বগুড়ার সোনাতলায় দীর্ঘদিন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিয়ে চলছে সরকারি সোনাতলা স্কুল এন্ড কলেজ। প্রতিষ্ঠানটিতে অধ্যক্ষের পদ শূন্য থাকায় সীমাহিন দুর্ভোগে পড়েছে শিক্ষক সহ শিক্ষার্থীরা। শিক্ষাবিদরা জানিয়েছেন এ ধরনের সরকারি ঐতিহ্যবাহী শতবর্ষী প্রতিষ্ঠানে উন্নয়ন মূলক কাজ সহ সামগ্রিক বিষয় এগিয়ে নিতে হলে অধ্যক্ষ খুব দ্রুত প্রয়োজন। যদিও অধ্যক্ষের চেয়ার দখলকে কেন্দ্র করে ইতিপূর্বে দু'জন সিনিয়র শিক্ষকের মাঝে দেখা দেয় ঝামেলা, ফলশ্রুতিতে ঘটনাটি অভিযোগ অবধি গড়ায়। পরে বিষয়টি নিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কিছু শিক্ষার্থী জানান, উপজেলার মধ্যে মান-উন্নত শিক্ষা নিতে এ প্রতিষ্ঠানে আমরা আসি। কিছুদিন আগে অধ্যক্ষের চেয়ারের জন্য দু-জন স্যারের প্রতিযোগিতার কারণে শিক্ষার পরিবেশ অনেকটা ব্যাহত হয়েছে। শিক্ষার্থীরা মনে করেন এই প্রতিষ্ঠানে সরকার সদয় হয়ে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে অধ্যক্ষ নিয়োগ দেবে, এতে করে প্রাণ ফিরে পাবে প্রতিষ্ঠানটি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক জানান, বিদ্যালয়টি ২০১৮ সালে সরকারী হয়। গত বছর প্রধান শিক্ষক অবসরে গেলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দ্বায়িত্ব নিতে মরিয়া হয়ে উঠেন দুজন সিনিয়র শিক্ষক। এরপর শুরু হয় ডিডিও আয়ত্তে নেয়ার লড়াই। একজন ডিডিও পেয়ে চেয়ারে বসে অন্যজন তিনিও ডিডিও পেতে মরিয়া হয়ে ওঠে। যদিও প্রথম যিনি ভিডিও পান তিনি ক'দিন চেয়ারে বসে কার্যক্রম পরিচালনার পর মামলা সংক্রান্ত গত মাস দেড়েক ধরে আর তিনি বিদ্যালয়ে আসেন না। ফলে বিদ্যালয়ের চলমান কার্যক্রম চালিয়ে নিতে হিমসিম খেতে হয় শিক্ষকদের। এরমধ্যে ডিডিও পেয়ে অধ্যক্ষের চেয়ারে বসেন অপরজন।
অপরদিকে প্রতিষ্ঠানটিতে অধ্যক্ষ না থাকায় অনেকাংশে কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে এবং অতি শিঘ্রই উক্ত প্রতিষ্ঠানে সরকারি ভাবে অধ্যক্ষ যোগদান করে দ্বায়িত্ব বুঝে নিলে কর্মক্ষেত্রের জটিলতা লাঘব হবে বলে আশাবাদী শিক্ষকরা।
তবে ওই প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাহাদুজ্জামান সাজুর অফিসে বিষয়টি নিয়ে কথা বলার প্রাক্কালে তিনি বিরক্তির সুরে গণমাধ্যম কর্মীকে জানান, আপনাকে কোনো কিছুই বলবো না এবং তিনি শাসিয়ে বলেন, আমার প্রতিষ্ঠানের সমস্যা আমি দেখবো। খবরদার আমার প্রতিষ্ঠান নিয়ে কিছুই লিখবেন না।
সাংবাদিক এর সাথে এহেন আচরণে হতবাক সাংবাদিক মহল। প্রেসক্লাবের সভাপতি শহিদুল ইসলাম শাহিন বলেন, এ ধরনের আচরণ ওই প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছে আমরা আসা করিনি।
এবিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শেখ নজমুল ইসলাম বলেন, বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাহাদুজ্জামান সাজু তিনি চলমান কাজগুলো এগিয়ে নিয়ে যাবে। তবে ওই শতবর্ষী বিদ্যাপীঠে অধ্যক্ষ এই মুহূর্তে প্রয়োজন।
গণমাধ্যম কর্মীর সাথে খারাপ আচরণ এর বিষয়ে তিনি বলেন, আপনাদের সাথে এধরনের আচরণ করা মোটেও তার সমুচিন হয়নি।
বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্বীকৃতি প্রামাণিক বলেন, ওই প্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষের নিয়োগে আমি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সঙ্গে কথা বলবো। গণমাধ্যম কর্মীর সাথে অসদাচরণ সম্পর্কে তিনি বলেন, এধরনের আচরণ একজন শিক্ষকের কাছে আমরা আশা করিনি।
আপনার মতামত লিখুন :