আসন্ন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের কমিটিতে ত্যাগী ও নির্যাতিতদের মূল্যায়ন চেয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের একদল নেতাকর্মী।
শনিবার (৪ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শাখা ছাত্রদলের একদল নেতাকর্মী পরিবহন চত্বর থেকে মিছিলটি শুরু করেন। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনারে এসে সংক্ষিপ্ত সামবেশে মিলিত হয়। মিছিলে শতাধিক নেতা-কর্মী অংশগ্রহণ করেন।
সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের কর্মী মাজহারুল আলম তমালের সঞ্চালনায় শাখা ছাত্রদলের বিভিন্ন নেতাকর্মীরা বক্তব্য রাখেন। সমাবশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৯ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী তানজিলা হাসান (বৈখাশী) বলেন, যে প্রশাসন এখনো স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা হলের নাম পরিবর্তন করতে পারেনি, তারা কোনো সংস্কার ছাড়া কীভাবে জাকসু নির্বাচন আয়োজন করতে পারে? জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে ছাত্রদলের অবদান ছিল সবচেয়ে বেশি। কিন্তু ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে একটি নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রদল ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করানোর চেষ্টা করছে। তারা প্রচার করছে যে আমরা জাকসু চাই না। কিন্তু আমরা অবশ্যই জাকসু চাই তবে সেটা যৌক্তিক সংস্কারের পর। জাকসুতে যারা নির্বাচন করবে তারা কোনো রাজনৈতিক দলের সেবক হবে না। সেক্ষেত্রে ছাত্রদলের কমিটিতে যারা থাকবে তারাই যে জাকসু নির্বাচন করবে বিষয়টি এমন নয়। যদি ছাত্রদলের কোনো কমিটিই না থাকে, তাহলে তারা কীভাবে প্রার্থী নির্ধারণ করবে? তাই কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের উচিত রাজনৈতিক প্রজ্ঞাবান, অভিজ্ঞ, এবং ত্যাগী নেতৃত্বের ভিত্তিতে একটি কমিটি গঠন করা। তাদের যথাযথ মূল্যায়ন না করলে ভবিষ্যতে ছাত্রদল কিংবা ছাত্ররাজনীতিতে পরবর্তী প্রজন্ম উৎসাহিত হবে না বলে আমরা মনে করি।
ইতিহাস বিভাগের ৪৩ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল কর্মী রায়হান হোসাইন বলেন, যারা ১৬ থেকে ১৭ বছর ধরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের প্রাণটা ধরে রেখেছে তাদেরকে বাদ দিয়ে আজকের যে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়েছে সেটিকে আমরা অবশ্যই অবশ্যই প্রত্যাখান করছি। যারা জাকসুকে কেন্দ্র করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের জুনিয়র কমিটি চাচ্ছে তাদেরকে বলতে চাই জাকসু এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল দুইটি স্বতন্ত্র সংগঠন। সেক্ষেত্রে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল এবং জাকসুকে এক করা যাবে না। জাবি ছাত্রদলের কমিটি হতে হবে ত্যাগী এবং নির্যাতিতদের নিয়ে। আমরা দেখেছি ঢাকাস্থ কয়েকটি কমিটিতে সিনিয়র নেতৃবৃন্দদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাহলে ৫ আগষ্টের পরে যদি তাদেরকে দায়িত্ব দেওয়া হয় তাহলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের ক্ষেত্রে ত্যাগীদের বাদ দিয়ে কোন অপশক্তির কারণে জুনিয়রদের কমিটি দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে।
ছাত্রদলের আরেক কর্মী মোহাম্মদ ইব্রাহীম বলেন, শিবির সাধারণ শিক্ষার্থীর বেশে ছাত্রদলের বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু করেছে। জাকসুর উছিলায় ছাত্রদলের সিনিয়র-ত্যাগী নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়নের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। এরই ধারাবাহিকতায় তারা নীলনকশা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে। আমাদের সর্বশেষ হল কমিটি হয়েছিল ২০১২ সালের জুন মাসে। এরপর ২০১৬ সালে আংশিক কমিটি হলেও আমরা অনেক পদ-প্রত্যাশীরা পরিচয়ই খুঁজে পাইনি। ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাথে আমরা ৬ টি মতবিনিময় সভা করেছি। তবে আজকে সিনিয়রদের বাদ দিয়ে ৪৭ তম ব্যাচ থেকে ৫৩ তম পর্যন্ত যে অনানুষ্ঠানিক মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়েছে তা আমরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করলাম। আমরা শুধু আমাদের একটা পরিচয় চাই। ১৬ বছরের কাজের মূল্যায়ন চাই। আমরা কমিটিতে আসলে হলে থাকবো না, হলে থাকতেও চাইও না।
আপনার মতামত লিখুন :