Daily Poribar
Bongosoft Ltd.
ঢাকা শুক্রবার, ০১ নভেম্বর, ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১
জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জম আহমদ এর অনুপ্রেরণায়

গাইবান্ধায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্ররা চালু করেছেন জনতার বাজার


দৈনিক পরিবার | শাহিন নুরী নভেম্বর ১, ২০২৪, ১২:৪১ এএম গাইবান্ধায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্ররা চালু করেছেন জনতার বাজার

গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জম আহমদ এর অনুপ্রেরণায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্ররা চালু করেছেন জনতার বাজার। জেলা শহরের জিরো পয়েন্টে চালু হয়েছে ‘জনতার বাজার’। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জেলা শাখার উদ্যোগে ন্যায্যমূল্যে সবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রির কার্যক্রম ২৯-১০২০২৪ ইং তারিখ  মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে। 
উল্লেখ্য যে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জেম আহমদ সহ ট্রাক্স ফোর্স কমিটি ঐতিহ্যবাহী পুরাতন বাজার মনিটরিং করলে তার সঙ্গে বৈষম্য বিরোধী ছাত্ররাও যুক্ত হয় বাজার ঘুরে তারা লক্ষ্য করেন যে পাইকারি বাজারের চেয়ে খুচরা বাজারে বিক্রেতারা পাঁচ দশ টাকা করে লাভ করে আবার পাইকাররা কৃষকদের কাছে পণ্য কিনে সেখানে পাঁচ থেকে দশ টাকা লাভ করেন মুনাফাটা পায় মূলত মধ্যসত্তভোগী। 
গাইবান্ধার বৈষম্য বিরোধী ছাত্ররা চিন্তা করে জুলাই আগস্ট ছাত্র জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী যদি পদত্যাগ করতে পারে তাহলে আমরা কেন গাইবান্ধার ছাত্ররা বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারবো না জেলা প্রশাসকের মনিটরিং করার পরেই ২৯-১০-২০২৪ ইং তারিখে ছাত্ররা প্রকৃত কৃষকের কাছে পণ্য কিনে জনতার বাজার নামে একটি বাজার খোলেন। বাজারটিতে প্রথমে পণ্য ক্রয় করে উদ্বোধন করেন গাইবান্ধা জেলার জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জম আহমদ। জনতার বাজারে’ নিত্যপ্রয়োজনীয় আলু, পেঁয়াজ, ঢেঁড়স, লাউসহ ১০ প্রকার সবজি পাওয়া যাচ্ছে। যা বাজারের চেয়ে ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত কমে বিক্রি হচ্ছে। সেটি ঘিরেই মানুষের আগ্রহ। কম দামে সবজি কিনতে পেরে খুশি বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। 
মঙ্গলবার থেকে শুরু হলেও সকল পেশাজীবী মানুষের মাঝে সাড়া ফেলেছে যা  বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) সকাল ১০ টার পর থেকে দেখা গেছে এ কর্মযজ্ঞ গাইবান্ধা জেলা শহরে।একনাগাড়ে ক্রেতাদের কাছে সবজি বিক্রি করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন শিক্ষার্থীরা। ক্রেতার ভিড়ও চোখে পড়ার মতো। অনেকে ফুটপাত ধরে হেঁটে যাওয়ার সময় উঁকি মেরে দেখছেন, কেন এত জটলা। এমন পরিবেশের মূল কারণ এখানে বিক্রি হচ্ছে ন্যায্যমূল্যের সবজি। বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের মধ্যে নারী উদ্যোক্তা মেহজাবিন আক্তার জিম জানান  কৃষকদের কাছ থেকে পণ্য কিনে ন্যায্যমূল্যে তা ভোক্তার হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। বাজার স্থিতিশীল ও সিন্ডিকেট নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত তাদের এই কার্যক্রম চলবে। আপাতত ৮ থেকে ১০ প্রকারের সবজি বিক্রি করা হলেও আগামীতে সবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যই বিক্রির করবো। 
জনতার বাজারে বিক্রি করা সবজির মধ্যে দেখা গেছে, কেজিতে লাউ ২৫ টাকা, বেগুন ৩০ টাকা, চিচিঙ্গা ৩৫ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪৫ টাকা, আলু ৩০ টাকা, কাঁকরোল ৪৫ টাকা, পটল ৩০ টাকা, ফুলকপি প্রতি কেজি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা বাজারের মূল্য থেকে প্রায় ১০ থেকে ৩০ টাকা কম। সবজি কিনতে আসা অনেক  ক্রেতায় বলেন বাজারের সবজির দাম দাম অনেক বেড়ে গেছে। ৬০ টাকার নিচে কোন সবজি  পাওয়া যাচ্ছে না বাজারে। কিন্তু এখানে প্রায় সব সবজি ৫০ টাকার নিচে। বাজারে আলুর দাম ৬০ টাকা হলেও এখানে মাত্র ৩০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। তাই এখান থেকে সবজি কিনেছি। আমাদের মতো নিম্নবিত্তের মানুষের জন্য জীবন চলা অনেক কঠিন হয়ে গেছে। আমরা কম দামে সবজি বিক্রির উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। 
'বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা জানান, 'প্রথম দিন থেকেই বেশ সাড়া ফেলেছে এই ‘জনতার বাজার’। 
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর, সুন্দরগঞ্জসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকার কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি সবজি ক্রয় করা হচ্ছে। সেগুলো গ্রাহকের কাছে ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে করে মানুষ কিছুটা স্বস্তি পাবে। বাজারেও এর প্রভাব পড়বে। সিন্ডিকেট বেকায়দায় পড়বে। যতদিন সিন্ডিকেট ভাঙতে পারব না, ততদিন এই কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে আছে আমাদের। ছাত্রদের জনতার বাজারের সূত্র ধরে পুরাতন বাজারে সরজমিনে গেলে পুরাতন বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী বাবুল ও সালাম জানান সকাল থেকে খুব একটা বেচাকেনা করতে পারিনি কারণ গাইবান্ধায় অনেকেই এখন ছুটছে জনতার বাজারে ওখানে নাকি অনেক কম দাম তাই তাই এখন ওখানে যাচ্ছে। 
এখন বিকেল থেকে আমাদের একটু কাস্টমার আসা শুরু করেছে তবে আমরাও ছাত্রদের থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা আর বেশি মুনাফা করবো না। চেষ্টা করব যে দামে ক্রয় করব তার চেয়ে একটু বেশি লাভ করার। এদিকে প্রতিদিন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র উদ্যোক্তারা জনতার বাজারে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছেন তারা হলেন দিবস, মাসুদ জিম, অতনু মেহজাবিন, আদিবা, জেরিন, শান্ত, ফুয়াদ, শিহাব, মামুন, মেহেদী, ফরিদ প্রমুখ ছাত্রগণ।

Side banner