ভোলার লালমোহন উপজেলায় চরভুতা ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের হরিগঞ্জ এলাকার হিম্মত আলী বাড়ির বাসিন্দা আব্দুল আলী (৭০)। প্রতিবেশীর ইলিয়াস গংদের সাথে জমি নিয়ে মারামারি হয়। এসময় আব্দুল আলীকে ইলিয়াস গংরা বুকের উপর আঘাত করেন।
পরে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের কাছ থেকে ব্যাথার ঔষধ নেন আব্দুল আলী। ওইদিন রাতে ১টার দিকে বুকের ব্যথা নিয়ে লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন আব্দুল আলী। এর কিছুক্ষণ পরে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। মারামারির সময় প্রতিবেশী ইলিয়াছ বুকে আঘাত করেন এমন গুঞ্জন থাকলেও মৃত্যুর পর ওই বৃদ্ধের স্ত্রী ও ছেলেরা কোনো অভিযোগ না করে মরদেহ নিয়ে দাফনও করেন।
তবে এ ঘটনার ১০ দিন পর আব্দুল আলীর স্ত্রী, ছেলে ফারুক, হারুন ও শাহাবুদ্দিন পিতাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলনে করেন।
সংবাদ সম্মেলনে তারা দাবি করে বলেন, মৃত্যুর আগের দিন প্রতিবেশী ইলিয়াছসহ কয়েকজন মিলে বাড়ির পাশের জমিতে আব্দুল আলীর ছুড়ির বাট, লাঠি ও কিল-ঘুষিদেন বুকে উপর এতে আঘাত পান বুকে।
আব্দুল আলীর বড় ছেলে ফারুক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে বলেন, ঘটনার সময় আমি চট্টগ্রাম ছিলামে। যার কারণে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া যায়নি। তবে এখন পরিবারের সবার সিদ্ধান্তে মামলা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। এ ঘটনায় যদি থানায় মামলা না নেয় তাহলে আমরা আদালতে মামলা দায়ের করবো।
মেজো ছেলে হারুন বলেন,ওই সময় বাবার ওপর হামলার খবর শুনে আমি ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে যাওয়ার পর আমাকে দুইজন আটকে রেখে ইলিয়াছ তার বাবার বুকে ছুড়ির বাট দিয়ে আঘাত করেন। এর ঐইদিন দিবাগত রাতে ১টার দিকে আমার বাবা বুকে প্রচণ্ড ব্যথা শুরু হয়। পরে তাকে লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে ওই রাতেই এক ঘণ্টা পর আমার বাবা মৃত্যু হয়।
বৃদ্ধ আব্দুল আলীর স্ত্রী ছায়েদা খাতুন জানান, ময়নাতদন্ত করলে আমার স্বামীর দেহ কাঁটাছেঁড়া করা হবে; যার জন্য ছেলেদের থানায় কোনো অভিযোগ করতে দেইনি। এছাড়া ইলিয়াছ এসে আমার পায়ে ধরে অনুরোধ করেছিল যেই জমি নিয়ে বিরোধ সেই জমি আমাদের দিয়ে দেবে। এসব কারণে মৃত্যুর পর আর থানায় কোনো অভিযোগ দেওয়া হয়নি।
বৃদ্ধকে হত্যার বিষয়ে ইলিয়াছের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আব্দুল আলী আমার চাচা হয়। চাচাকে আমি কোনো আঘাতই করিনি। আমি জমিতে গরুর খামার করতে গেলে চাচা আব্দুল আলী বাধা দেন। থানা থেকে পুলিশও নেন। পরে জমি মাপার তারিখ হয়। ঘটনা কেবল এতটুকুই।
এ বিষয়ে লালমোহন থানার ওসি এসএম মাহবুব উল আলম বলেন, ওই বৃদ্ধের মৃত্যুর পর পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ করা হয়নি। তবে এখন একটি অভিযোগ পেয়েছি আমরা। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
আপনার মতামত লিখুন :