Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা সোমবার, ২০ জানুয়ারি, ২০২৫, ৭ মাঘ ১৪৩১

বাঘারপাড়ার গুণী শিক্ষক নজরুল ইসলাম 


দৈনিক পরিবার | সাঈদ ইবনে হানিফ জানুয়ারি ১৯, ২০২৫, ১১:১৫ পিএম বাঘারপাড়ার গুণী শিক্ষক নজরুল ইসলাম 

টানা ৩৬ বছর ৯ মাস ১ দিন নিয়োজিত ছিলেন শিক্ষকতা পেশায়। রোদ, বৃষ্টি, ঝড় কোন কিছুতে আটকাতে পারতো না স্কুলে যাওয়া থেকে। কোন শিক্ষার্থী স্কুলে না আসলে খোঁজ নিতেন বাড়িতে, কেন সে স্কুলে আসেনি। বলছি যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার বাসুয়াড়ী ইউনিয়নের সম্মিলিত বাগডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান শিক্ষক নজরুল স্যারের কথা। 
স্যারের প্রকৃত নাম মো: নজরুল ইসলাম। স্যারের নিজ এলাকায় ঠান্ডু স্যার নামেই বেশি পরিচিত। গুণী এই শিক্ষকের বাড়ি পার্শবর্তী মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলার শতপাড়া গ্রামে। শিক্ষক  নজরুল ইসলাম সম্মিলিত বিদ্যাপীঠ বাগডাংগা বহুমূখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন ১৯৮৩ সালের এপ্রিল মাসের ১০ তারিখে। 
সম্প্রতি একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সুমন হোসেন এর সাথে একান্ত আলাপ কালে তিনি বলেন, তখন বাড়ি থেকে স্কুলে আসার যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ থাকার কারণে  প্রায় ২২ বছর স্কুল সংলগ্ন এলাকায় লজিং মাস্টার থেকেছেন। তারপর যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির সাথে সাথে একসময় বাড়ি থেকেই আসা যাওয়া শুরু করেন। স্যারের এই আসা যাওয়া নিয়েও আছে এক লম্বা ইতিহাস। প্রায় ৩০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে প্রতিদিন স্কুলে আসতেন। প্রথমে বাড়ি থাকে নারিকেলবাড়িয়া আসতেন একটা সাইকেলে চড়ে, সেখান থেকে আবার বাসে করে আসতেন চাড়াভিটা বাজারে, এরপর আবার সেখানে থেকে কনক স্যারের বাড়িতে রাখা অন্য একটি সাইকেল নিয়ে চিরচেনা গন্তব্যস্থল স্কুলের উদ্দেশ্যে ছুটে চলা, তবুও যেন ক্লান্তি ছিল না মনে। মাঝে কিছুদিন মটরসাইকেলে যাতায়াত করতেন কিন্তু সে সুখ বেশিদিন স্যারের কপালে সহ্য হয়নি। বিভিন্ন হাস্য রসাত্মক গল্পের জন্ম দিয়ে মোটর সাইকেল অধ্যায়ের যবনিকা হয়েছিল। স্যার আবারো ফেরত গিয়েছিলেন তার আস্থাভাজন দ্বিচক্রযান ও বাস গাড়ির দিকে। এভাবেই পাড়ি দিয়েছেন দীর্ঘ শিক্ষকতার পথ। 
তিনি শিক্ষক থাকাকালীন এলাকার অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের সাথে যেমন সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলেছেন, আবার দায়িত্ব নিয়ে শিক্ষার্থীদের ভালো শিক্ষার্থী হিসেবে গড়ে তুলতে চেষ্টা করেছেন। এভাবেই তিনি অত্যন্ত সুনামের সাথে চাকুরীর জীবন পার করেছেন। এরপর সময়ের পরিক্রমায় ২০২০ সালের অক্টোবর মাসের ১০ তারিখে চাকুরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। 
বর্তমানে একসময়ের সকলের প্রিয় এই শিক্ষক দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত হয়ে দিন যাপন করছেন।  আর্থিক অসচ্ছলতা ও জেঁকে বসেছে স্যারের সংসারে। ব্যক্তিজীবনে স্যার দুই কন্যা ও এক পুত্র সন্তানের জনক। সবকিছু মিলিয়ে ভালো নেই প্রিয় নজরুল স্যার।

Side banner