বাবুই পাখি নিয়ে অনেক কবিতা, গান ও ছড়া থাকলেও নেই শুধু বাবুই পাখির কিচিরমিচির ডাক। দেশ থেকে পাখিটির বাসস্থান তালগাছ, নারিকেল গাছ ও খেজুর গাছ হারিয়ে যাওয়াসহ পাখি শিকারী ও নানা কারণে নির্বিচারে পাখি হত্যার কারণেই বাবুই পাখি বিলুপ্তির পথে চলে যাওয়ায় শোনা যায় না তার কিচিরমিচির ডাক।
সাধারণত: তালগাছ, নারিকেল গাছ, খেজুর গাছ, বসতবাড়ীর দেয়ালের ফাঁকে, কার্নিশের নিচেসহ বিভিন্ন যায়গায় বাবুই পাখি বাসা বেঁধে থাকলেও গ্রামের মাঠ, বিল, পুকুর ও নদীর ধারে এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকা তালগাছ কমে যাওয়ার সাথে সাথে হারিয়ে যেতে বসেছে শিল্পী মনা বাবুই পাখি। নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন, কৃষি ফসলে কীটনাশকের ব্যবহার, শিকারীদের দৌরাত্ম, অপরিকল্পিত ভাবে বাড়ি নির্মাণের ফলে জনবসতি বৃদ্ধি পাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুপ প্রভাবে বিলুপ্ত হতে চলেছে বাবুই পাখি বলে মন্তব্য করেন জেলার গাংনী উপজেলার টেংরামারী দাখিল মডেল মাদ্রাসার সুপার ফিরোজুল ইসলাম সিদ্দিকী।
ধানখোলা গ্রামের জাহিদুল ইসলাম জানান, তাদের বাড়ীর পাশে কয়েকটি তালগাছে বাবুই পাখি বাসা বাঁধলেও এখন আর তার দেখা মেলেনা। ঝড় বৃষ্টিতে বাসা খুলে পড়া ও পাড়াতে মানব জাতীর ঘনবসতিসহ নানা কারণে সেখানের বাবুই পাখি অন্যত্র চলে গেছে।
এছাড়াও পূর্বে জেলার বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলের অধিকাংশ বসতবাড়ীর নারিকেল গাছ ও রাস্তার পাশের তালগাছ গুলোতে বাবুই পাখির অসংখ্য বাসা দেখা গেলেও মেলেনি একটি বাবুই পাখিরও দেখা।
এমনি ভাবে জেলার নওপাড়া, লক্ষ্মীনারায়নপুর, হাড়াভাঙ্গা, ষোলটাকা, জুগিরগোফা, ধানখোলা, হোগলবাড়ীয়া চৌগাছা, চিৎলা, গাড়াডোব, হরিরামপুর, গোভীপুর, হিজুলী, রাজনগর, আমঝুপি, কুতুবপুর ও কেদারগঞ্জসহ অধিকাংশ এলাকায় বাবুই পাখি ও তার বাসা দেখা গেলেও তা আজ বিলুপ্তির পথে। শুধু বাবুই পাখিই নয় মাঠ-ঘাট, খাল-বিল, ডোবাসহ জঙ্গলের সকল ধরনের পাখি আজ বিলুপ্তির পথে। শীতের আগমনী বার্তায় দেশের বাইরে থেকে আসা অতিথি পাখির দেখা মেলাও দুরূহ ব্যাপার। অতিমাত্রায় বনভূমি ধ্বংস করার কারণে জীববৈচিত্র্য বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। যে কারণে হারিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি।
সরকারি নির্দেশনায় পাখি নিধন ও তাদের আবাসস্থল ধ্বংসকারীদের কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে। এর সঠিক প্রয়োগ ও রাস্তার দু'পাশে গাছ লাগিয়ে পাখিদের জন্য নিরাপদ আশ্রয় গড়ে তোলা সম্ভব বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করেন।
আপনার মতামত লিখুন :