বগুড়ার সোনাতলা উপজেলায় গত বেশকিছু দিন ধরেই বিভিন্ন গ্রামের গরু চোরের উপদ্রপ বৃদ্ধি পেয়েছে। গৃহপালিত পশুদের চোরের হাত থেকে রক্ষায় নিদ্রাহীন রাত কাটাচ্ছেন অনেক মানুষ। তবে গত শনিবার রাত সাড়ে দশটার দিকে হঠাৎ আগুনিয়াতাইর মসজিদের মাইকে শোনা গেলো সজাগ থাকুন গরু চোর ঢুকেছে। এরপর থেকে স্থানীয় মানুষ ধীরে ধীরে জমায়েত হয়।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, গত শনিবার রাতে কামারপাড়ায় গরু চুরির উদ্দেশ্যে ঢুকেছে জনৈক এক ব্যক্তির গোয়াল ঘরে। এসময়ে স্থানীয় জনগণ চোরদেরকে ধাওয়া করলে তারা দিকবিদিক ছুটাছুটি করে। কিছুক্ষণ পর একজন চোরকে স্থানীয়রা ধরে জনৈক সাবেক এক কাউন্সিলর এর বাড়িতে আটকিয়ে রাখে। সেই গরুচোর হলো গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সিট-বিশুরপাড়া গ্রামের মৃত মজিবর রহমানের ছেলে মোঃ আমিনুল ইসলাম (বিপুল)। মুহুর্তে বিষয়টি জানাজানি হলে পার্শ্ববর্তী গ্রামের আগুনিয়াতাইর পূর্বপাড়া নামজাদা জামে মসজিদের মোয়াজ্জেম নিজ নিজ ঘরের গরুদের নিরাপদ রাখতে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মাইকে ঘোষণা দেয় বলে স্বীকার করেন মসজিদ কমিটির সহ-সভাপতি জহুরুল ইসলাম মন্ডল (শেফা)। এদিকে চোরকে ধরেই স্থানীয় জনতা তাদের ঘরের গৃহপালিত গরু ছাগল চুরির হয়েছে এমন ক্ষোভ থেকে যে যেভাবে পারে তাদের ক্ষোভ কিছুটা হলেও পিটিয়ে মিটান।
এদিকে থানা পুলিশ বিষয়টি জানতে পেরে কামারপাড়ায় উপস্থিত হয়ে শত শত উত্তেজিত জনতাকে ওসি বুঝিয়ে শান্ত করে পরিবেশটা নিয়ন্ত্রনে আনেন। এরপর গরু চোর বিটুলকে গুরুত্বর আহত অবস্থায় থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। আগুনিয়াতাইর গ্রামের রনি ও এরশাদুল ইসলাম বলেন, আমাদের গ্রামের ছোট বড় মিলিয়ে ৩/৪'শ পরিবারের ৬/৭'শ গরু আছে। তবে এ বছরে কয়েকটি গরু চুরিকে কেন্দ্র করে আমরা গ্রামবাসীরা নিদ্রাহীন রাত্রী যাপন করছি। তিনি আরো বলেন ২৫দিন পূর্বেও চোর ঢুকেছে সাবধান থাকতে মসজিদের মাইক থেকে সাবধান বাণী প্রচার করা হয়েছিল। আগুনিয়াতাইর গ্রামের বিএনপি নেতা ও আগুনিয়াতাইর নামজাদা জামে মসজিদের সহ-সভাপতি জহুরুল ইসলাম মন্ডল শেফা মাইকে ঘোষণা দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে মোয়াজ্জেমকে বলা আছে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মসজিদের মাইকে জানানোর জন্য। যার ফলশ্রুতিতে গত শনিবার রাত সাড়ে দশটার দিকে শোনা গেল পার্শ্ববর্তী কামারপাড়ায় গরু চুরির উদ্দেশ্যে চোর ঢুকেছে। মসজিদের মাইকে জানার পর প্রায় ৪/৫'শ মানুষ হাসপাতাল রোডে অবস্থান নেয়।
একপর্যায়ে জানা যায় কামারপাড়ায় গরুচোর ধরা পড়েছে। তাৎক্ষণিক আমাদের এখানে থানার ওসি সাহেব এসে পরিস্থিতি শান্ত করে। পরে আমি ওসি সাহেবের সাথে কামারপাড়ায় গিয়ে দেখি প্রায় ৮/৯'শ স্থানীয় জনতা উপস্থিত। পরে আমরা সহ স্থানীয়রা গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উত্তেজিত জনতাকে বুঝিয়ে শান্ত করে গরু চোরকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
এদিকে কামারপাড়ার স্থানীয়রা জানান, গত ক'দিন আগে অনেকেরই বেশকয়েকটি মুল্যবান গরু চুরি করে চোরেরা।
এবিষয়ে সোনাতলা থানার অফিসার ইনচার্জ মিলাদুন নবী চোরকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, কামারপাড়ায় উত্তেজিত জনতাকে সুন্দর ভাবে বুঝিয়ে গরু চোর বিটুলকে গুরুত্বর আহত অবস্থায় থানায় নিয়ে আসি। বিটুলের শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ার কারণে তাকে পুলিশি পাহারায় বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং সে সুস্থ্য হলে আইনাগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :