জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই ২০২৪ - মার্চ ২০২৫) রাজস্ব আদায়ে বড় ধাক্কা খেয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে আনা সত্ত্বেও তা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে সংস্থাটি। সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ৩ লাখ ২২ হাজার ১৫২ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্য থাকলেও, আদায় হয়েছে মাত্র ২ লাখ ৫৬ হাজার ৪৮৬ কোটি টাকা, ঘাটতি ৬৫ হাজার ২৬৫ কোটি টাকা।
বছরের শুরুতে পুরো অর্থবছরের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা, যা পরে কমিয়ে আনা হয় ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ কোটিতে। তবে এই সংশোধিত লক্ষ্যও অর্জনের সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে পড়েছে। কারণ, শেষ তিন মাসে লক্ষ্যমাত্রা পূরণে আদায় করতে হবে ২ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকার বেশি—যা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং, এমনকি অনেকের মতে প্রায় অসম্ভব।
এদিকে, আইএমএফ (আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল) তাদের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি ছাড়ের পূর্বশর্ত হিসেবে জুনের মধ্যে ৪ লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের শর্ত জুড়ে দিয়েছে। কিন্তু চলমান পরিস্থিতিতে সেই লক্ষ্যও পূরণ না হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এনবিআরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রথম নয় মাসে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রাজস্ব আদায়ের হার দাঁড়িয়েছে ৭৯.৬২ শতাংশ। আয়কর, শুল্ক ও মূসক (ভ্যাট) খাতে সামান্য প্রবৃদ্ধি থাকলেও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা ছোঁয়া যায়নি।
নির্দিষ্ট খাতের চিত্র নিম্নরূপ:
মূসক (ভ্যাট): আদায় হয়েছে ৯৫ হাজার ৩১১ কোটি টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৯ হাজার ৪৩৮ কোটি টাকা কম। প্রবৃদ্ধি মাত্র ২.০৯%।
শুল্ক: আদায় ৭৪ হাজার ২৫৫ কোটি টাকা, ঘাটতি ১৬ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধি মাত্র ০.৩৮%।
আয়কর: আদায় হয়েছে ৮৬ হাজার ৯২০ কোটি টাকা, ঘাটতি ২৯ হাজার ৭৫৫ কোটি টাকা। এখানে প্রবৃদ্ধি তুলনামূলক ভালো ৫.৬৭%।
এনবিআর জানায়, শুধু মার্চ মাসেই রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪২ হাজার ৯৩ কোটি টাকা, কিন্তু আদায় হয়েছে ৩৪ হাজার ৬৭০ কোটি টাকার মতো ৭ হাজার ৪২৩ কোটি টাকার ঘাটতি। তবে ইতিবাচক দিক হলো, আগের অর্থবছরের মার্চের তুলনায় এবার রাজস্ব প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯.৬৪%।
আপনার মতামত লিখুন :