খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) হামলা চালিয়ে শিক্ষার্থীদের আহত করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও লাল কার্ড প্রদর্শন কর্মসূচি পালন করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ সময় ছাত্রদল, ছাত্রলীগ, বৈষমবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্রশিবির, ছাত্র ইউনিয়নসহ সব রাজনৈতিক দল এবং কুয়েট প্রশাসনকে লালকার্ড প্রদর্শন করেন শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ক্যাম্পাসের দুর্বার বাংলায় তারা লাল কার্ড দেখান ও বিভিন্ন স্লোগান দেন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘ছাত্র রাজনীতির ঠিকানা এই কুয়েটে হবে না’, ‘নো ছাত্রদল, নো ছাত্রশিবির, নো বৈবিছাআ, অনলি ছাত্র’, ‘রক্ত যখন ঝরছিল প্রশাসন তখন কই ছিল?, ‘নিরাপদ ক্যাম্পাস চাই’, ‘উই ওয়ান্ট নলেজ নো পলিটিকাল ড্যামেজ’, ‘শিক্ষার্থীর রক্ত ঝরে প্রশাসন তামাশা করে’, ‘ছাত্র রাজনীতি রেড কার্ড’, ‘বহিষ্কার বহিষ্কার জড়িতদের বহিষ্কার’, ‘দালালি না রাজপথ রাজপথ রাজপথ’, ‘তুমি কে আমি কে আবরার আবরার’, ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘দড়ি ধরে মারো টান ভিসি হবে খান খান’ ইত্যাদি প্ল্যাকার্ডের সঙ্গে স্লোগান দেন।
এছাড়াও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার, ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকার সিদ্ধান্ত কার্যকর এবং কুয়েটের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও ছাত্র কল্যাণ পরিচালক পদে নতুন নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানান। লাল কার্ড প্রদর্শন শেষে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি ক্যাম্পাসের ভেতরের সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে।
এদিকে কুয়েটের সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বন্ধ রয়েছে একাডেমিক কার্যক্রম। যা অব্যাহত থাকবে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। ক্যাম্পাসের গেটে মোতায়েন রয়েছে পুলিশ।
এদিকে কুয়েটের সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তে গঠিত চার সদস্যের কমিটি তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছে। তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যাপক ড. এম এ হাশেম বলেন, আমরা সকাল থেকে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছি। বেশ কিছু তথ্য প্রমাণ পেয়েছি। তদন্তের জন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলবো। তবে প্রশাসনিক ভবন এবং একাডেমিক ভবনগুলো তালাবদ্ধ থাকায় কার্যক্রম কিছুটা বিঘ্নিত হচ্ছে। তিনি তদন্ত কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা কামনা করেন।
কুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ বলেন, শিক্ষার্থীদের সব দাবি পূরণ করা হয়েছে। আশা করি শিক্ষার্থীরা শিগগিরই ক্লাসে ফিরবে। তাদের সব দাবি তো পূরণ করেছি, এ কারণে আমি পদত্যাগ করছি না। শিক্ষার্থীদের ধাক্কাধাক্কিতে আমি আঘাতপ্রাপ্ত হই। এছাড়া একদিন অবরুদ্ধ ছিলাম।
অন্যদিকে কুয়েটে সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। কুয়েুটের নিরাপত্তা পরিদর্শক মনিরুজ্জামান লিটন বাদী হয়ে বুধবার রাতে খানজাহান আলী থানায় মামলাটি করেন। মামলায় অজ্ঞাত পরিচয় ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি নিয়ে বিরোধের জের ধরে গত মঙ্গলবার কুয়েটে ছাত্রদলের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক আহত হন।
আপনার মতামত লিখুন :