গাইবান্ধার কামারপাড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক-কর্মচারী হাজিরা খাতায় স্বাক্ষরে বাঁধা দিয়ে প্রতিষ্ঠান থেকে জোরপূর্বক বের করে দেয়ায় দূর্বিসহ জীবন কাটাচ্ছেন শিক্ষক আনিছুর রহমান সরকার। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দপ্তরসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেও মিলছেনা প্রতিকার। এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া। মিলছে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য।
অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার কামারপাড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে গত ১৫-০৪-২০২৪ইং তারিখে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন আনিছুর রহমান সরকার। তৎকালীন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি তাকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করেন। তার স্বাক্ষরে এপ্রিল, মে, জুন/২০২৪ইং মাস পর্যন্ত শিক্ষক-কর্মচারীর বিল বেতনও প্রদান করা হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হলে প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবু তাহের মোঃ আব্দুস ছামাদসহ তার পক্ষীয় লোকজন চাকুরী নেই মর্মে হুমকি দিয়ে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষরে বাঁধা দিয়ে অসম্মানজনক আচরণ করে বের করে দেয়। এ ঘটনায় নিরুপায় শিক্ষক আনিছুর রহমান সরকার প্রতিকারের দাবীতে গত ০৩-০৯-২০২৪ইং তারিখে সাদুল্লাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দপ্তরসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন।
ভুক্তভোগী আনিছুর রহমান সরকারের দাবী, অভিযোগের পর সাদুল্লাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিষয়টি সমাধান পূর্বক বিল বেতনে স্বাক্ষর প্রদানের জন্য বললেও শিক্ষক আবু তাহের মোঃ আব্দুস ছামাদ তা এড়িয়ে চলছেন। ইএফটিতে নাম না পাঠানোর কারণে বিল-বেতনও হচ্ছে না। ফলে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে। উপরন্তু শিক্ষক আবু তাহের মোঃ আব্দুস ছামাদ বিদ্যালয়ে হাজিরা দিতে দিবে না মর্মে হুমকী দিয়ে আসছেন।
এ বিষয়ে শিক্ষক আবু তাহের মোঃ আব্দুস ছামাদ এর সাথে কথা হলে জানান, আনিছুর রহমান সরকার এ বিদ্যালয়ের একজন সাধারণ শিক্ষক হিসেবে অন্তর্ভূত ছিলেন। তিনি এ পদ থেকে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির নিকট অব্যাহতি নিয়ে এ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত গত ১৮-০১-২০২৪ইং তারিখের নিয়োগ পরীক্ষায় সহকারী প্রধান শিক্ষক পদের প্রার্থী ছিলেন। ম্যানেজিং কমিটির সদস্য পদে থেকে এ প্রতিষ্ঠানে চাকুরীর জন্য আবেদন করা অন্যায় ও অবৈধ প্রমাণিত হয়েছে।
বিদ্যালয়টিতে এমন ঘটনা ঘটায় এলাকায় দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। মিলছে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য। অনেকেই বলছেন, আনিছুর রহমান সরকার যদি গত ১৪-০৪-২০২৪ইং তারিখে সহকারী শিক্ষক পদ হতে অব্যাহতির পত্র ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে না দিয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির নিকট প্রদান করে থাকেন এবং সভাপতি যদি তা গ্রহণ করে থাকেন তবে তা হতে পারে নিয়মবহির্ভূত। নিয়মানুযায়ী বোর্ড থেকে অব্যাহতির অনুমোদন পত্র না থাকায় সহকারী প্রধান শিক্ষকের নিয়োগ প্রক্রিয়া ত্রুটিপূর্ণ এবং অবৈধ হলেও আনিছুর রহমান সরকারের সহকারী শিক্ষক পদ বহাল থাকার কথা। তার সহকারী শিক্ষক পদ বহাল থাকলে ইএফটিতে নাম না দিয়ে বিল-বেতন বন্ধ রাখাও দুঃখজনক।
সচেতন মহলের ধারনা, প্রশাসন তৎপর হলে সঠিক তদন্তে বেরিয়ে আসবে ঘটনার আসল নেপথ্য রহস্য। ঘটবে সৃষ্ট ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান।
আপনার মতামত লিখুন :