পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাবুগঞ্জ ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের জন্য বাসের ভোগান্তি যেন এক অনন্ত যন্ত্রণা। বহুদিন ধরে চলছে একটি ভাঙ্গা বাসই, তাও যেন তার সমস্ত শক্তি হারিয়ে ফেলেছে।
ধূসর রং চটে যাওয়া নীল বাসটি ধুঁকে ধুঁকে চলে, যেন প্রতিটি মাইল অতিক্রম করতে তার প্রাণপণ চেষ্টা করতে হয়। নড়বড়ে লাইটগুলো কখন যে নিভে যায়, তার কোনো ঠিক নেই। বাসের দরজাও কোনোরকমে আটকানো যায়, যেন যেকোনো মুহূর্তে খুলে যেতে পারে।
এই ভাঙ্গা বাসেই শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস থেকে শহরে আসা-যাওয়া করেন, প্রতিদিনের যাত্রা যেন এক অজানা অভিযানের মতো। তাদের এই যাত্রা যেন এক অবিরাম সংগ্রাম, যেখানে প্রতিটি পদক্ষেপে রয়েছে অনিশ্চয়তা ও ঝুঁকি।
এমনই এক বাস্তবতার মধ্যে দিয়ে শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষা জীবন অতিবাহিত করছেন, যেখানে প্রতিটি দিনই নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়। এসব নিয়ে কথা বললেই নোটিশ দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয় বাস চলাচল
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীরা যে সকল সুবিধা পেয়ে থাকে, তার মধ্যে অন্যতম হলো পরিবহণ ব্যবস্থা। কিন্তু যখন সেই পরিবহণ ব্যবস্থা শুধু একটি মাত্র ২৫ সিট এর মিনি বাস দিয়ে নিজেদের দায়সারা করে, শিক্ষার্থীদের মনে তা সৃষ্টি করে ক্ষোভ এবং হতাশা। আমরা পবিপ্রবি বরিশাল ক্যাম্পাসে প্রায় ৫০০ শিক্ষার্থী আছি। বিভিন্ন প্রয়োজনে আমাদের শহরের উদ্দেশ্যে যেতে হয়। পুরো ক্যাম্পাসের জন্য একটি মাত্র ফিটনেসবিহীন ভাঙ্গা বাস কখনোই আমাদের কাছে কাম্য নয়। অনেক সময় রাস্তায় চলন্ত অবস্থায় নষ্ট হয়ে যায় এই বাস, যা বিপাকে ফেলে শিক্ষার্থীদের। এক প্রকার লজ্জা হয় আমাদের এই বাসে যাতায়াত করতে। এর জন্য অবশ্যই পবিপ্রবি প্রশাসনের খামখেয়ালিপনাকে দায় করবো আমরা।
অন্য আরেকজন শিক্ষার্থী বলেন, প্রশাসনের ক্ষমতা নাই ছাত্রছাত্রীদের সুবিধা দেয়ার, কিছু বললে আবার যা আছে সেটাও বন্ধ করে দেয়া হয়। এত অবহেলা নিয়ে একটা বহিস্থ ক্যাম্পাস খুলে রাখার কি দরকার, ছাত্রছাত্রীদের সুযোগ সুবিধা না দিতে পারলে ক্যাম্পাস টাই বন্ধ করে দেন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্যাম্পাস থেকে মূল সড়ক পর্যন্ত সংকীর্ণ রাস্তাকে দায়ী করছে এই বাস সংকটের জন্য। তাদের মতে, এই রাস্তা দিয়ে বড় বাস প্রবেশ করানো সম্ভব নয়। তবে ভাঙ্গা ও ফিটনেসবিহীন গাড়ির ব্যাপারে কোনো স্পষ্ট বক্তব্য পাওয়া যায়নি। যদিও সড়কটির সম্প্রসারণের কাজ চলছে বর্তমানে, শিক্ষার্থীদের মধ্যে সন্দেহ বিরাজ করছে যে, রাস্তার কাজ শেষ হলেও তাদের পরিবহণ ব্যবস্থার উন্নয়ন হবে কিনা। শিক্ষার্থীরা আশঙ্কা করছেন, বড় বাসের নামে পুরোনো কোনো বাস দিয়েই তাদের মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :