Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৭ নভেম্বর, ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১

অবশেষে ‘বিতর্কিত’ স্থান থেকে সরছে জাবির চারুকলা ভবন


দৈনিক পরিবার | জাবি প্রতিনিধি নভেম্বর ৬, ২০২৪, ০৬:২১ পিএম অবশেষে ‘বিতর্কিত’ স্থান থেকে সরছে জাবির চারুকলা ভবন

ভোরবেলা মাটি খননের যন্ত্র নিয়ে এসে উপড়ে ফেলা হয় দেড় শতাধিক গাছ, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের সুযোগে নিয়ে কয়েক ঘন্টায় বদলে ফেলা হয় পরিযায়ী পাখিদের আবাসস্থল খ্যাত ‘মেইন বার্ডস’ লেকের এক পাশের চিত্র। ঘটনা জানতে পেরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন পরিবেশ সচেতন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ছাত্রলীগের মদদ থাকায় প্রতিবাদ উপেক্ষা করে ভবন নির্মাণ কাজ চালিয়ে যান প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। তবে আগস্টে সরকার পতনের পর থমকে যায় ভারত-বাংলাদেশ যৌথ অর্থায়নে নির্মানাধীন প্রকল্পটির কাজ। শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদের মুখে অবশেষে ভবনের নির্মানের স্থান পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসানের সভাপতিত্বে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সভায় আল বেরুনী হলের বর্ধিতাংশের লেকের পাড় থেকে ভবনটি স্থানান্তরের সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। এসময় ভারত সরকারের অর্থায়নের উপর নির্ভরশীল নাহয়ে দেশীয় অর্থায়নে ভবন নির্মাণের বিষয়টিও বিবেচনায় রয়েছে বলে জানানো হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, ‘শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আপত্তি থাকায় চারুকলার নির্মাণাধীন ভবনের বিষয়ে আজ একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়েছে, চারুকলা ভবনের জন্য পূর্বনির্ধারিত স্থানটি বাদ দিয়ে নতুন স্থান নির্ধারণ করা হবে। তবে এ প্রকল্পে ইতোমধ্যে ব্যায়িত অর্থের ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।’
তিনি আরও জানান, ইতোমধ্যে নতুন স্থান নির্ধারণের বিষয়ে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) কে প্রধান করে একটি কমিটি করা হয়েছে। আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে কমিটি সকলের মতামতের ভিত্তিতে নতুন স্থান নির্ধারণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবে।
সভায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী প্রতিনিধি ও বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সভাপতি আলিফ মাহমুদ বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন যাবৎ মাস্টারপ্ল্যান ছাড়া অপরিকল্পিত ভবন নির্মান ও লেকের পাশেই বন উজাড় করে চারুকলা ভবন নির্মানের স্থান পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে এসেছি। সেসময় ছাত্রলীগের উপস্থিতিতে তারা ভবন নির্মাণের পায়তারা করে। কিন্তু আমরা যৌক্তিক দাবিতে অনড় ছিলাম। আমাদের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে অবশেষে কর্তৃপক্ষ ভবন স্থানান্তর  সম্মত হয়েছে। আমরা ভবন নির্মানের বিপক্ষে নই, তবে প্রাণ-প্রকৃতি বিপর্যস্ত করে অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণ চাই না।’
চলমান এ প্রকল্পে ভারত-বাংলাদেশ যৌথ অর্থায়নে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দের কার্যাদেশ হয়েছিল। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিপর্যয়ের পাশাপাশি বাংলাদেশের ওপর ভারতীয় আধিপত্যবাদী আচরণের অভিযোগ তুলে ভারতীয় অর্থায়নের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় প্রতিবাদ করে আসছেন জানান আধিপত্যবিরোধী মঞ্চের শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে মঞ্চের আহ্বায়ক সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী শাহারিয়ার আঞ্জুম বলেন, ‘চারুকলা ভবন হোক তবে সেটি ভারতীয় অর্থায়নে নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অর্থায়নে বা বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে ভবন নির্মান হতে পারে’।

Side banner

শিক্ষা বিভাগের আরো খবর