ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার স্বর্ণের দোকানগুলোতে যত্রতত্র সোনা পরিশোধন করা হচ্ছে, যা পরিবেশ ও মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব দোকানে আধুনিক পরিশোধন পদ্ধতির অভাব এবং পুরনো প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে সোনা পরিশোধন করতে গিয়ে বিষাক্ত গ্যাস এবং রাসায়নিক পদার্থ নির্গত হচ্ছে, যা আশেপাশের পরিবেশ ও জনগণের শারিরিক স্বাস্থ্যকে গুরুতর ক্ষতির সম্মুখীন করছে।
উপজেলার প্রায় প্রতিটি স্বর্ণের দোকানে সোনা পরিশোধন করতে ব্যবহৃত পুরনো পদ্ধতিতে বিষাক্ত গ্যাসের সৃষ্টি হচ্ছে। এই গ্যাসগুলো বায়ুতে ছড়িয়ে পড়ছে এবং শ্বাসকষ্ট, ফুসফুসের সমস্যা, মাথাব্যথা ও চোখে জ্বালাপোড়া সহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করছে। বিশেষত, দোকানগুলোর আশেপাশের বসবাসরত মানুষ এর প্রভাব থেকে মুক্ত নয়।
স্বর্ণের দোকানগুলোতে সোনা পরিশোধন করতে ব্যবহৃত রাসায়নিক পদার্থ মাটিতে বা নর্দমায় চলে যাচ্ছে, যার ফলে স্থানীয় জলাশয় ও মাটি দূষিত হচ্ছে। এই দূষিত পানি কৃষি ক্ষেতে পৌঁছানোর কারণে কৃষকের উৎপাদন কমে যাচ্ছে এবং খাদ্য সুরক্ষাও হুমকির মুখে পড়ছে। একই সাথে নদীতে মাছের প্রজনন ক্ষমতা ধ্বংস হচ্ছে।
স্বর্ণের দোকানগুলোর কর্মচারী এবং আশপাশের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে এই বিষাক্ত গ্যাস এবং দূষিত পানি থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন যে, দীর্ঘমেয়াদী এসব বিষাক্ত পদার্থের সংস্পর্শে আসলে শ্বাসযন্ত্রের রোগ, ত্বকের সমস্যা এবং কিডনি সহ গুরুতর শারিরিক সমস্যা হতে পারে।
এখন পর্যন্ত বাঞ্ছারামপুর উপজেলার স্বর্ণের দোকানগুলোর অধিকাংশে পরিবেশগত ছাড়পত্র নেই। ফলে পরিবেশের ক্ষতি হওয়া সত্ত্বেও কোনো কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রতি দাবি উঠেছে, অবিলম্বে এসব দোকানে আধুনিক সোনা পরিশোধন প্রযুক্তি প্রয়োগ করা এবং পরিবেশগত ছাড়পত্র ছাড়া কোনো দোকান কার্যক্রম চালাতে না দেওয়া।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, স্বর্ণের দোকানগুলোতে আধুনিক এবং পরিবেশবান্ধব সোনা পরিশোধন পদ্ধতি চালু করলে পরিবেশ ও মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষিত থাকতে পারে। এ জন্য সরকারের উচিত, সঠিক আইন প্রয়োগ করা এবং স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সঠিক পদ্ধতি ব্যবহার করতে বাধ্য করা।
আপনার মতামত লিখুন :