কুষ্টিয়ার কুমারখালীর জগন্নাথপুর ইউনিয়নের মহেন্দ্রপুর পশ্চিম পাড়া গ্রামের প্রায় তিনশত পরিবার দুই মাসের বেশি সময় পানিবন্দি থাকায় দেখা দিয়েছে বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগ। পাশাপাশি রান্নাঘর ডুবে যাওয়ায় অনেকেই দুর থেকে রান্না করে বাড়িতে এনে খাচ্ছেন। বসতঘর ডুবে যাওয়ায় অনেকেই প্রায় দুইমাস বাড়ি ছাড়া। খাদ্য সংকটের পাশাপাশি গবাদি পশু ও হাঁসমুরগি নিয়ে পড়েছেন বিপাকে। উপজেলা প্রশাসন বা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে পানি নিষ্কাশনের কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় তাদের জীবন জীবিকা স্থবির হয়ে পরেছে।
শনিবার সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, খাদ্য সংকট ও সুপেয় পানির অভাব তীব্র হয়ে উঠেছে। দীর্ঘদিন জলাবদ্ধ থাকায় অধিকাংশ পরিবার বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র গিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। গবাদি পশু, হাঁসমুরগি নিয়ে পরেছেন বিপাকে।
ভুক্তভোগী আকমল বিশ্বাস, আঞ্জু খাতুন, শহীদ শেখ সহ অনেকেই জানান, দুই মাসের বেশি সময় ধরে তারা পানিবন্দী রয়েছেন। রান্না ঘরের চুলায় পানি হওয়ায় রান্না করতে পারছেন না। দুরে গিয়ে খাবার রেঁধে আনতে হচ্ছে। টয়লেট ডুবে যাওয়ায় পরেছেন বিপাকে। টিউবওয়েল ডুবে যাওয়ায় সুপেয় পানির অভাব দেখা দিয়েছে। এছাড়া গোয়ালঘর ও উঠানে পানি হওয়ায় গবাদিপশু ও হাঁস মুরগী রাস্তার পাশে অথবা অন্যত্র সরিয়ে রাখতে হচ্ছে । পানিতে নামলে গা—হাত—পা চুলকায় এবং তারা নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। দীর্ঘদিন মাঠে পানি জমে থাকায় ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। এ বছর ব্যাংক ও এনজিওর ঋণ কিভাবে পরিশোধ করবেন,কি খাবেন তা ভেবে দিশেহারা হয়ে গেছেন। দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা চান তারা।
জগন্নাথপুর ইউনিয়নের সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড সদস্য মোহাম্মদ আলী শেখ জানান, জগন্নাথপুর ইউনিয়নবাসি আড়াই মাস ধরে পানিবন্দি রয়েছেন। বৃষ্টির পানি জমে সৃষ্ট হয়েছে জলাবদ্ধতা। মাঠে দীর্ঘ সময় পানি জমে থাকায় ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। চাষীরা বিভিন্ন ব্যাংক, এনজিও থেকে লোন নিয়ে চাষ করে থাকেন। ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে তারা বিপাকে আছেন। পূর্বে এই এলাকার পানি খালের মাধ্যমে নদীতে চলে যেত। কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি অবৈধভাবে খাল দখল করে স্থাপনা নির্মাণ ও মাছ চাষ করায় পানি বের হতে পারছেনা। যেকারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। পানি নিষ্কাশনের জন্য ব্যবস্থা নিতে ইতিমধ্যে তিনি জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, পানি উন্নয়ন বোর্ড, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও থানায় দরখাস্ত দিয়েছেন বলে জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম মিকাইল ইসলাম জানান, জলাবদ্ধতা নিরসনে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানকে বলা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :