু নবগঠিত সেন্সর বোর্ডের অনেককে আমি চিনিই না। এটা আমার ব্যর্থতাও হতে পারে। কেন চিনব সেটাও আমার এক ধরনের প্রশ্ন। আমরা সিনেমার মানুষেরাই যদি না চিনি। সেই আগের মতোই যদি হয়ে যায়, তাহলে পরিবর্তন বা পরিবর্ধন হয়ে লাভটা কি? আমি স্বপ্ন দেখি, আগামীর চলচ্চিত্র অনেক ভালো হবে। সেন্সর সার্টিফিকেশনের পাশাপাশি সিনেমাহলগুলোও বাড়ানো দরকার।
প্রযোজক সামসুল আলম বলেন, নবগঠিত সেন্সর বোর্ড দেখে আমি হতাশ। দুই-চারজন ছাড়া যাদের নাম দেখলাম, তাদের একজন চলচ্চিত্র প্রযোজক। আমি উনাকে চিনি না। একজন মালেক আফসারির সিনেমা, একজন কাজী হায়াতের সিনেমা চলবে কি চলবে না এটা কে সিদ্ধান্ত দেবে এটা ভেবে দেখতে হবে।
তথ্য উপদেষ্টার কাছে অনুরোধ জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি সেন্সর বোর্ড বাতিল করে সেন্সর সার্টিফিকেশন বোর্ড করা হোক। গ্রেটেশন করে দিন আমাদের চলচ্চিত্রকে। আর ওই গ্রেডেশন বোর্ডেও যারা থাকবেন তারা যেন চলচ্চিত্রের মানুষদের গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি হয়। তাদের নিয়ে যেন কেউ প্রশ্ন তুলতে না পারে।
এদিকে সার্টিফিকেশন আইনের পক্ষে কথা বলেছেন নতুন সেন্সর বোর্ডের দুই সদস্য নির্মাতা আশফাক নিপুণ এবং অভিনেত্রী কাজী নওশাবা আহমেদও। আগে থেকেই সেন্সর বোর্ডের বিপক্ষে অবস্থানের কারণে ইতোমধ্যে নতুন কমিটি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন নিপুণ।
প্রসঙ্গত, গত ১৫ সেপ্টেম্বর সেন্সর বোর্ড পুনর্গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। পুনর্গঠিত সেন্সর বোর্ডে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিবকে চেয়ারম্যান এবং সেন্সর বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যানকে সদস্য সচিব করা হয়।
এ ছাড়া নিপুণ ও নওশাবা ছাড়াও সদস্য হিসেবে আরও রয়েছেন, নির্মাতা জাকির হোসেন রাজু, খিজির হায়াত খান, তাসমিয়া আফরিন মৌ, লেখক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন এবং চলচ্চিত্র প্রযোজক রফিকুল আনোয়ার রাসেলকে।
আপনার মতামত লিখুন :