Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা সোমবার, ২০ জানুয়ারি, ২০২৫, ৭ মাঘ ১৪৩১

বিশ্বনাথে উৎসবমুখর পরিবেশে পলো বাওয়া উৎসব পালিত 


দৈনিক পরিবার | মো. আব্দুল কাইয়ুম জানুয়ারি ১৬, ২০২৫, ১২:৪০ পিএম বিশ্বনাথে উৎসবমুখর পরিবেশে পলো বাওয়া উৎসব পালিত 

আবহমান বাংলার চিরচেনা উৎসব "পলো বাওয়া”। গ্রাম বা হাওরাঞ্চলে একসময় জনপ্রিয় উৎসব থাকলেও এখন তা হারিয়ে যাচ্ছে।তবে প্রায় তিনশত বছর ধরে এই ধারা অব্যাহত রেখেছে বিশ্বনাথের গোয়াহরী গ্রামবাসী।প্রতিবছর পহেলা মাঘ এই উৎসব পালন করেন আসছেন তারা।
একসময় গ্রামজুড়ে র্বষা মৌসুম শেষে শীতকে উপক্ষো করে বাঁশ দিয়ে তৈরি পলো দিয়ে নদী-নালা ও খালবিলে সারিবদ্ধভাবে মাছ শিকার করতে দেখা যেতো মানুষদের। কিন্তু কালের বির্বতনে হারিয়ে যেতে বসেছে এই পলো বাওয়া উৎসব। তবে বিলুপ্তির পথে গ্রামীণ এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে সিলেটের বিশ্বনাথের উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে মাছ ধরার উৎসব ‘পলো বাওয়া’ পালিত হয়েছে।
বুধবার (১৫ জানুয়ারী) উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের গোয়াহরি গ্রামের দক্ষিণের (বড়) বিলে গ্রাম বাংলার পুরোনো পলো বাওয়া  উৎসব সকাল ১১টা থেকে পালিত হয়েছে।  সবাই এক সঙ্গে বিলে  নেমে পড়েন। এতে সৌখিন হাজারো মাছ শিকারী অংশ নেয়। 
এই উৎসবে আশপাশের গ্রামের নানা বয়সের লোকজন, শিশু থেকে বৃদ্ধ যে যার মতো পলো বাওয়া উৎসবে মেতে ওঠেন।অনেকেই আবার এই দিনকে উদ্দেশ্য করে প্রবাস থেকে ছুটিতে আসেন মাছ ধরতে। বিলের মধ্যে নানা বয়সের মানুষ মাছ ধরতে নামলে তাদের মাছ ধরা দেখতে পাশে দাঁড়িয়ে থাকেন শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের লোকজন। স্বল্প পানি ও কচুরিপানা না থাকায় মাছ নিয়ে ঘরে ফিরছেন অনেকই। শিকার করা মাছের মধ্যে ছিল বোয়াল, শোল, মিরকা, কারপু, বাউস, ঘনিয়া ও রুইসহ বিভিন্ন জাতের ছোটবড় মাছ।
স্থানীয় গোয়াহরি গ্রামের মুরব্বি ছুরত খান বলেন, এই উৎসব আনুমানিক তিনশত বৎসর ধরে চলে আসছে। মাঘ মাসের প্রথম দিনে প্রতি বৎসর গ্রামবাসী ঐকবদ্ধ ভাবে উৎসব মূখর পরিবেশে এ ঐতিহ্য পালন করে আসছেন। তবে আগের মত মাছ পাওয়া যায় না, মাছ না পেলেও আনন্দ ও ঐতিহ্য ধরে রাখতে পঞ্চয়াতের সিদ্ধান্ত মোতাবেক এই উৎসব পালন করি। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে দূর দূরান্তের আত্মীয়-স্বজন বাড়ীতে আসেন।
শিক্ষার্থী মোস্তাকিম বলেন, নতুন প্রজন্মের কাছে এটি একটি গৌরবময় ইতিহাস বহন করে। আমরা প্রতিবছর অপেক্ষায় থাকি এই দিনে মাছ ধরবো, আনন্দ করবো। সব মিলিয়ে গ্রামবাসী একটা মিলন মেলায় মেতে উঠেন।
গ্রামের তরুণ নজির খান বলেন, আমরা মাছগুলো একা খাব না, যাদের ঘরে মাছ ধরার মানুষ নেই বা প্রবাসে তারাও আমাদের কাছ থেকে একটা অংশ পায়।
প্রতিবছর তাদের মুরব্বিদের রেখে যাওয়া এই স্মৃতি যেন পালন করা হয় এবং এই ধারা যেন অব্যাহত থাকে এমনটাই প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।
পলো বাওয়া উৎসব দেখতে দূর-দূরান্ত এবং আশ পাশের গ্রামের শত শত মানুষ ও সাংবাদিকবৃন্দ বিলের পাড়ে উপস্থিত হয়ে উৎসব উপভোগ করেন।

Side banner