Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বিশ্বনাথে কিশোর সাইম নিহতের ঘটনায় মানববন্ধন


দৈনিক পরিবার | বিশ্বনাথ প্রতিনিধি ডিসেম্বর ২, ২০২৪, ০৭:৩২ পিএম বিশ্বনাথে কিশোর সাইম নিহতের ঘটনায় মানববন্ধন

সিলেটের বিশ্বনাথের জানাইয়া নোয়াগাঁও গ্রামের নিজাম উদ্দিন এর কনিষ্ঠ পুত্র সফাত উল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী রাহি আহমদ সাইম নিহতের ঘটনায় শোক প্রকাশ করে সুষ্ঠু বিচারের দাবীতে মানববন্ধন পালন করছে স্কুলের শিক্ষার্থীরা। 
সোমবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে বিশ্বনাথ উপজেলার অলংকারী ইউনিয়নের সফাত উল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে মানববন্ধন কর্মসূচিটি অনুষ্ঠিত হয়। 
মানববন্ধনে বক্তারা সাইম নিহতের ঘটনার সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনার রহস্য উন্মোচন সহ দোষীদের সনাক্ত করে দ্রুত বিচারের নিষ্পত্তি ও জড়িতদের কঠিন বিচারের দাবী জানান।
গত ২৭ নভেম্বর সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় ১৭ বছর বয়সী কিশোর সাইম আহমদের লাশ উদ্ধার করে বিশ্বনাথ থানা পুলিশ। এই ঘটনায় ৬ জনকে আসামি করে ২৯ নভেম্বর শুক্রবার একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে তার পরিবার। বিশ্বনাথ থানায় মামলা নং ১২।
মামালা এজাহারে নিহতের মা রত্না বেগম উল্লেখ্য করেন, তার ছেলে সাইম আহমদ জানাইয়া গ্রামের মৃত হাজী তৈমুছ আলীর পুত্র তাহির মিয়ার ছেলে তারেক আহমদেরে সাথে বন্ধুর সম্পর্কে যাতায়াত করত। ২৪ নভেম্বর থেকে সাইম ওই বাড়িতে থাকছিল। ২৭ নভেম্বর দুপুরে সাইমের মা তাকে ওই বাড়ি থেকে নিয়ে আসেন এবং সাইম তাকে জানান যে তাহির মিয়ার বোন নিলুফা বেগম পার্শ্ববর্তী দোকানদার দিলু মিয়ার পাওনা টাকা দেয়ার জন্য ১২ হাজার ৫শত টাকা দিয়েছে। সন্ধা অনুমান ৬টায় তাহির মিয়া সাইমকে ফোন করে তাদের বাড়িতে যেতে বলিলে সে নিলুফা বেগমের দেওয়া টাকা দোকানের মালিক দিলু মিয়াকে দিয়ে পুনরায় তাহির মিয়ার বাড়িতে চলে যায়।
রাত ৯ টায় তাহির মিয়া সাইমের বিষয়ে তার মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন এবং জানান যে সাইম হয়তো তারেক আহমদের সঙ্গে খেলতে বাহিরে গেছে। কিছু সময় পর রত্না বেগমের কাছে খবর আসে যে তার ছেলে সাইম তাহির মিয়ার বাড়িতে গলায় উড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর পর রত্না বেগম তার ছেলেকে তাহির মিয়ার বসতঘরের উত্তর পাশের কক্ষে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। পরে দ্রুত তাকে নামিয়ে বিশ্বনাথ সন্ধানী ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বাদী রত্না বেগম অভিযোগ করেছেন যে, তাহির মিয়া এবং নিলুফা বেগমসহ অন্যান্য আসামিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তার ছেলেকে হত্যা করেছে। পরে তাকে রডের হুকের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যার ঘটনা সাজানোর চেষ্টা করেন। ময়নাতদন্তের পর সাইমের লাশ দাফন করা হয় এবং আত্মীয়দের সঙ্গে পরামর্শ করে তিনি মামলাটি দায়ের করেছেন।
মামলায় আসামীদের মধ্যে রয়েছেন, জানাইয়া নোয়াগাঁও গ্রামের মৃত হাজী তৈমুছ আলীর ছেলে তাহির মিয়া (৩৭), তাহির মিয়ার বোন নিলুফা বেগম (৩৪), স্ত্রী রুবিনা বেগম (৩০) এবং ছেলে তারেক আহমদ (১৫)। এছাড়া আরও ২-৩ জন অজ্ঞাতনামা রয়েছে।
এদিকে সিলিং ফ্যান থেকে কিশোর সাইমের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের পরদিন ২৮ নভেম্বর বৃহস্পতিবার রাতে তৈমুছ আলীর পুত্র তাহির মিয়া (৩৭), তাহির মিয়ার বোন নিলুফা বেগম (৩৪) এবং স্ত্রী রুবিনা বেগম (৩০) সন্দেহভাজন হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদ করতে আটক করে পুলিশ। পরে অভিযোগের ভিত্তিতে প্রধান ৩ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে আদলতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন সফাত উল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ সেলিম জাহাঙ্গীর, নবম শ্রেণির ছাত্র ইকবাল উদ্দিন, নিহতের বড় ভাই সাইফ উদ্দিন, বাবা নিজাম উদ্দিন ও তোয়াব আলী প্রমুখ। 
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, নিহত সাইম এর মা রত্না বেগম, জামাল উদ্দিন, তারেক বিন রমজান, ইকবাল, খালেদ, রাসেল সহ স্কুলের শিক্ষক ও ছাত্র ছাত্রীবৃন্দ।

Side banner

শিক্ষা বিভাগের আরো খবর