গত মাসে (মার্চ) বৈধপথে ব্যাংকিং চ্যানেলে ৩২৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় এসেছে বাংলাদেশে। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ৪০ হাজার কোটি টাকার বেশি (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে)। একক কোনো মাসে এত পরিমাণ রেমিট্যান্স এর আগে কখনো আসেনি বাংলাদেশে।
এর আগে, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে প্রবাসীদের পাঠানো ২৬৪ কোটি ডলার ছিল একক কোনো মাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স। তারও আগে, ২০২০ সালের জুলাই মাসে ২৬০ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল।
রবিবার (৬ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্টরা জানান, অর্থপাচারে বর্তমান সরকার কঠোর অবস্থান নিয়েছে। ফলে হুন্ডি-সহ বিভিন্ন অবৈধ চ্যানেলে টাকা পাঠানো কমে গেছে, বৈধপথে রেমিট্যান্স আহরণ বেড়েছে। এছাড়া মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে পরিবার-পরিজনের বাড়তি খরচের কথা মাথায় রেখে বেশি বেশি অর্থ পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। যার কারণে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স পেয়েছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, মার্চ মাসে দৈনিক গড়ে রেমিট্যান্স এসেছে ১০ কোটি ৬১ লাখ ডলার। গত বছরের মার্চে দৈনিক গড়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ৬ কোটি ৪৪ লাখ ডলার। সে হিসেবে গত মাসে আগের বছরের মার্চের তুলনায় রেমিট্যান্সে ৬৪.৭০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। ২০২৪ সালের মার্চে রেমিট্যান্স এসেছিল প্রায় ২০০ কোটি ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত প্রবাসীরা মোট ২ হাজার ১৭৮ কোটি ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৭.৬০ শতাংশ বেশি। আগের অর্থবছরে একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল এক হাজার ৭০৮ কোটি মার্কিন ডলার।
উল্লেখ্য, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার, নভেম্বর মাসে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে এসেছে ২৬৪ কোটি ডলার। এরপর জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি, ফেব্রুয়ারি মাসে ২৫২ কোটি ৮০ লাখ ডলার এবং মার্চে ৩২৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। অর্থাৎ বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর টানা ৭ মাস দুই বিলিয়ন এবং মার্চে তিন বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে বাংলাদেশে।
আপনার মতামত লিখুন :