মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার বরাইদ ইউনিয়নের ছনকা উচ্চ বিদ্যালয়টি নদী ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা পেতে সঠিক জায়গায় স্থানান্তরের দাবি জানিয়েছে চর এলাকাবাসী।
ছনকা উচ্চ বিদ্যালয়টি ধলেশ্বরী নদীর তীরে অবস্থিত। বিদ্যালয়ের তিন দিকে রয়েছে ধলেশ্বরী নদী। ২০১৫ সালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপিত হয়। বিদ্যালয়টি ২০২২ সালে এমপিও ভুক্ত হয়।
বিদ্যালয়ের নতুন স্থান্তরের বিষয়ে প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোহাম্মদ শাহজাহান জানান, নদীর পাড়ে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় সরকারি নতুন ভবন ও সরকারি বিভিন্ন সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এছাড়া নদীর পাড়ে শিক্ষার্থীদের ভয়ে মুখে পাঠদান করতে হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া আছে ভাঙনের হুমকির মুখে থাকা নদীর পাড়ে নির্মিত স্কুল কলেজ মাদ্রাসা অবিলম্বে সরানো নিদের্শনা দেন। তারই ধারাবাহিকতায় গত ২৩/১১/২০২৩ তারিখে সাটুরিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ফকির জাকির হোসেন সরেজমিনে পরিদর্শন করেন।
বিদ্যালয়টি নদীর থেকে উত্তরে প্রায় ৮০ মিটার দূরত্বে থাকায় নদী ভাঙনের সম্মুখীন রয়েছে। যে কোন সময় নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে।
নদী ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পেতে ছনকা উচ্চ বিদ্যালয়টি ধলেশ্বরী নদীর পশ্চিম পাড়ে স্থায়ীভাবে স্থাান্তরের ব্যবস্থা করার জন্য পরিচালনা পরিষদ ও বিদ্যালয় কতৃপক্ষ সহ যথাযথ কতৃপক্ষকে সুপারিশ করে।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায় নদীর পশ্চিম পাড়ে স্থান্তরের এলাকায় ৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে, বর্তমান বিদ্যালয়ের পূর্ব পাড়ের ১টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। জনসংখ্যা পূর্ব পাড়ের চেয়ে পশ্চিম পাড়ে কয়েকগুণ বেশি, শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বেশি। যাতায়াতের সু ব্যবস্থা থাকায় ছনকা মৌজায় ছনকা বাজারের পাশে মূল্যবান জায়গায় ছনকা উচ্চ বিদ্যালয় স্থানান্তরের জন্য ৮২ শতাং ভূমি ক্রয় করেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি সদস্য ও স্থানীয় এলাকাবাসী অভিযোগ ছনকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠিত সময় বরাইদ ইউনিয়ন ৩ নং ওয়ার্ড মেম্বার আ: মজিদ প্রধান শিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পালনের ইচ্ছা পোষন করে। পরে সরকারি নিয়মে তার যোগ্যতা না থাকায়, সে তার দায়িত্ব পালন থেকে ব্যর্থ হয়।
তার জের ধরে মেম্বার আ: মজিদ কয়েক জন মিলে বিদ্যালয়ের জমি দাতা সদস্যদের দেওয়া জমি ফেরত নেওয়ার তালবাহানা করে। বিদ্যালয় কতৃপক্ষ নিরুপায় হয়ে কয়েকজন দাতা সদস্যদের জমি ও টাকা ফেরত প্রদান করে।
জায়গা ফেরত নিয়ে বিদ্যালয়ের আঙিনায় বসত বাড়ি করে দেয় আ: মজিদ। চর এলাকায় মুহাম্মদ আব্দুল মজিদ তার নিজের আধিপত্য বিস্তারের জন্য গত ১৬/০৪/২০২৪ ইং ছনকা উচ্চ বিদ্যালয় স্থানান্তর না করণের জন্য সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।
বরাইদ ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড মেম্বার আ: মজিদ জানান, চর এলাকায় বিদ্যালয়টি তৈরি হয়েছে চর এলাকায় বিদ্যালয়টি থাকবে। নদী ভাঙন থেকে রক্ষা পেতে প্রয়োজনে চরবাসী নতুন করে চরে জায়গা ব্যবস্থা করে দিবে।
বরাইদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই জানান, বিদ্যালয়টি নদীর ভাঙন থেকে রক্ষা জন্য জিও ব্যাগ ফালানো হয়েছে। বিদ্যালয়টি স্থানান্তর সঠিক জায়গায় করা হলে এলাকার শিক্ষার মান ভালো হবে।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধি ও নদীর দুই পাড়ের সুশীল সমাজের লোকজন ছনকা বাজার এলাকায় বিদ্যালয়টি স্থানান্তরের জোর দাবি জানায়। নদীর পশ্চিম পাড়ে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত ৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী ভালো ভাবে লেখাপড়া করার সুযোগ পাবে। ভবিষ্যতে ধলেশ্বরী নদী ভাঙ্গনের কবলের হাত থেকে বিদ্যালয়টি রক্ষা পাবে।
সাটুরিয়া উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা শান্তা রহমান ও উপজেলা ম্যাধমিক শিক্ষা অফিসার বিদ্যালয়ের নতুন স্থানান্তরের জায়গা পরিদর্শন করে। নদীর দুই পাড়ের জনগণের সাথে মতবিনিময় করেন।
নদীর ভাঙনের চর এলাকায় শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার ব্যাহত না হয় সে বিষয়ে উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।
আপনার মতামত লিখুন :