কালনা, নড়াইল এবং যশোর হয়ে বেনাপোলের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনকারী মহাসড়কটি অপ্রশস্ত থাকার কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। সড়কটি দেশের গুরুত্বপূর্ণ একটি রুট হলেও এর বর্তমান অবস্থা কোনোভাবেই "মহাসড়ক" হিসেবে বিবেচনার যোগ্য নয়। এলাকাবাসীর দাবি, এ সড়কটি দ্রুত প্রশস্ত করে যানবাহন চলাচলের উপযোগী করা হোক।
সড়কটি সরু ও জরাজীর্ণ হওয়ায় নিয়মিত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। এতে প্রাণ হারাচ্ছেন সাধারণ মানুষ, অনেকে গুরুতর আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করছেন। বিশেষ করে পদ্মা সেতু ও মধুমতি সেতু চালু হওয়ার পর থেকে এ সড়কে ভারী যানবাহনের চাপ কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। এতে দুর্ঘটনার হার আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
নড়াইল সদর এলাকার বাসিন্দা আব্দুল হাকিম জানান, আমার ছেলে সড়ক দুর্ঘটনায় পা হারিয়েছে। এই সড়কটি প্রশস্ত না করা হলে আরও অনেক পরিবারকে এমন দুর্বিষহ পরিস্থিতি মেনে নিতে হবে।
স্থানীয় জনগণ দীর্ঘদিন ধরে এ সড়কের উন্নয়নের জন্য মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে আসছেন। সড়কটি জরিপ করার নামে বিভিন্ন সময় সরকারি দপ্তরগুলো কার্যক্রম চালালেও আজ পর্যন্ত কোনো বাস্তব পদক্ষেপ দেখা যায়নি। স্থানীয় এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ সড়কে যাতায়াত করি। সরকারের কাছে অনুরোধ, দ্রুত সড়কটি প্রশস্ত করুন।
পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর ঢাকা থেকে যশোর হয়ে বেনাপোল পর্যন্ত পরিবহন ব্যবস্থা আরও সক্রিয় হয়েছে। ফলে এ মহাসড়কে শুধু ব্যক্তিগত গাড়ি নয়, দূরপাল্লার বাস ও ট্রাকের চাপও বেড়েছে। সরু সড়কের কারণে এসব যানবাহন একে অপরকে ওভারটেক করার সময় প্রায়ই দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
সড়ক বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, সড়কটি সম্প্রসারণের জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তবে বাজেটের অভাবে কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে এলাকাবাসীর দাবি, দ্রুত এ সড়কের উন্নয়ন কাজ শুরু না হলে তারা বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মহাসড়কগুলোর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই কালনা-নড়াইল-যশোর মহাসড়কটি উন্নয়নের আওতায় আনা এখন সময়ের দাবি। প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত পদক্ষেপই পারে দুর্ঘটনার মিছিল থামিয়ে সাধারণ মানুষের জীবন নিরাপদ করতে।
এখন সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার। না হলে জনদুর্ভোগের পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতিতেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
আপনার মতামত লিখুন :