নায়িকা নিপুণ আক্তার, সমালোচনা যেনো পিছুই ছাড়ে না তার। কিছুদিন পর পরই নানা ইস্যুতে সমালোচনার মুখে পড়েন। কখনো শিল্পী সমিতির নির্বাচন কিংবা পদ নিয়ে, কখনো বা বেফাস বেফাঁস মন্তব্যের জন্য। এইতো কিছুদিন আগেই সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ বিমানের বিজি-২০১ ফ্লাইটে যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হলে তার পাসপোর্ট অফলোড করে দেয় ইমিগ্রেশন পুলিশ।
নিপুণের নামে মামলা না থাকায় পরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু আটকের খবর সত্য নয় দাবি করেন অভিনেত্রী। তবে বিমানবন্দরের বেশকিছু ফুটেজে তাকে দেখা যায়। বিগত সরকারের আমলে নানাবিধ কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন নিপুণ।
এদিকে, জালিয়াতির অভিযোগে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে নিপুণকে। অনৈতিকভাবে সমিতির প্যাড ব্যবহার করে মনগড়া বিবৃতি প্রদান করার অভিযোগে সম্প্রতি কার্যনির্বাহী পরিষদের মিটিংয়ে সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।
গেল বছরের ১৬ জুলাই শিল্পী সমিতির প্যাড ব্যবহার করে কোটাবিরোধী আন্দোলন নিয়ে এক বিবৃতি প্রদান করেন নিপুণ আক্তার। সেখানে নিজেকে সাধারণ সম্পাদক ‘সাবেক’ বলেই উল্লেখ করেন তিনি। শুধু তাই নয় গত ১৭ জুলাই নিজের ফেসবুক ওয়ালে সেটা পোস্টও দেন। এ নিয়ে সে সময় ব্যাপক সমালোচনায় জড়ান তিনি। অনৈতিকভাবে সমিতির প্যাড ব্যবহার করায় মিশা-ডিপজল নেতৃত্বাধীন কমিটি গত বছরের ৩০ জুলাই সমিতির ষষ্ঠ সভায় এ বিষয় উত্থাপিত হলে নিপুণকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
এরপর তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিলে তা তোয়াক্কা করেননি তিনি। তার আগে বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন ডিপজলকে নিয়ে গণমাধ্যমে ‘কুরুচিপূর্ণ’ মন্তব্য করার অভিযোগ উঠে এই বিতর্কিত অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে। গঠনতন্ত্র পরিপন্থি কাজ করায় নিপুণকে নোটিশ দেয় কার্যনির্বাহী পরিষদ। তবে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এক নেতার একান্ত কাছের মানুষ হওয়ায় কোনো চিঠিই আমলে নেননি নিপুণ। চালিয়ে যান তার সব বিতর্কিত কর্মকাণ্ড। যার পরিপ্রেক্ষিতে অনৈতিকভাবে শিল্পী সমিতির প্যাড ব্যবহার এবং সাধারণ সম্পাদককে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করার অভিযোগে শিল্পী সমিতি থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার হয়েছেন নিপুণ আক্তার।
এ নিয়ে আপাতত বিস্তারিত কিছু না বলতে চাইলেও বহিষ্কারের সত্যতা স্বীকার করেছেন শিল্পী সমিতির সহ-সভাপতি ও মুখপাত্র ডি এ তায়েব। পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে জানতে নিপুণের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ব্যবহৃত নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। হোয়াটসঅ্যাপে খুদে বার্তা পাঠালেও তাতে সাড়া মেলেনি।
প্রসঙ্গত, কোটা আন্দোলন নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে তোপের মুখে পড়েছিলেন নিপুণ। মূলত তিন কারণে সমালোচনায় জড়িয়েছিলেন অভিনেত্রী। প্রথমত, নিপুণ তার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির অফিসিয়াল প্যাড ব্যবহার করে। যেখানে নিজেকে ‘সাবেক’ সাধারণ সম্পাদক বলেছেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির কোনো পদবিতে নেই। তাহলে তিনি কীভাবে সমিতির অফিসিয়াল প্যাড ব্যবহারের এখতিয়ার রাখেন অনেকেই তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
দ্বিতীয়ত, এটি হুবহু কপি করা হয়েছিল টেলিভিশনের অভিনয়শিল্পী সংঘের বিবৃতি। সহিংসতাকে এড়িয়ে দেওয়া সে বিবৃতি নিয়েও কম সমালোচনা হয়নি।
তৃতীয়ত, নিপুণের বিবৃতিতেও একইভাবে সহিংসতা ও নিহত হওয়ার মতো ঘটনা এড়িয়ে যাওয়া হয়েছিল।
আপনার মতামত লিখুন :