নওগাঁবাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা ছিল একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের, যা ২০২৩ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়, নওগাঁ বিল পাস হওয়ার মাধ্যমে পূরণ হয়। তবে দুই বছর অতিবাহিত হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও কর্মকর্তাদের নিয়োগ ছাড়া আর কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। একাডেমিক শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়নি এবং স্থান নির্ধারণের কাজও চলছে নানা জটিলতায়।
নওগাঁবাসী ও শিক্ষাবিদরা এ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষা কার্যক্রম চালু হলে নওগাঁ ও উত্তরাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চ শিক্ষার নতুন দ্বার খুলবে, যা জীবনের মান উন্নত করবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়টি কাগজে কলমেই সীমাবদ্ধ।
২০১৮ সালে জাতীয় নির্বাচনের এক জনসভায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নওগাঁতে একটি পূর্ণাঙ্গ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেন। ২০২২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিসভা এই বিষয়ে বিলের খসড়া অনুমোদন করে, যা ২০২৩ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে পাস হয়। এর পর ৮ জুন রাষ্ট্রপতির অনুমোদনে ড. আবুল কালাম আজাদকে প্রথম ভিসি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। সম্প্রতি ২০২৪ সালের ৭ অক্টোবর নতুন ভিসি ড. মো. হাছানাত আলী যোগদান করেছেন।
বর্তমানে শহরের বালুডাঙ্গা এলাকায় ভাড়া করা একটি স্থানে বিশ্ববিদ্যালয়ের দাফতরিক কার্যক্রম চলছে। তবে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ। নওগাঁ সরকারি কলেজের ছাত্র মুনিরুল ইসলাম জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হলে তারা উচ্চ শিক্ষার জন্য আর বাইরে যেতে বাধ্য হবেন না।
আরেক ছাত্র গোলাম রাব্বানী রিপন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়টির উন্নয়নমূলক কাজ এখনও চোখে পড়ে না।
নওগাঁ সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মোজাফ্ফর হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন পাওয়ার পর নওগাঁবাসী আশান্বিত ছিল যে, এখান থেকে শিক্ষার্থীরা উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পাবে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো কার্যক্রম নেই।
সাবেক অধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম খান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় মানেই গবেষণার সুযোগ, কিন্তু ক্লাস শুরু না হওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি দাবি জানান, যত দ্রুত সম্ভব ক্লাস শুরু হওয়া উচিত, যদিও স্থানের সংকট থাকলে কিছু বিষয় ক্লাস শুরু করতে হবে।
নবনিযুক্ত ভিসি ড. মো. হাছানাত আলী জানান, তিনি ইউজিসির কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করার জন্য আবেদন করেছেন এবং ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে কার্যক্রম চালুর আশা প্রকাশ করেছেন। তিনি নওগাঁবাসীর সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।
নওগাঁবাসীর প্রত্যাশা, বিশ্ববিদ্যালয়টি কাগজে-কলমে না থেকে বাস্তবে কার্যক্রম শুরু করবে, যাতে তারা উচ্চ শিক্ষার সুফল পেতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :