রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় একাধিক স্পটে চলছে মাদকের রমরমা ব্যবসা এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিনব কায়দায় কৌশল পরিবর্তন করে চালিয়ে যাচ্ছে মাদকের রমরমা বাণিজ্য। এর মধ্যে মাদক বিক্রির অন্যতম স্পটগুলির মধ্যে উপজেলার হাটগাঙ্গপাড়া, তেলিপুকুর গাঙ্গপাড়া, সাঁকোয়া শিদকারি, ভবানিগঞ্জ দেউলিয়া, মোহনগঞ্জ তাহেরপুর পৌরসভা এলাকায় চলছে মাদকের রমরমা ব্যবসা।
শীর্ষ মাদক স্পর্ট হিসাবে পরিচিত সাঁকোয়া শিকদারি বাজারের তেল পাম্পের পিছনে ও গাঙ্গপাড়া বাজার এলাকা। উপজেলার শিকদারি বাজারে তেল পাম্পের পিছনে প্রকাশ্যে বিক্রি করা হচ্ছে ইয়াবা, ফেনসিডিল, হেরোইন, গাঁজা। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত শিকদারি তেল পাম্পের পিছনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ও আত্রাই, নলডাঙ্গা উপজেলা থেকে শতাধিক মটরসাইকেল নিয়ে মাদক সেবন করতে আসছে একাধিক যুবকসহ বিভিন্ন শ্রেনি পেশার মানুষ।
শিকদারি সাঁকোয়া গ্রামের মৃত আসেক আলীর ছেলে শীর্ষ মাদক সম্রাট মাহাবুর ও তার স্ত্রী মোছা আছিয়া বিবি এসব মাদক বিক্রি করছে। মাহাবুরকে বেশ কিছুদিন আগে হেরোইনসহ গ্রেপ্তার করে পুলিশ এবং তার স্ত্রীকে ফেনসিডিলসহ গ্রেপ্তার করেছিলো জেলা ডিবি পুলিশ। কিছু দিন জেল হাজতে থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে ফের ব্যপরোয়া হয়ে মাদকের রমরমা ব্যবসা করছে এই দম্পত্তি।
অভিযোগ রয়েছে, প্রশাসনকে ম্যনেজ করে তারা মাদক কারবারি করছে দীর্ঘদিন যাবত। তাদের মাদক কারবারের বিরুদ্ধে কে প্রতিবাদ করলে হুমকি ও মামলা দিয়ে হয়রানির ভয় দেখায় তারা। এ কারণে কেউ তাদের মাদক কারবারের প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না।
অপরদিকে বাগমারা উপজেলার তেলিপুকুর গাঙ্গপাড়া বাজারে চলছে প্রকাশ্যে ফেনসিডিল বিক্রি। দিন রাত ২৪ ঘন্টা চলে মাদকের রমরমা ব্যবসা। প্রকাশ্যে সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত তেলিপুকুর গাঙ্গপাড়া মোড়ে শতাধিক মাদক সেবীরা ওই স্পর্টে গিয়ে মাদক সেবন করছে। সেখানে ইয়াবা ১ পিচ ৩০০ টাকা, ফেনসিডিল ১ পিচ ১৮০০ টাকা, হেরোইন ২০০ টাকা ও গাঁজা ১৫০ টাকা পুরিয়া বিক্রি করেন ওই এলাকার মাদক সম্রাট জামিল।
জামিল দীর্ঘদিন যাবত মাদক কারবার করলেও প্রশাসনের ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে। কিছু দিন আগে মাদক সম্রাট জামিলের লোক কালাম ও উজ্জলকে মাদকসহ গ্রেপ্তার করে বাগমারা থানা পুলিশ। তবে জামিল মুল মাদক ব্যবসায়ী হয়েও ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। এছাড়াও হাটগাঙ্গপাড়া কাঁনাইশহর এলাকার সাহেব আলীর দুই ছেলে মাদক ব্যবসায়ী আতাবুল ও তার ছোট ভাই আসাদুল। সে ওই এলাকার শীর্ষ মাদক কারবারি হিসাবে চিহ্নিত।
দীর্ঘদিন যাবত আতাবুল ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে মাদক সিন্ডিকেট পরিচালনা করছে। স্থানিয়দের অভিযোগ, প্রশাসনকে ম্যনেজ না করে এভাবে প্রকাশ্যে মাদক কারবার করা সম্ভব না। দ্রুত এসব মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে যুবসমাজ ধংস হয়ে যাবে। এভাবে প্রকাশ্যে মাদক বিক্রির ফলে মাদক সহজলভ্য হওয়ায় স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছে।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এ উপজেলায় মাদক কারবারিরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। সাম্প্রতিক কিছু মাদক বিরোধী অভিযানে থানা পুলিশ ও তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ কিছু মাদক কারবারিদের মাদকসহ গ্রেপ্তার করলেও মাদকের গটফাদাররা রয়ে গেছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে।
বাগমারা থানার অফিসার তৌহিদুল ইসলাম বলেন, থানা এলাকায় কোন মাদক ব্যবসা থাকবে না। মাদকের বিরুদ্ধে থানা পুলিশের অভিযান অব্যহত রয়েছে। যারা ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে তাদের দ্রুত গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে। দ্রুত সকল মাদক কারবারিদের গ্রেপ্তার করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয় রাজশাহী জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) রফিকুল আলম বলেন, জেলা পুলিশের মাদক বিরোধী অভিযান অব্যহত রয়েছে। প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন থানা, তদন্ত কেন্দ্র ও জেলা ডিবি পুলিশ মাদক বিরোধী অভিযানে মাদকসহ মাদক কারবারিদের গ্রেপ্তার করে নিয়মিত মাদক মামলা হচ্ছে। রাজশাহী জেলায় তালিকা ভূক্ত মাদক কারবারিদের পুলিশ নজর দারিতে রেখেছে।
আপনার মতামত লিখুন :